Saturday, April 6, 2013

written test schedule of Bangladesh Bank Assistant Director -Ex-Cadre, Graphics Designer, Prof Reader, Photographer


জন্মবিরতিকরণ বড়ি নিয়ে ৫ প্রশ্ন

জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন নিয়ে নারীদের মধ্যে রয়েছে নানা দ্বিধা, প্রশ্ন ও সংশয়। এমন ৫ প্রশ্ন নিয়ে এ আয়োজন।
১: জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন করলে কি পরে গর্ভধারণ করতে সমস্যা হয়?
জন্মবিরতিকরণ বড়ি নিয়মিত খেলে তা ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে। বড়ি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার পর ডিম্বাশয় আবার নিয়মিত ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু করতে পারে। কেউ টানা বেশ কয়েক বছর বড়ি খেলে এই উৎপাদন-প্রক্রিয়া পরিপূর্ণভাবে শুরু হতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে এবং গর্ভধারণে কয়েক মাস দেরি হতে পারে। বড়ি খাওয়া ছেড়ে দিয়ে অন্তত দু-তিনবার নিয়মিত রজঃস্রাব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে গর্ভধারণের চেষ্টা করা ভালো।
২: বড়ি খেলে মেয়েরা মোটা হয়ে যায়?
পুরোনো দিনের উচ্চমাত্রার প্রজেস্টেরন হরমোনযুক্ত বড়িগুলো খেলে মোটা হওয়ার আশঙ্কা থাকত। কিন্তু বর্তমানে স্বল্পমাত্রার চর্বিবান্ধব হরমোনযুক্ত বড়ি ব্যবহার করা হয়। এতে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা অনেকটাই কম। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নারীর ওজন এতে বড়জোর দু-এক কেজি বাড়তে-কমতে পারে।
৩: এটি কি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়?
জন্মবিরতিকরণ বড়ি মেয়েদের ডিম্বাশয় ও জরায়ুর ভেতরের আবরণ বা অ্যান্ডোমেট্রিয়ামের ক্যানসারের ঝুঁকি বরং অনেক কমিয়ে দেয়। তবে দীর্ঘদিন খেলে জরায়ুর মুখ ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কিছুটা বাড়ে বলে মনে করা হলেও শক্ত কোনো তথ্য-প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
৪: বড়ি খেলে কি মাসিকের সময় বেশি রক্তক্ষরণ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে?
বড়ি খেতে শুরু করার পর প্রথম দু-এক মাস অনিয়মিত রক্ত যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিয়মিত কিছুদিন খেলে এবং প্রতিদিন একই সময় খেলে দু-এক মাসের মধ্যে এটি ঠিক হয়ে যায়। আবার একেবারে শুরুর দিকে বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও হতে পারে। অচিরেই এটি মানিয়ে যায়। বর্তমানে এ-জাতীয় সমস্যা হয় না বললেই চলে।
৫: বড়ি সেবনের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত?
পরিবারে কারও অল্প বয়সে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, স্তন ক্যানসার, তীব্র মাইগ্রেন, হাঁপানি, গত এক বছরে জন্ডিস ও যকৃতের প্রদাহ, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ইত্যাদি থাকলে বড়ি সেবনের আগে আপনার চিকিৎসককে অবহিত করুন।
স্ত্রীরোগ ও প্রসুতিবিদ্যা বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ।
ডা. মুনা সালিমা জাহান

Friday, April 5, 2013

ঝরনা বেগম আমাদের মান বাঁচালেন

রাজশাহীর ঝরনা বেগম ও একজন আহত রক্তাক্ত পুলিশের গল্পটা এখন সবারই জানা। ঘটনাটা কেন আমাদের টানে? কেন আমরা এ ধরনের ঘটনা জেনে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি? বারবার ফিরে তাকাই রাজশাহীর সেই ছবিটির দিকে? পুলিশকে তো আর জনগণের বন্ধু মনে হচ্ছিল না আমাদের। পুরুষপ্রধান পুলিশ বাহিনীকে খুব কমই নারীবান্ধব হতে দেখা গেছে। মানুষের বিপদে যদি পুলিশ না আসে, তাহলে পুলিশের বিপদে মানুষ কেন যাবে? শিবির বনাম পুলিশের মারামারিতে সাধারণ মানুষের যেখানে দূরে দাঁড়িয়ে দেখার কথা, সেখানে ঝরনা বেগমের মতো একজন বিউটি পারলারের কর্মীর ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ বাঁচানোর দরকার কী ছিল?
এত সব প্রশ্ন আর সিদ্ধান্তকে গলিয়ে দিল রক্তাক্ত পুলিশের জীবন বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া ঝরনা বেগমের মানবিক ‘অ্যাকশন’। তাঁর এই অ্যাকশনের ভাষা যদি ঠিকঠাক বুঝে থাকি, তাহলে দেখতে পাব: ১. বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে পুলিশের বিপদকে পুলিশের একার বিপদ মনে করছেন না অনেক মানুষ। তাঁরা হয়তো ভাবছেন, পুলিশ পরাজিত হলে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার আর কেউ থাকবে না। পুলিশ অতীতে জনগণের বন্ধু যদি না-ও হয়ে থাকে, বর্তমানে তারাই জনগণের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করে প্রাণ দিচ্ছে, আহত হচ্ছে। সুতরাং, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ২. অনেক পুরুষ পুলিশ নারীদের প্রতি অসদাচরণ করে এলেও অনেক নারীই পুরুষ পুলিশের প্রতি দয়াবান ও ক্ষমাশীল হতে পারেন। ৩. দুর্বৃত্ত রাজনীতির খেলায় জনগণ নীরব দর্শক নন, জনগণের লোকও দায়িত্ব নিতে জানেন।
ঝরনা বেগম তাই একটি ঘটনা। যেমন ঘটনা ছিলেন রংপুরে উত্ত্যক্তকারীদের কবল থেকে তরুণীকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হওয়া শিক্ষক। যেমন ঘটনা ছিলেন ঢাকার মিরপুরের হজরত আলী, যিনি ছিনতাইকারীদের হাত থেকে একজন নারীকে বাঁচাতে জীবন দিয়েছিলেন। এই ‘ঘটনা’গুলো জনগণের নিজস্ব অস্তিত্বের, নিজস্ব সক্রিয়তার প্রমাণ। এ কারণে বলছি যে নিজেকে বিপন্ন করে মানুষের ভালো করার নজির উচ্চমহলে কম, নিচের মহলে বিস্তর। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই সুনীতি জনগণের কীর্তি, আর মানুষের বিপক্ষে দাঁড়ানোর দুর্নীতি ও দুর্বৃত্ত নীতিই শাসকদের কীর্তি। দুই পক্ষের স্বভাবও তাই আলাদা। তাই আজকে ক্ষমতাবান কোনো নেতা-নেত্রী-কর্তাব্যক্তি যখন বলেন, ‘আমি জনগণের লোক;’ তখন সঠিক বলেন না। যাঁরা সত্যিকার জনগণের লোক, তাঁরা দাবি করেন না কিছুই, কেবল কাজটা করে ফেলেন। তাই দেখি, সাধারণ মানুষ বলে যাঁদের জনসংখ্যার একেকটি সংখ্যা করে রাখা হয়, তাঁরাই বারবার পরিসংখ্যানের কারাগার ভেঙে একেকজন হূদয়বান মানুষের চেহারায় দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁদের আচরণকে তখন আমরা আদর্শ মানুষের আচরণ বলে চিনতে পারি। তখনই আমাদের বিশ্বাস হয় যে মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ। এই দুর্দিনে এই বিশ্বাস যাঁরা বাঁচিয়ে রাখেন, তাঁরা সাধারণের অসাধারণ বীর।
রাজশাহীতে সেদিন সারা দেশের মতোই হরতাল চলছিল। বাড়ির মধ্যেই কাজ করছিলেন ঝরনা। হঠাৎ বাইরে বিকট শব্দ শুনে ঘরের বাইর হলেন। দুটি ছোট ছেলে তাঁর, তারা বাইরে খেলছিল। তাই মায়ের মন নিয়ে তিনি বেরিয়ে এসে মায়ের মন নিয়েই দেখতে পেলেন নৃশংস ঘটনাটি। রাস্তায় ফেলে ইট দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হচ্ছে এক পুলিশকে। রক্তে ভিজে যাচ্ছে তাঁর মাথা। আশপাশে মানুষ ছিল, কিন্তু সহায় ছিল না কেউ। ঝরনা বেগম পুলিশ দেখলেন না, দেখলেন মানুষ মরছে। তিনি দৌড়ে এসে পড়ে থাকা লোকটিকে তুলতে গেলেন। তাঁর ডাকাডাকিতে দুজন ‘সাংবাদিক’ও মানুষের মতো ‘মানুষ’ হয়ে গেলেন। ছবি তোলা ফেলে ঝরনার মতোই রক্তাক্ত মানুষটিকে তুলে প্রমাণ করলেন মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের রক্ত দেখে খুনি-সন্ত্রাসী বিচলিত না হলেও মানুষ বিচলিত হবেই। ঝরনা বেগম সে ধরনের মানুষের প্রতীক হয়ে গেলেন।
কোনো কোনো অন্যায় একজন করলেও সবাই কমবেশি অপরাধী হয়ে যায়। কোনো কোনো ভালো কাজ একজন করলেও সবাই দায়মুক্ত হন। পুলিশ সদস্যটি যদি সাহায্যের অভাবে সেদিন মারা যেতেন, তাহলে আমরা সবাই-ই দায়িত্বহীনতার দায়ে দায়ী থাকতাম। ঝরনা বেগম সেই দায় থেকে আমাদের রক্ষা করলেন। বুঝিয়ে দিলেন এই বাজারি পরিবেশে এই সন্ত্রাসের রাজত্বে মানুষ হারিয়ে যায়নি। মানুষ এখনো আছে।
জনগণকে অদৃশ্য, নিষ্ক্রিয় ও ভীত করে রাখার দাপট আমরা দেখছি দেশজুড়ে। মাসের পর মাস জামায়াত ও বিএনপি হরতাল আর নাশকতায় জনগণকে কোণঠাসা করে রেখেছে। আগুন আর মৃত্যু দিয়ে তারা দেশ বাঁচাতে চায়। সরকারও গুলি দিয়ে গণতন্ত্র বাঁচানো সম্ভব বলে ভাবছে। এই আগুন আর গুলির রাজনীতি জনগণকে জিম্মি করে ফেলছে। সেই অবস্থায় গত মাসে কানসাটসহ বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ সন্ত্রাস-নাশকতার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন। এখন দেখলাম, ঝরনা বেগমের সাহসিকতা। এভাবে কানসাট, ফুলবাড়ী, আড়িয়ল বিলে বারবারই লক্ষ লক্ষ মানুষের মানবিক ও সাহসিক ‘অ্যাকশন’ বুঝিয়ে দিয়েছে, ‘আমরা জনগণ, আমরা মরে যাইনি আজও।’
জনগণকে সবাই ভয় পায়, সবাই তাদের খোপে খোপে আটকে রাখতে চায়। ভোটব্যাংকের খোপ, বাজারের ক্রেতা বানানোর খোপ, দলীয় আনুগত্যের মিছিলের খোপ, টেলিভিশনের খোপ, বাসযাত্রীর খোপ, শবযাত্রীর খোপ। জনগণের নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া, চলাফেরা—কত কত রকমের খোপে আটক আর নির্বাক। এসব ছাপিয়ে তাই যখন কেউ ‘সাধারণ’ মানুষ নামের ‘ভীরুতা-দুর্বলতা-নিষ্ক্রিয়তার’ তকমা খুলে ফেলে অসাধারণ কোনো কাজ করে ফেলেন, তখন তাঁকে আমাদের ভালোবাসতেই হয়। তখনই মনে হয়, মানুষে বিশ্বাস হারানো আসলেই পাপ, মানুষে ভরসা রাখতেই হবে আমাদের।
ঝরনা বেগমদের সুবাদে তাই বলতে চাই, যাঁরা সবকিছুর জন্য জনগণকে দোষারোপ করেন, বলেন মানুষই আসলে খারাপ, বলেন মানুষ অসচেতন, মানুষ নিষ্ক্রিয়, তাঁরা ভুল বলেন। যাঁরা জনসাধারণ, যাঁরা সব অর্থেই নিচুতলার বাসিন্দা, যাঁরা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত, যাঁরা অধিকাংশ নারী, যাঁরা কৃষকসমগ্র, যাঁরা সাধারণ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, যাঁরা গ্রাম-শহরের পেশাজীবী, তাঁরাই জনগণ। সব সংকটে তাঁরাই উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করেন। সুযোগ পেলে তাঁরা তাঁদের সবচেয়ে ভালোটাই দেশ ও মানুষকে দিতে আসেন। সমাজতত্ত্বের আর রাজনীতির ছাই দিয়ে এঁদের জীবনবাদিতা আর কষ্ট সহ্যের ক্ষমতার পরিমাপ করা যাবে না। তাঁরা আছেন বলেই এখনো দেশটা আছে। তাই এ কথা ঠিক নয়, যে জাতি যেমন সেই জাতি তেমন নেতৃত্বই পায়।
বরং আমাদের দুঃখটা এখানেই, আমাদের মানুষগুলো যতটা নিষ্ঠাবান ও সাহসী, আমাদের সব রকমের কর্তাব্যক্তিরা ততটা নন। আমরা আমাদের উপযুক্ত কান্ডারি পাইনি। পেলে ঝরনা বেগমদের এভাবে রাস্তায় পুলিশকে বাঁচাতে নামতে হতো না। পুলিশ নিজেই নিজের ও জনতার রক্ষক হতে পারত। পুলিশ যেন কথাটা মনে রাখে, রাজনীতিবিদেরা যেন কথাটা মনে রাখেন, দেশের কর্তাব্যক্তিরা যেন কথাটা মনে রাখেন।

একসঙ্গে ব্ল্যাকআউটে ১০ ব্লগ

‘সরকারের মৌলবাদতোষণ। ব্লগার গ্রেপ্তার। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ। ব্ল্যাকআউট।’ এভাবেই ব্লগারদের মুক্তির দাবি ও ব্লগগুলোর হয়রানি বন্ধে আজ দুপুর ১২টা থেকে ব্ল্যাকআউটে গেছে ১০টিরও বেশি বাংলা ব্লগ।
প্রতিটি ব্লগের হোমপেজ কালো করে সেখানে ব্ল্যাকআউটের কারণ ও তথ্য লিখে দেওয়া হয়েছে।
ব্ল্যাকআউটে যাওয়া ব্লগগুলো হচ্ছে—সচলয়াতন, আমার ব্লগ, নাগরিক ব্লগ, মুক্তাঙ্গন, মুক্তমনা, আমরা বন্ধু, চতুর্মাত্রিক, ক্যাডেট কলেজ ব্লগ, ইস্টিশন ব্লগ, সরবসহ আরও কয়েকটি ব্লগ।
ব্লগগুলোর পক্ষ থেকে কালো ব্যানারের ওপর লাল রঙে লেখা হয়েছে ‘প্রতিবাদ করুন। প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’
প্রসঙ্গত, ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্লগে উসকানিমূলক মন্তব্য ও কটূক্তির অভিযোগে এ পর্যন্ত চারজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

লংমার্চ প্রতিরোধেসন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টার হরতাল

শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা দেশে ২৪ ঘণ্টার হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির গতকাল বুধবার রাতে বলেন, ‘জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা এবং হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ প্রতিরোধে হরতাল ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে হরতালের ঘোষণা দেওয়া হবে।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, জুমার নামাজের কারণে সন্ধ্যা থেকে হরতালের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

হজে যেতে চাইলে প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ অক্টোবর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যেতে চান, তাঁদের এখনই প্রস্তুতি শুরু করা দরকার। অন্তত মানসিক প্রস্তুতি।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া যায়। হজে যেতে চাইলে ৩০ মে তারিখের মধ্যে নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও হজ পরিচালক মো. বজলুল হক বিশ্বাস জানান, এবার হজে যেতে চাইলে নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই যান না কেন কোথায় এবং কীভাবে থাকবেন, তা আগেই জেনে নেওয়া জরুরি। হজ প্যাকেজে সৌদি আরবে যাওয়া-আসা, মক্কা-মদিনায় থাকা-খাওয়াসহ প্যাকেজ সুবিধাগুলো চুক্তিপত্রে বুঝে নিতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করুন। পড়ে, বুঝে, যাচাই করে চুক্তিপত্রে সই করুন। হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd এ ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
হজ পরিচালক আরও জানান, গত পাঁচ বছরের মধ্যে হজ পালন করলে সৌদি সরকার এবার তাঁদের হজ ভিসা দেবে না। আর হজ প্যাকেজে ফিতরা (ফিতরা মানে স্থানান্তর) পদ্ধতিও নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।

এবার কত টাকা লাগবে
সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ রয়েছে। একটি প্যাকেজে হজযাত্রীর খরচ হবে তিন লাখ ৪৭ হাজার ২৭ টাকা। অন্যটিতে খরচ হবে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। এ ছাড়া কোরবানির জন্য প্রতিটি প্যাকেজে আরও খরচ হবে (৪৫০ রিয়াল) প্রায় ১০ হাজার টাকা।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। ন্যূনতম প্যাকেজ হলো দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। এ ছাড়া তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা থেকে আরও বেশি টাকার প্যাকেজ রয়েছে।

পরামর্শ
• ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হজ এজেন্সির তালিকা www.haab-bd.com ঠিকানায়ও পাওয়া যাবে।
• কোন কোন এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে তা যাচাই করুন।
• হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ অফিসে দেওয়া হয়।
• মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় মসজিদে নববী থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থাৎ কাবা শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও তত কম হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে হজের প্যাকেজ ঠিক করুন।
ভাষার ভিন্নতা, নতুন দেশ, নতুন পরিস্থিতির কারণে কিছুসংখ্যক হজযাত্রী সমস্যায় পড়ে থাকেন। কয়েকবার হজ পালন করেছেন—এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কিছুটা ধারণা থাকলে, সচেতন হলে অনেক সমস্যা দূর করা যায়। পাঠকের সুবিধার্থে তাঁদের কিছু পরামর্শ:
• আপনার নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে ঠিক আছে কি না, যাচাই করে নিন। ২০ কপি ছবি সংগ্রহে রাখুন।
• কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল বা তথাকথিত মোয়াল্লেমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন না।
• সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই হজে যান না কেন, হজ প্যাকেজের সুবিধা কী কী, ভালোভাবে বুঝে যাচাই করুন। কিছু খরচ নির্দিষ্ট আছে, যেমন বিমানভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি। বাকি টাকা মক্কা-মদিনায় বাসস্থানের জন্য। হাজিদের আবাসন কোথায় হবে তার স্বচ্ছ ধারণা দেশ থেকেই জেনে রাখা প্রয়োজন।
• কিছু হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় নয় কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে আপনার এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
• মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য বিবেচিত হবেন না; নারী হজযাত্রীকে মাহরামের সঙ্গে একত্রে টাকা জমা দিতে হবে।
• প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। কয়েক বছর ধরে প্রথম আলো হজযাত্রীদের সহায়ক হজ গাইড প্রকাশ করে বিনা মূল্যে তা বিতরণ করে। এটি প্রথম আলোর কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। অথবা, হজের আগে হজক্যাম্পে হজযাত্রীদের হাতে পৌঁছেও দেওয়া হয়।

হজ প্যাকেজে খরচের ভিন্নতা কেন?
প্যাকেজে সৌদি আরবে হজের জন্য অবস্থানের মেয়াদ, বিমানের ধরন (সরাসরি না অন্য বিমানবন্দর হয়ে সৌদি আরবে পৌঁছাবে), মক্কায় বাসার ধরন এবং তা কাবা শরিফ থেকে কত দূর, বাসায় লিফট আছে কি নেই, বাসা না হোটেল, খাবারের ব্যবস্থা আছে বা নেই, ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানোর ব্যবস্থা আছে বা নেই, কোরবানি আছে বা নেই ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। একইভাবে মদিনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। আবার মিনায় তাঁবুতে বা আজিজিয়ায় থাকা কিংবা না থাকা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে হজের খরচের টাকার অঙ্ক।

সরকারি ব্যবস্থাপনা
প্যাকেজ ১: সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ মিটার ও মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত (সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের যাচাই করা বাসস্থান) বাসায় থাকার ব্যবস্থা।
প্যাকেজ ২: সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার মিটার ও মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত বাড়িতে আবাসন।
এ ছাড়া উভয় প্যাকেজে মক্কায় ও মদিনায় সৌদি নিয়ম অনুযায়ী একটি খাট, একটি বেড, একটি বালিশ ও একটি কম্বল (কক্ষ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হবে, কোনো কোনো কক্ষে অতিরিক্ত পাখা থাকতে পারে), পাঁচ থেকে আটজনের জন্য একটি সংযুক্ত সাধারণ গোসলখানা-শৌচাগার, মিনায় তাঁবুতে প্রত্যেক হাজির জন্য জায়গা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের ময়দানে যাওয়া-আসার জন্য পরিবহন, মক্কা ও মদিনায় সাধারণ চিকিৎসা, ফ্লাইটের আগে ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা, হজের আহকাম-আরকান সম্পর্কে নিবিড় প্রশিক্ষণ, বইপুস্তক সরবরাহ প্রভৃতি সুবিধা পাবেন হাজিরা। প্রতি ৪৫ জন হাজির জন্য একজন গাইড নিয়োগ করা হবে।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
দুই ধরনের প্যাকেজেই প্রতি হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ২২ হাজার ৮২৭ টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু ভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি ২৪ হাজার ৩৩৯ টাকা, খাওয়ার খরচ ১৮ হাজার ৩৭৫ টাকা, মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা, হজ গাইড সাত হাজার ৫৪৪ টাকা, মিনা আরাফাতে ট্রেন ভাড়া পাঁচ হাজার ২৫০ টাকা, স্থানীয় সেবামূল্য ৮০০ টাকা, হজ প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা ও আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি হজযাত্রীর জন্য মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া একটি প্যাকেজে এক লাখ ৫০ হাজার ৫৯১ টাকা, অন্য প্যাকেজে ৮৩ হাজার ৭৯০ টাকা।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ২২ হাজার ৮২৭ টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু ভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি ২৪ হাজার ৩৩৯ টাকা, স্থানীয় সেবামূল্য ৮০০ টাকা, প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা ও আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া, মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ, মিনা-আরাফাতে ট্রেন ভাড়া, হজ গাইড, খাওয়া ও কোরবানির খরচ এজেন্সি প্যাকেজ অনুযায়ী ঠিক করে থাকে।

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিগুলোর সংগঠন হলো হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। হাবের মূল কাজ হলো সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের হজ ও ওমরাহ নীতিমালা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। হাবের ওয়েবসাইট www.haab-bd.com. ঠিকানা: সাত্তার সেন্টার (১৬ তম তলা), হোটেল ভিক্টোরি, ৩০/এ নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা।

হজের টাকা কোন ব্যাংকে জমা দেবেন
হজের ব্যয় বাবদ টাকা নিম্নলিখিত ব্যাংকের যেকোনো শাখায় জমা দেওয়া যাবেঃ ১. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ২. অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ৩. জনতা ব্যাংক লিমিটেড ৪. রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ৫. পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ৬. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লিমিটেড ৭. রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রাজশাহী ৮. আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ৯. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১০. দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড ১১. প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ১২. প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ১৩. মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ১৪. স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ১৫. ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ১৬. ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড ১৭. ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ১৮. সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ১৯. শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ২০. ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড ২১. ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেড ২২. এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড ২৩. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড।

পাসপোর্ট বানাবেন যেখানে
ঢাকায় আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এটিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ৩৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। হজযাত্রীরা নিজ নিজ জেলা অনুযায়ী পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাসপোর্টের আলাদা শাখা রয়েছে, সেখান থেকেও ওই জেলায় বসবাসকারীরা পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। আবেদনপত্রসহ আরও তথ্য www.passport.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া যাবে।

হজের আবেদনপত্র
হজের আবেদনপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দ্বীনি দাওয়াত বিভাগের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, তালিকাভুক্ত ২৩টি ব্যাংকের শাখা (যেখানে টাকা জমা দিতে হবে) এবং বাংলাদেশ সচিবালয়, ভবন নম্বর ৮, হজ শাখা, কক্ষ নম্বর ১০৩, ঢাকায় হজ অফিস, আশকোনা থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং জমা করা যাবে। এ ছাড়া www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে ডাউনলোড ও প্রিন্ট আউট নিয়ে স্বাক্ষরসহ ওই সব কার্যালয়ের যেকোনোটিতে জমা দেওয়া যাবে। আবেদনপত্র আগামী ৪ জুনের মধ্যে জমা দিতে হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে নিজ নিজ এজেন্সি থেকে আবেদন সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে ৩০ মে তারিখের মধ্যে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রতিষেধক
হজে যাওয়ার আগে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলায় সরকারি মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, ঢাকায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রতিষেধক নিতে হবে। এ ছাড়া হজের আগে উত্তরা আশকোনা, হজ অফিসেও এ কাজটি সম্পন্ন করা হয়।
প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক টিকা এবং স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। হজে যাওয়ার আগে এই স্বাস্থ্যসনদ নিতে হবে। আর ৭৫ বছর বা ততোধিক বয়স্ক হজযাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত বোর্ডের বিশেষ স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
সৌদি আরবে বিমানবন্দরে পৌঁছে প্রত্যেক হজযাত্রীকে স্বাস্থ্য সনদ, পরিচয়পত্র এবং কবজি বেল্ট বহন করতে হয়। এটি বাধ্যতামূলক। তাই হজের আবেদনপত্রে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করা জরুরি।

পাসপোর্ট
পাঁচ বছরের মধ্যে হজ পালন করলে সৌদি সরকার এবার তাঁদের হজ ভিসা দেবে না। নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করুন। পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে নবায়ন করুন। টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ মে। এই তারিখের আগেই পাসপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করুন

মাধ্যম
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমে হজে যাওয়া যায়। উভয় ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম খরচ দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। মক্কার কাবা শরিফ এবং মদিনার মসজিদে নববী থেকে বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে টাকার অঙ্ক

টাকা জমা
টাকা জমা দেওয়ার আগে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা এজেন্সিগুলো যাচাই করে নিন। কোনো কোনো এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী নির্ধারিত ২৩ ব্যাংকের শাখায় টাকা জমা দিন। রসিদ ছাড়া কাউকে টাকা দেবেন না

নিয়মকানুন
প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। যাঁরা হজে গেছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করুন। হজ ক্যাম্প, আশকোনা, ঢাকা এবং জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ও www.hajj.gov.bd ঠিকানায় হজ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন

এক নজরে হজের কার্যক্রম
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে পবিত্র কাবা শরিফ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ জিয়ারত করা। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ হজ
১. ইহরাম বাঁধা ২. ৭-৮ জিলহজ মিনায় অবস্থান ৩. ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান, সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া ৪. ৯ জিলহজ মুজদালিফায় রাত যাপন ৫. ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা, কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ৬. ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ করা ৭. ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা ৮. বিদায়ী তাওয়াফ
সূত্র: হজ মন্ত্রণালয়, সৌদি আরব

হজবিষয়ক যেকোনো তথ্য
পরিচালক, হজ অফিস, আশকোনা, উত্তরা, ঢাকা (ফোন: ৮৯৫৮৪৬২ ও ৭৯১২৩৯১) এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে (ফোন: ৭১৬৩৬৭৮, ৯৫১২২৩৯, ৯৫১২২৩৮, ৭১৬০৩৯৭) যোগাযোগ করে যেকোনো তথ্য নিতে পারেন। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলার উপপরিচালক এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে

স্ত্রী-শোকে নয় খুন

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে স্ত্রীর শোকে আক্রান্ত এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি আজ বৃহস্পতিবার চার নারী ও পাঁচ শিশুকে হত্যা করেছেন।
এএফপির বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, ওই রাজ্যের জশপুর জেলার বেহরাতলি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জশপুরের পুলিশপ্রধান গোবর্ধন সিং দারো এএফপিকে টেলিফোনে বলেন, বেহরাতলির পাণ্ডু নাগেসিয়াকে তাঁর স্ত্রী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তাঁর কিছু মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। আজ বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর নয় প্রতিবেশীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
গোবর্ধন সিং বলেন, ৩৫ বছর বয়সী পাণ্ডু দুই থেকে নয় বছর বয়সী পাঁচ মেয়ে-শিশু, ২৫ বছর বয়সী একজন এবং ষাটোর্ধ্ব দুজন নারীকে হত্যা করেছেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘পাণ্ডু প্রথম ২৫ বছর বয়সী নারী ও তাঁর দুই বছর বয়সী মেয়েকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর বাকিদের ওপর হামলা চালান।’
পুলিশপ্রধান নিশ্চিত করেন, কুঠারসহ পাণ্ডুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Tuesday, April 2, 2013

স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার পশ্চিম বড়িবাড়ি এলাকা থেকে গতকাল সোমবার স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপরদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার রূপনগর এলাকার একটি খাল থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন কাপাসিয়ার পশ্চিম বড়িবাড়ি এলাকার আবদুল বারেকের ছেলে মো. আলআমিন (২২) ও তাঁর স্ত্রী পলি আক্তার (১৮) এবং কালিয়াকৈরের রূপনগর এলাকার আবদুর রউফের ছেলে কামাল হোসেন (৩২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জামালপুরের গোড়াকান্দা এলাকার আলাল উদ্দিনের মেয়ে পলি আক্তারের সঙ্গে দেড় বছর আগে কাপাসিয়ার আলআমিনের বিয়ে হয়। গত রোববার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তাঁরা নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে একই শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আলআমিনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং নিহতদের লাশের সুরতহাল করে বোঝা যাচ্ছে, ঘটনাটি আত্মহত্যা। তবে ঘটনার কারণ জানা যায়নি।

যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর মুখে কাপড় বেঁধে নির্যাতন

স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি করা যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় গত শনিবার রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকীর চর গ্রামে গৃহবধূ ঝিনুক বেগমের মুখে কাপড় বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ঝিনুক বেগম অভিযোগ করেন, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে যৌতুকের টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। নির্যাতন সইতে না পেরে কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে তাঁর মুখে কাপড় বেঁধে বেদম মারপিট করা হয়। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর তাঁর আর কিছু মনে নেই।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে ঝিনুক বেগমের বাবা রুহুল আমিন ঘরামি বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী জসিম হাওলাদার, ভাশুর লিটন হাওলাদার ও শ্বশুর মজিবর হাওলাদারকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
টরকীর চর গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন, জবেদ আলী ব্যাপারীসহ কয়েকজন জানান, গত রোববার সকালে ঝিনুককে বাড়ির আঙিনায় অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবদুস সালাম দেওয়ান জানান, রোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে এবং মুখমণ্ডল থেকে কীটনাশকের দুর্গন্ধ পাওয়া গেছে। তবে কীটনাশক পানের কোনো লক্ষণ ছিল না।
অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে জসিম হাওলাদার বলেন, ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে—এ কথা সত্য। কিন্তু নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

প্রথম দিনে অনুপস্থিত ৯২৯৭, বহিষ্কার ৩৩

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে সারা দেশে গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রথম দিনে ১০ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল নয় হাজার ২৯৭ জন শিক্ষার্থী এবং বহিষ্কৃত হয়েছে ৩৩ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণকক্ষের হিসাব অনুযায়ী অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে এক হাজার ৬২৩, রাজশাহীতে এক হাজার ১১৬, যশোরে ৮৪৬, কুমিল্লায় ৮৪১, চট্টগ্রামে ৬৯৭, সিলেটে ৩৭৩, বরিশালে ৩১৪, দিনাজপুরে ৬৬৩, মাদ্রাসা বোর্ডে এক হাজার ৫০৪ এবং কারিগরি বোর্ডে এক হাজার ৩২০ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২০ জনই কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থী। বাকিদের মধ্যে নয়জন মাদ্রাসার, দুজন কুমিল্লার, একজন সিলেটের ও দিনাজপুর বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী। নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানিয়েছে, তাদের কাছে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক খবর আসেনি।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঢাকা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি আবারও পরীক্ষার সময়ে হরতাল না দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি পরীক্ষার সময়ে হরতালের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের সচেতন জনগণের প্রতি সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম গোলাম ফারুক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তাসলিমা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন আলিম ও কারিগরি বোর্ডের অধীন এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন।