Friday, April 1, 2011

গাড়ি তৈরিতে আনারস ও কলা


সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা। এর ধারাবাহিকতায় মানুষের ধারণার সঙ্গে যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তিবিদ্যা। আজ যা নতুন, আগামীকাল তা হয়ে যাচ্ছে পুরাতন। সম্প্রতি ব্রাজিলের গবেষকরা জানিয়েছেন, সুস্বাদু আনারস বা কলার তন্তু ব্যবহার করে মজবুত এবং হালকা প্লাস্টিক তৈরি করা যায়। আর সেই প্লাস্টিক ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করা সম্ভব। গবেষকদের দাবি, ফলের তন্তু থেকে তৈরি প্লাস্টিক গাড়ির বডি এবং ইঞ্জিন তৈরিতেও ব্যবহার করা যাবে। সুস্বাদু আনারস এবং কলা ব্যবহার করে গাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ব্রাজিলের সাও পাওলো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। গবেষকদের দাবি, আগামী ২ বছরের মধ্যেই এ পদ্ধতিতে গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। আনারস এবং কলার তন্তু ব্যবহার করে তৈরি করা প্লাস্টিক ইতোমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। সাও পাওলো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক আলসেইডস লিয়াও জানিয়েছেন, সুস্বাদু এসব ফলের তন্তু প্লাস্টিককে অত্যন্ত মজবুত করে। এই প্লাস্টিক ওজনে সাধারণ প্লাস্টিকের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ হালকা এবং ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি মজবুত। এখন দেখার পালা আনারস ও কলার তন্তু ব্যবহার করে প্লাস্টিক উৎদ্ভাবন করে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করা যায় কিনা।

গ্রীষ্মে লোডশেডিং-এ হারিকেন ব্যবসায়ীর প্রস্তুতি

আসছে গ্রীষ্ম, বাড়বে লোডশেডিং। এসময় হারিকেন আর মোমবাতির থাকে ব্যাপক চাহিদা। সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছেন রাজধানীর এক হারিকেন ব্যবসায়ী _রোহেত রাজীব

বয়স চার ওজন ৬০ কেজি

আর দশটি শিশুর মতো লু হাও সাধারণ শিশু নয়। এর কারণ মাত্র চার বছর বয়সে তার ওজন গিয়ে ঠেকেছে ৬০ কেজিতে। এ কারণে উঠতে-বসতে মাঝে মাঝে অন্যের সহায়তার প্রয়োজন হয় তার।

মুটিয়ে যাওয়া চীনা শিশুটির মা-বাবা জানান, বাচ্চাটি এই বয়সে অন্যান্য সাধারণ শিশুর চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ওজনের এবং সে প্রতি রাতে বড় তিন বাটি ভাত খায়। বাবা লু ইউনচেং এবং মা চেন ইউয়ান বুঝতে পারছেন না তাদের ছেলে কেন এতো মুটিয়ে গেল। অথচ জন্মের সময় ওর ওজন ছিল মাত্র ২ দশমিক ৬ কেজি। তিন মাস বয়স থেকে তার ওজন নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে এবং তার ক্ষুধা প্রতি সপ্তাহে প্রচণ্ডভাবে বাড়তে থাকে।

সে তার ক্লাসের ফাঁকে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হাউয়ের এক বছর বয়স থেকেই তার বাবা-মা তার খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হয়েছিলেন কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।

বাংলার বাঁশি বিদেশে

'বাঁশি শুনে আর কাজ নেই...সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি...' জনপ্রিয় গানটির প্রথম পংক্তিটির 'বাঁশি' বাহারি কৃত্রিম ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমের ছোবলে কদর কিছুটা কমলেও বন্ধ হয়ে যায়নি। এখনো বাঁশি শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখাসহ শ্রীমর্দ্দী গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের মানুষ এর ওপর ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই নবাব সিরাজদ্দৌলার আমল থেকে। মেঘনা নদীর কোলঘেঁষা ছোট্ট দ্বীপের মতো কুমিল্লার হোমনা পৌরসভার দক্ষিণের গ্রাম শ্রীমদ্র্দী। মেঘনার চরে গড়ে ওঠা শ্রীমর্দ্দীর রয়েছে বাঁশি তৈরির সুদীর্ঘ ইতিহাস।

গ্রামটিতে ১৯ হাজার লোক বসবাস করছে কেবল বাঁশি শিল্পকে পুঁজি করে। যদিও বাঁশি কারিগরগণ কেউ স্বচ্ছল নয়, তবু তারা বসবাস করছে ভিন্ন আমেজ-স্বকীয়তা বজায় রেখে। এ-গাঁয়ে যেমন রয়েছে তুখোড় বাঁশি বাজানেওয়ালা বা বাঁশরিয়া ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম, হাসু ফকির, করম আলী তেমনি এ গাঁয়ের তৈরি উন্নতমানের বাঁশি বাংলার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে মধ্যপ্রাচ্যের সবকটি দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, জাপান, অষ্ট্রেলিয়া, ডেনমার্কসহ ইউরোপের আরও অনেক রাষ্ট্রে আধুনিক প্রযুক্তিকে হার মানিয়ে রপ্তানি হচ্ছে।

কথা হয় তরুণ মফিজ মিয়ার সঙ্গে। সে জানায়,_'আমি ছুডু সময় (৮ বছর বয়স) থেইক্ক্যা বাঁশি বানাইতে পারি। কেউ শিখাইয়া দেয় নাই। আব্বা-আম্মার বাঁশি বানানো দেইখ্যা শিখছি। অহন তো আমার লগে কেউ পারতো না। জমিতে বদলি দিয়া আমার বন্ধু হারিছ ডেইলি পায় ১০০ টাকা, আমি আপনাগো দোয়ায় কামাই ১৭০ থেইক্ক্যা ২০০ টাকা'। বাঁশির গ্রাম শ্রীমদ্র্দী ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় আরেক বাঁশি কারিগর প্রাথমিক স্কুল গণ্ডি পেরোনো গোপাল (৩২), অনিল (২২) ও তাদের মা রেখা রানীর (৫৫) সঙ্গে। বাড়ির উঠোনে জলচৌকীতে বসে তাদের দেওয়া মুঁড়ি খেতে খেতে কথা বলতে থাকি। রেখা রানী জানায়,_'অনিল-গোপালের বাবা রতন দাস বাঁশি লইয়া শহরে যায় পাইকারি বিক্রি করন লাগি। আমরা মায়-পুতে (ছেলে) হারাদিন বইয়া বাঁশি বানাই। তয় আগের মতো লাভ হয় না।বিদেশি বেটারা ৪-৫ বছর ধইরা বাঁশি নিতাছে'। অনিল বলে,_'ছোট বেলায়ই বাঁশি রং, বার্নিশ, চাক্কি, ছিদ্র করা শিখছি। অহন বিদেশি গো জন্য স্পেশাল বাঁশি কারুকাজ করা নানা বাহারি ডিজাইনের বাঁশি বানাই। গোপালের মতে এই মৌসুমে হাতে কাজ থাকে বেশি। কারণ, বৈশাখ মাসে দেশ-বিদেশের বাঙালিদের কাছে বাঁশির কদর বেশি থাকে। ঢাকার পাইকাররা ফোনে বেশি-বেশি বাঁশি বানানোর জন্য অনুরোধ করে। চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় কেবল পুঁজির অভাবে।

চাকরির বয়সসীমা ৫৮ বছরের প্রস্তাব

সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৫৮ বছর করার প্রস্তাব করে সিভিল সার্ভিস আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ নিতে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জেলা প্রশাসকদের ওয়েবসাইটে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীরা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ দিতে পারবেন। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের (সিপি) দফতরে ডাকযোগে অথবা csaopinion_moestab.gov.bd ঠিকানায় ই-মেইলে মতামত ও পরামর্শ দেওয়া যাবে। খসড়ার ২০ (১) ধারায় স্বাভাবিক অবসরের বয়সসীমা ৫৮ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে চাকরিকাল ২০ বছর পূরণ হলেই কোনো কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।

এতে জনপ্রশাসনকে তিনটি স্তরে ১২টি গ্রেডে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সুপিরিয়র স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেড এবং জুনিয়র স্তরে ১০, ১১ ও ১২তম গ্রেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্য সাতটি গ্রেডকেই সিনিয়র স্তরভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে সুপিরিয়র স্তরের দ্বিতীয় গ্রেডে সিনিয়র স্তরের তৃতীয় গ্রেড থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে পদ পূরণের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ উন্মুক্ত রাখা হবে। যা রাষ্ট্রপতির শর্ত ও মেয়াদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সিনিয়র স্তরের সর্বনিন্ম গ্রেডের শতকরা ৮০ শতাংশ পদে সরাসরি নিয়োগ হবে। অন্য ২০ শতাংশ পদ জুনিয়র স্তর থেকে যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সরাসরি নিয়োগ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে করা হবে।

প্রস্তাবিত আইনের ১৫ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সদস্য পরপর তিন বার একই ধরনের পদে পদোন্নতির পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করতে পারবেন। তবে চতুর্থবারও অকৃতকার্য হলে কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার তাকে অবসরে পাঠাতে পারবে। এক্ষেত্রে অবসরের স্বাভাবিক বয়স হবে ৫৫ বছর

নয়টার বিমান কয়টায় ছাড়ে!

নয়টার বিমান কয়টায় ছাড়ে_ তা কারও জানা নেই। বিমান মন্ত্রণালয়, বিমান কর্তৃপক্ষ, কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ জানে না বাংলাদেশ বিমান চলছে কীভাবে। কেউ কারও কথা শুনছে না। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিমান কর্তৃপক্ষে দূরত্ব দিন দিন বাড়ছে। চরম দুনীর্তি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও কোটারি স্বার্থের কারণে জলাঞ্জলি যাচ্ছে দেশের স্বার্থ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ম্লান হচ্ছে দেশের সুনাম। বিমানের বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটিও। বিমান মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের নানা অপকর্ম তুলে ধরে খুব শীঘ্রই এই কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি রিপোর্ট দেবে। আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বিমান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভায় রিপোর্টটি অনুমোদিত হবে বলে জানা গেছে। তখন সেটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেওয়া হবে।

বিমানের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিমানে এখন চলছে চরম নৈরাজ্য। সিডিউলের কোনো বালাই নেই। কোন ফ্লাইট কখন ছাড়বে বা কয়টার ফ্লাইট কয়টায় ছাড়বে তা কেউ জানেন না। পাইলট থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিরাজ করছে পারস্পরিক কোন্দল। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বিমানে নতুন কিছু নয়। পাইলটরা কোনো নিয়মনীতি মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা দেশের ইমেজকে সব কিছুর ঊধর্ে্ব না রেখে হুটহাট করে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করেন না। মাত্র কিছুদিন আগেই এ ধরনের একটি বিব্রতকর ঘটনায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন। এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনায় দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে যাত্রী সেবা। এরই মধ্যে বিমানের লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এসব রুটের বিমানের ভাড়া এখন অনেক বেশি। যাত্রীসেবার মান সবচেয়ে নিম্নমানের হওয়া সত্ত্বেও ভাড়া বাড়ানোর কারণে বিমান দিন দিন যাত্রী হারাচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো মার্কেটিং বিভাগকে না জানিয়েই অর্থ বিভাগের সিদ্ধান্তে বাড়ানো হয়েছে ভাড়া। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বিমানকে নিউইয়র্ক রুটটিও হারাতে হয়েছে। এখন সর্বসাকুল্যে ৮টি উড়োজাহাজ নিয়ে চলছে বাংলাদেশের গর্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। নতুন উড়োজাহাজ না কিনে লিজে আনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়েও চলছে নানা ধরনের তুগলকি কাণ্ড। লিজের জাহাজ কবে আসবে তাও কারও জানা নেই। এদিকে বিমানের লোকসানের হার এমন পর্যায়ের পেঁৗছেছে যে, চলতি মাসের বেতন নিয়েই সংকট চলছে। প্রতি মাসে ২৮-২৯ তারিখের মধ্যে বেতন হলেও গতকাল পর্যন্ত বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয়নি বলে জানা গেছে।

বিমান পরিচালনা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও বিব্রত। কারণ বিমান পরিচালনা বোর্ড মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত মানছে না। এদিকে মন্ত্রণালয়ও মানছে না সংসদীয় কমিটি সুপারিশ। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি হযবরল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তিনপক্ষই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বিমান মন্ত্রী জিএম কাদের প্রধানমন্ত্রীকে একটি লিখিত আবেদনও পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সংসদীয় কমিটি বিমান বিষয়ে এ যাবৎ বেশ কয়েকটি সভা করেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি ওই সব সভায় আলোচনা হয়েছে। কমিটির সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল বিষয়টি নিয়ে অনেক বার কথাও বলেছেন। কিন্তু কোনো সমাধানে পেঁৗছতে পারেননি। অবশেষে আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য কমিটির সভায় নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কমিটির সদস্য সৈয়দ মহসিন আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ৬ তারিখের সভার সিদ্ধান্তের পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করা হবে। কমিটি যে সব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, বৈঠকের আগে কোনো কিছুই বলা যাবে না। তবে বিস্ময়কর অনেক তথ্য প্রমাণ কমিটির হাতে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সার্বিক বিষয়ে বিমান পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিমানের ৮টি জাহাজ আছে। এর মধ্যে ৪টি ডিসি-১০ এর বয়স ৩৩ বছর। এফ-২০ গুলোর বয়সও একই রকম। এ সব জাহাজ এখন আর কেউ বানায় না। এগুলোর স্পেয়ার পার্সও পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় এ ধরণের জাহাজ দিয়ে একটি এয়ারলাইন্স চালানো সত্যি কষ্টকর। আর সে কারণেই ফ্লাইট সিডিউল রক্ষা করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় ও বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনও দূরত্ব নেই দাবি করে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব বিমান বোর্ডের একজন সদস্য, সে কারণে কোনও দূরত্ব সৃষ্টির সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বিমানের সব অনিয়ম, দুনীর্তি দূর করার চেষ্টা করছি। দুনীর্তির-অনিয়মের সঙ্গে যদি তাল মিলিয়ে চলতাম তাহলে আমি সবার কাছেই প্রিয় পাত্র হতাম।

২৪ বছর পর...২৪ বছর পর...

রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ এলাকায় চলতি মাসের গোড়ার দিকে সমুদ্রসৈকতে হাঁটার সময় একটি বোতল কুড়িয়ে পায় ১৩ বছরের স্কুলছাত্র দানিল কোরোৎকিখ। ছিপি খোলার পর ভেতরে পাওয়া গেল একটি চিরকুট। চিরকুটটি লেখা হয়েছে ১৯৮৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। এতে জার্মান ভাষায় লেখা, ‘এ চিঠি যদি পাও, আমাকে লিখো, উত্তর দেব।’
পাঁচ বছর বয়সে জাহাজভ্রমণের সময় নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে চিরকুটটি একটি বোতলে ঢুকিয়ে সমুদ্রে ফেলেছিলেন জার্মানির নাগরিক ফ্রাঙ্ক উয়েসবেক। ২৪ বছর পর সেই ঠিকানায় চিঠির জবাব দিয়েছে কোরোৎকিখ। চিঠি পেয়ে হতবাক ব্যাংক কর্মকর্তা উয়েসবেক। তবে জবাব দিতে ভুল করেননি। পরে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কথাও হয়েছে দুজনার।

প্রতিদিন বিশ্বে ৭০০০ মানুষের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমিত হচ্ছে

গত ৩০ বছরে অনেক চেষ্টার পরও বিশ্বে প্রতিদিন সাত হাজার মানুষের মধ্যে নতুন করে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে। এদের মধ্যে এক হাজার শিশু। দুর্বল অবকাঠামো, আর্থিক অসামর্থ্য এবং দুর্বল মানুষ ও শ্রেণীর প্রতি বৈষম্য এখনো এইচআইভি প্রতিরোধ, চিকিত্সা ও সেবার পথে বাধা হয়ে আছে। জাতিসংঘের এইডসবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন আজ বৃহস্পতিবার কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। আগামী ৮-১০ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এইডস-বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভা সামনে রেখে তিনি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। আজ ইউএনএইডসের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব বিশ্বব্যাপী এইডস-বিষয়ক কর্মকাণ্ড জোরদার করার জন্য প্রতিবেদনে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছেন। এগুলো হলো: এইচআইভি প্রতিরোধ আন্দোলনে যুবশক্তি ব্যবহার; এইচআইভি প্রতিরোধ, চিকিত্সা, সেবা এবং ২০১৫ সাল নাগাদ সহায়তার জন্য সর্বজনীন সুযোগ বাস্তবায়ন; এইচআইভি কর্মসূচি আরও সাশ্রয়ী, কার্যকর ও টেকসই করতে বিভিন্ন দেশের জন্য কাজ করা; স্বাস্থ্য, মানবাধিকার, নারী ও মেয়েদের মর্যাদা উন্নত করা এবং এইডস-বিষয়ক প্রতিশ্রুতি কাজে পরিণত করতে পারস্পরিক জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

ফিলিস্তিনি অভ্যুত্থানের পেজ মুছে দিল ফেসবুক

সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে নতুন অভ্যুত্থানের ডাক দিয়ে তৈরি করা একটি পেজ মুছে দিয়েছে। পেজটিতে সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ যোগ দিয়েছিল(সাইন-আপ)। পেজটিকে থার্ড প্যালেস্টিনিয়ান ইনতিফাদা অর্থাৎ তৃতীয় ফিলিস্তিনি অভ্যুত্থান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। এর আগের দুটি অভ্যুত্থান হয়েছিল ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে।
ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, সহিংসতার ডাক দেওয়ায় পেজটি ফেসবুক থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। পেজটির ব্যাপারে ইসরায়েলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। কেননা সম্প্রতি আরবদেশগুলোয় বিক্ষোভ ছড়িয়ে দিতে ফেসবুক ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
থার্ড প্যালেস্টিনিয়ান ইনতিফাদা পেজে আগামী ১৫ মে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। তবে পেজটি মুছে ফেলার পর ওই পেজের মতো দেখতে তিনটি পেজ ফেসবুকে দেখা যায়। এসব পেজে সব মিলিয়ে সাত হাজার ফিলিস্তিনি সাইন-আপ করে। ইসরায়েলের পাবলিক ডিপ্লোমেসিবিষয়ক মন্ত্রী ইউলি এডেলস্টেইন গত সপ্তাহে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবাগকে একটি চিঠি পাঠান।
তাতে তিনি বলেছেন, ‘থার্ড প্যালেস্টিনিয়ান ইনতিফাদা পেজে ইহুদিদের হত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে। আমরা এতে উদ্বেগের মধ্যে আছি। এ ব্যাপারে আমরা আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করি।’
এই চিঠি পাঠানোর এক সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিনি পেজটি মুছে ফেলা হয়। ফেসবুকের পাবলিক পলিসি কমিউনিকেশনস ম্যানেজার অ্যান্ড্রু নয়েস বলেন, ‘সহিংসতাকে উসকে দেয়—এমন কোনো কিছু আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে রাখব না। আমরা এ ধরনের পেজ পেলেই তা মুছে ফেলি।

ফেসবুক ফেঁকড়া!

হু নোজ ইউ বেস্ট? আপনাকে কে সবচেয়ে ভালো জানে? খুব নির্দোষ ও নিরীহ একটি প্রশ্ন। উত্তর না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। নিজেকে সামাজিক হিসেবে প্রমাণ করতে চাইলে যেকোনো জায়গায় এর উত্তর দিতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকে এই সামাজিকতা করেছেন তো নিজেকে জড়িয়েছেন ভীষণ এক ফেঁকড়ায়! এই ফেঁকড়ার নাম সাইবার ছিনতাই! আপনাকে কে ভালো জানে? এটা জানানোর মধ্য দিয়ে হ্যাকারদের গোপন পাসওয়ার্ড, বিশেষ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের মতো গোপন বিষয়গুলো জানিয়ে দেবে নিজের অজান্তেই! কিন্তু এর থেকে সমাধান কী? এককথায় বললে—সাবধানতা।
ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সমস্যা-আশঙ্কা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘ব্লু কোট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ইন্টারনেট নিরাপত্তাদাতা এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিপণনের প্রধান টম ক্লেয়ার জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটে ধোঁকাবাজির ভালো একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক। এত দিন ধরে পর্নো ও সফটওয়্যার-শেয়ারিং সাইটগুলোর মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি প্রবঞ্চনার শিকার হতো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। তবে ব্লু কোট জানাচ্ছে, গত বছর ওই সাইটগুলোকে পেছনে ফেলে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোই বেশি ‘ছলনাময়’ হয়ে উঠেছে। উঠে এসেছে সবচেয়ে প্রবঞ্চনাকর সাইটগুলোর চার নম্বরে। বুঝতেই পারছেন, ফেসবুকই সবচেয়ে ভালো ক্ষেত্র হিসেবে পছন্দ করে সাইবার অপরাধীরা।
এখন প্রশ্ন: ১. কেমন করে এই সমস্যায় জড়িয়ে পড়ছি আমরা?
২. কী কী ক্ষতি হতে পারে এসব ক্ষেত্রে? এবং
৩. এর সমাধানই বা কী?
দুই নম্বর প্রশ্নের উত্তরটাই আগে জেনে নিই। ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ওইসব ফাঁদে পা দিলে আপনি খোয়াতে পারেন আপনার ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক সাইনইন-সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য।
ফেসবুকে কারও ওয়ালে কোনো একটি বার্তা দিয়ে রাখা।হয়তো সেখানে লেখা থাকল, হুজ নো ইউ বেস্ট। এখন কিছু না বুঝে না শুনে ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিপদ! একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে। প্রশ্নগুলো হতে পারে এ রকম—মাই মিডল নেম, মাই এজ, মাই ফেবারিক সোডা, মাই বার্থ ডে, হুজ দ্য লাভ অব মাই লাইফ, মাই বেস্ট ফ্রেন্ড, মাই ফেবারিট কালার, মাই আই কালার, মাই হেয়ার কালার, মাই ফেবারিট ফুড ও মাই মমস নেম। শেষে হয়তো লেখা থাকে, পুট দিজ এস ইউর স্ট্যাটাস অ্যান্ড সি হু নোজ ইউ বেস্ট।
আপনি হয়তো সরল মনে প্রশ্নের উত্তরগুলো দিয়ে বসলেন। এখন প্রশ্ন, এই উত্তরগুলো থেকে হ্যাকাররা কী করে আপনার গোপন পাসওয়ার্ডগুলো বের করে ফেলে। দেখা গেছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনেকেই একাধিক ক্ষেত্রে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আর এখানেই বিপদ। তা ছাড়া দেখা যায় পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য চট করে মনে পড়ে এমন বিষয়, যেমন—নিজের নাম, বয়স, জন্মতারিখ, মুঠোফোন নম্বর, প্রিয় মানুষের নাম ইত্যাদি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করি আমরা।
এ ছাড়া ফেসবুকে আরেকটি উপায়ে হ্যাকড হতে পারে আপনার পাসওয়ার্ড। অনেক সময় ইওর ফ্রেন্ড (বন্ধুর নাম) জাস্ট অ্যানসার্ড এ কোয়েশ্চেন অ্যাবাউট ইউ, এমন ধরনের কিছু পোস্ট আপনার চোখে পড়তে পারে। এ ধরনের প্রশ্নে বলা হয়, আপনার এক পুরোনো বন্ধু আপনাকে নিয়ে করা একটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছে, যা কিনা কোনো কিছু আনলক করতে আপনার জানা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে লিঙ্কে ক্লিক করলেই মুশকিল। পরবর্তী ধাপে কয়েকটি ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হবে আপনার কাছ থেকে। যেমন—ক. আপনার নাম, প্রোফাইল পিকচার, জেন্ডার, নেটওয়ার্কস, ইউজার আইডি, ফ্রেন্ডস ও অন্য যেকোনো তথ্য সবার সঙ্গে শেয়ার, খ. আপনাকে ই-মেইল ও আপনার ওয়ালে পোস্ট করার এবং গ. যখন তখন আপনার যেকোনো তথ্য পাওয়ার অনুমতি। এই তথ্যগুলো দিয়ে দিলে তো কথাই নেই। তবে না দিতে চাইলেও হ্যাকাররা আপনাকে ছাড়বে না। আরেকটি পথে এগোবে। সে ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত ওই বন্ধুটির কিছু কিছু বিষয় জানাতে হবে আপনাকে। বন্ধু আপনার সম্পর্কে কী বলল, এটা জানার জন্য মুখিয়ে থাকলে ওই তথ্যগুলো হয়তো দিয়ে দিলেন। তাতে করে একদিকে বন্ধুর গোপনীয়তা তো আপনি ভাঙলেনই এবং বিপদে ফেললেন তাকেও। ওই তথ্যগুলো দিয়েই আপনার বন্ধুর বারোটা বাজাবে হ্যাকাররা।
ভিডিও লিঙ্ক পাঠিয়েও ঝামেলায় ফেলতে ওস্তাদ হ্যাকাররা। ব্লু কোটের মতে, হ্যাকারদের কাছে এই পথটি সবচেয়ে কার্যকর। এই লিঙ্ক বা মেসেজগুলো আসলে গুপ্তঘাতকের মতো কাজ করে। সতর্কতাই পারে এই ঝামেলাগুলো থেকে বাঁচাতে। একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ভীষণ বোকামি। বিশেষ করে ই-মেইল ও ফেসবুকের পাসওয়ার্ড একদম আলাদা হতে হবে। ফেসবুকের ওইসব উটকো মেসেজ বা পোস্টে ক্লিক করা যাবে না কোনোক্রমেই। ব্যবহার করতে হবে হালনাগাদ করা নিরাপত্তা সফটওয়্যার। এ ছাড়া ফেসবুকও তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করছে। অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধে শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের সিকিউরিটি পেজে হালনাগাদ পেয়ে যাবেন খুব সহজেই। সেখানে ছোট্ট সিকিউরিটি কুইজও থাকবে বলে জানা গেছে।