ভোরের আলো ফুটতেই কেঁপে উঠল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে হালকা মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীর শিবপুরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.১। ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানায়, উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তরে।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিকাল সোয়া ৪টায় নরসিংদীর ঘোড়াশালে ৪.০ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
গত সোমবার রাতে মিয়ানমারের ফালামে ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পর্যন্ত অনুভূত হয়। এরও আগে ২১ নভেম্বর নরসিংদীর মাধবদীতে ৫.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে তিন জেলায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প ঢাকার বাড্ডা ও নরসিংদীতে অনুভূত হয়।
বারবার ভূমিকম্পে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা এখনই করণীয় ঠিক করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
বুয়েটের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সতর্ক করে বলেন, ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পটি বড় বিপরের ‘ফোরশক’ হতে পারে। বড় ভূমিকম্পের আগে এমন ছোট ছোট কম্পনই সাধারণত দেখা যায়।
ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতারও মনে করেন, বাংলাদেশের সামনে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি ভয়াবহভাবে বাড়ছে—কারণ জনগণের সচেতনতা, সরকারি পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ঘাটতি।
তার মতে, ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, আগাম সতর্কবার্তাও দেওয়া সম্ভব নয়; কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমানো যায়।
ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক বাড়তে থাকায় ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

0 Comments