Friday, March 8, 2013

ঈশ্বরদীর টমেটো চাষিদের মাথায় হাত

লাগাতার হরতাল ও অবরোধের কারণে ঈশ্বরদীর টমেটো চাষিরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির কারণে ব্যাংক ও এনজিও-এর ঋণ ও কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। দেনার দায়ে ভিটে-মাটি চলে যাওয়ার আশংকায় চাষিরা শংকিত। ঈশ্বরদীতে উত্পাদিত বিপুল পরিমাণ টমেটোর ভোক্তা ঈশ্বরদীতে নেই। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের জন্য ঈশ্বরদীতে বিগত কয়েক বছর যাবত্ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে টমেটোর আবাদ হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে টমেটোর কোন ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। হরতাল-অবরোধের কারণে ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকা হতে কোন পাইকার আসতে পারছে না। টমেটোর পূর্ণ মৌসুমে দ্রুত টমেটো পেকে যাচ্ছে। অথচ ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতা সংকটের কারণে জমিতেই টমেটো পেকে পচন ধরছে।

চাষিরা জানান, প্রায় এক মাস আগে থেকে টমেটোর পূর্ণ মৌসুম শুরু হয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে রোদের প্রখর তাপ এবং গরম পড়ে যাওয়ায় টমেটো দ্রুত পেকে যাচ্ছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রতিদিনই ঈশ্বরদী হতে ১৫-২০ ট্রাক টমেটো ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। এবারে শুরুতে শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় টমেটো ক্ষতিগ্রস্ত ও নাবলা হয়ে যায়। ঈশ্বরদীতে মৌসুমের প্রথম দিকে ১৬০০-১৮০০ টাকা মণ দরে টমেটো বিক্রি হয়। বাজারে আমদানি বেড়ে যাবার পর দাম কমতে কমতে ৭০০-৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছিল। দাম কমলেও বিপুল ফলন পাওয়া যায়। চাষিরা বলেন, এবারে টমেটোর দাম অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি পাওয়ায় অনেকেই আশান্বিত ছিল। কিন্তু ঘন ঘন হরতাল-অবরোধে চাষিদের এখন মাথায় হাত। হরতালের কারণে ঢাকা বা অন্য কোন শহরেও টমেটো পাঠাতে পারছেন না। পাইকারি বাজারে ক্রেতা/ফড়িয়া নেই। টমেটো সংরক্ষণেরও কোন ব্যবস্থা না থাকায় টমেটো চাষিরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কক্সবাজারে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে মরল তোফায়েল

দুপুরে হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময় চলছিল। ওই সংঘর্ষে আটকে পড়া স্বামীকে (করিম উল্লাহ) উদ্ধারের জন্য পাঠিয়েছিলাম ছেলে তোফায়েলকে। কিন্তু কে জানত, বাবাকে উদ্ধার করতে গিয়ে গুলিতে ওর প্রাণ যাবে?’ এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুলতানা আরা বেগম।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ারছড়ায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় তোফায়েল আহমদসহ (২০) তিনজনের মৃত্যু হয়। শহরের উত্তর রুমালিয়াছড়ার গুদারপাড়ায় করিম উল্লাহর বাড়ি।
গত বুধবার করিম উল্লাহর বাড়িতে গেলে স্ত্রী সুলতানা আরা বেগম (৪৮) ছেলে হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। করিম উল্লাহ (৬৫) ওই দিনের সহিংসতার বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, ‘হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে তখন ব্যাপক গুলি হচ্ছিল। এরই ফাঁকে তোফায়েল এসে আমার এক হাত ধরে বাড়ির দিকে ছুটছিল। মনে চরম আতঙ্ক, কখন গুলিবিদ্ধ হই। ছিদ্দিক হাজির বাড়ির পাশে এলে বিকট শব্দে একটি গুলি এসে তোফায়েলের পেটে লাগে। গুলিটি পুলিশের বলে সন্দেহ হলো। তখন সে মাগো বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ এসে লাশ নিয়ে টানাটানি শুরু করে। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরদিন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশ এনে দাফন করি।’
ছেলে হত্যার দায়ে মামলা করলেন না কেন, জানতে চাইলে করিম উল্লাহ বলেন, ‘জীবনে কোনো দিন থানায় যাইনি। কার বিরুদ্ধে মামলা করব? আল্লাহর কাছে আমরা ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ তিনি বলেন, ‘তোফায়েল কোনো রাজনীতি করত না। শহরের আলীরজাহান এলাকায় পানের দোকান করে সংসার চালাত। রাজনীতির বলী হলেও এ পর্যন্ত কোনো দলের নেতারা বাড়িতে এসে একটু সান্ত্বনা দেয়নি।’
করিম উল্লাহর ছয় সন্তানের মধ্যে তোফায়েল চতুর্থ। বড় তিন ছেলে প্রবাসী, কিন্তু সংসারের খোঁজ রাখেন না। তোফায়েলের মৃত্যুতে ছোট দুই ভাইবোনের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ছোট বোন হারেছা আকতার (১৪) টিএমসি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে এবং ভাই আবদুল্লাহ আল নোমান (১২) সাহিত্যিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ওই দিন তোফায়েলসহ তিনজন শিবিরের গুলিতে মারা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জামায়াত-শিবিরের প্রায় ছয় হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে হত্যাসহ পৃথক তিনটি মামলা করেছে। ইতিমধ্যে ১৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Thursday, March 7, 2013

পাঁচবিবিতে তওবা পড়িয়ে 'নতুন মুসলমান'!

আওয়ামী লীগের সমর্থন করলে মুসলমানিত্ব থাকে না—এমন অপবাদ রটিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক মুসলমানদের তওবা পড়িয়ে 'নতুন করে মুসলমান' বানানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত এ রকম ১৬ জনকে নতুন মুসলমান হতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার জামায়াত-বিএনপি অধ্যুষিত প্রত্যন্ত পল্লী আওলাই ইউনিয়নের ভারাহুত গ্রামের।

অভিযোগ মতে স্থানীয় জামায়াত নেতা ভারাহুত গ্রামের মসজিদের ইমাম জফিরউদ্দিন (এলাকায় রাজাকার হিসেবে পরিচিত) ও পার্শ্ববর্তী জাবেকপুর গ্রামের মসজিদের ইমাম ময়েজউদ্দিন এই তওবা পড়ানোর কাজটি সম্পন্ন করেছেন।

জানা গেছে, তওবার সময় যে বাক্য কয়টি পাঠ করতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাধ্য করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে— 'প্রতিজ্ঞাপূর্বক ওয়াদা করিতেছি যে, আমি আওয়ামী লীগ করায় অমুসলিম ছিলাম। বর্তমানে জামায়াত-বিএনপি দলের সাথে থাকার ওয়াদা করে মুসলমান হচ্ছি। আওয়ামী লীগ যে করে সে ইহুদি। আমি কোনদিন ওয়াদার বরখেলাফ করলে আবার অমুসলিম হয়ে যাব, আমিন'।

জানা যায়, গত রবিবার ফজরের নামাজের পর ওই গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থক আব্দুল কাদের, আব্দুল কুদ্দুস, গোলাম, ইয়াসিন, হাসান, নূরুন্নবী, এনামুল, বকুল, আজিজুল হক, আব্দুল হাকিমসহ ১১ জন ও পরদিন ফজরের নামাজের পর আরও পাঁচজনকে তওবা পড়িয়ে 'নতুন করে মুসলমান' বানানো হয়। স্থানীয় একাধিক সূত্রের মতে গ্রামেরই মাতুব্বর আব্দুর রহিম, তার সহযোগী আব্দুল মালেক মাস্টার, ময়েজউদ্দিন, সিদ্দিক ও আশরাফ তওবা পড়ানোর ঘটনায় নেতৃত্ব দেন।

তওবাকারীরা জানান, জীবন রক্ষার্থে তারা বাধ্য হয়ে তওবা পড়ে আবার মুসলমান হতে রাজি হয়েছিলেন। তারা আরো জানান, গ্রামের বকুল নামের এক যুবক এ প্রস্তাবে রাজি না হলে গ্রামবাসীদের সামনে তাকে ভুল স্বীকার করে মাফ চাইতে হয়। এ অপমান সইতে না পেরে সে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়।

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর এলাকায় জামায়াত-শিবির কর্তৃক অপবাদ ছড়ানো হয় যে, যারা আওয়ামী লীগ করে বা সমর্থন করে তাদের মুসলমান বলা যাবে না। তারা মুসলমান সম্প্রদায় থেকে খারিজ হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে আওলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী, এলাকার ফতেহপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আ. বারী সরদারের সঙ্গে কথা বললে তারা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে পাঁচবিবি উপজেলা সদরের দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আ. গফুর সরদার জানান, যারা এসব কাজ করেছে তারা ঠিক করেনি। কোন রাজনৈতিক দল করার জন্য ধর্ম চলে যাবে—এমন বিধান ইসলামে নেই।

জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার হামিদুল আলম, পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাট র্যাব-৫ কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আ. রাজ্জাক ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসানুল হক গতকাল বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় গোড়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনসভা করে তারা জনগণকে ধর্মীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রেখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

Wednesday, March 6, 2013

নোবেল পুরস্কারের জন্য রেকর্ড ২৫৯ মনোনয়ন

২০১৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য রেকর্ড সংখ্যক ২৫৯টি মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ২০৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ৫০টি সংগঠন এ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এ বছরের অক্টোবরে অসলোয় নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানসমূহের নাম ঘোষণা করা হবে। আর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সে তালিকায় থাকছেন পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। গতকাল নোবেল ইনস্টিটিউটের এক ঘোষণায় এ তথ্য দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এর আগে ২০১১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন ২৪১ জন। তবে এবার সে রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।


মাথাব্যথায় অবহেলা নয়

মাথাব্যথা একটি উপসর্গ। জীবনে সবাই কম-বেশি এ উপসর্গে ভোগেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাথা ধরার কারণ হলো টেনশন, স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তা, শব্দ, আলো ও ধোঁয়ায় এটি বেড়ে যায়। টেনশনজনিত মাথাব্যথা সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না। তবে ভেবে দেখুন ঠিক কী কী ঘটনা ঘটলে মাথাব্যথা শুরু হয়, এগুলো এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। অকারণে মুঠো মুঠো প্যারাসিটামল বা পেইনকিলার না খেয়ে আইসপ্যাক, ম্যাসাজ ও রিলাক্সেসন বা শিথিলায়নপদ্ধতিতে ব্যথা কমান।
মাথাব্যথার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো মাইগ্রেন। ব্যথা শুরু হওয়ার আগে অনেক সময় চোখ ঝাপসা হয়, চোখে আঁকাবাঁকা লাইন দেখা যায়, বমি আসতে পারে। তারপর শুরু হয় একপাশে তীব্র ব্যথা। বমিও হতে পারে। এ সময় অন্ধকারে থাকতে ভালো লাগে। কয়েক ঘণ্টা পর ব্যথা চলে যায় এবং খুব অবসন্ন লাগে, গভীর ঘুম হয়। মাইগ্রেনের রোগীরা কিছু বিষয় মনে রাখবেন।
—ভালো ও গভীর ঘুমের অভাব, দুশ্চিন্তা, অনেকক্ষণ টিভি বা কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, উচ্চ কোলাহল, অতি উজ্জ্বল আলোতে মাইগ্রেন হয়। এগুলো এড়িয়ে চলুন।
—চকলেট, পনির, অ্যালকোহল, টেস্টিং সল্ট খেলে মাইগ্রেন হতে পারে।
—মেয়েদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে এটি বাড়তে পারে। মাসিকের সময় মাইগ্রেন বেড়ে যেতে পারে।
জ্বর হলেও মাথাব্যথা হয়। তবে অসহনীয় মাথাব্যথা, সঙ্গে চোখ ঝাপসা হয়ে আসা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, কোনো একদিক বা হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া, সকালবেলা বেশি ব্যথা হওয়া এবং হাঁচি, কাশি বা মাথা নিচু করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। তাই সব মাথাব্যথাকে অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর প্রস্তুতি

অধ্যায়-২
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

 এক কথায় উত্তর দাও।
৪. ইংরেজরা বাংলায় আসার কারণে কী হয়েছে?
উত্তর: ইংরেজরা বাংলায় আসার কারণে বাংলার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায় এবং সমাজ ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
৫. ইংরেজরা কত বছর বাংলা শাসন করেছিল?
উত্তর: ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর ধরে এ দেশ শাসন করে।
৬. বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের নাম কী?
উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলা।
৭. সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে বাংলার নবাব হন?
উত্তর: ২২ বছর বয়সে।
৮. ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্য সংস্থার নাম কী ছিল?
উত্তর: ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্য সংস্থার নাম ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
৯. পলাশীর যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ইংরেজ শক্তির সঙ্গে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
১০. বক্সারের যুদ্ধ কবে হয়েছিল?
উত্তর: বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৪ সালে হয়েছিল।
১১. কোম্পানির শাসন কত বছর চলেছিল?
উত্তর: এ দেশে ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ১০০ বছর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলেছিল।
১২. ভারতবর্ষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা কে ছিল?
উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।
১৩. সিপাহি বিদ্রোহ কবে দেখা দেয়?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ দেখা দেয়।
১৪. ব্রিটিশ সরকার বাংলাসহ ভারতের শাসনভার কবে নিজ হাতে তুলে নেয়?
উত্তর: ১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ সরকার বাংলাসহ ভারতের শাসনভার নিজ হাতে তুলে নেয়।
১৫. ইংরেজ শাসনের নীতি কী ছিল?
উত্তর: ইংরেজ শাসনের নীতি ছিল ‘ভাগ করো শাসন করো’।
১৬. ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ কী?
উত্তর: কোম্পানি শাসনের সময়ে ১৭৭০ সালে (বাংলা ১১৭৬) বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, যা ইতিহাসে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
১৭. নবজাগরণের কয়েকজন ব্যক্তির নাম লেখো।
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
১৮. ইংরেজরা কত সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়েছিল?
উত্তর: ১৯১১ সালে ইংরেজরা বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়।
১৯. ভারতীয় মুসলিম লীগ কত সালে গঠিত হয়?
উত্তর: ১৯০৬ সালে ঢাকায় ভারতীয় মুসলিম লীগ নামের একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে।
২০. ইংরেজরা কাকে ফাঁসি দিয়েছিল?
উত্তর: ইংরেজরা ক্ষুদিরাম ও মাস্টারদা সূর্য সেনকে ফাঁসি দিয়েছিল।
২১. নারী জাগরণের অগ্রদূত কে?
উত্তর: বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
২২. ভারতবর্ষ স্বাধীন হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়।

ক্ষতি হচ্ছে দরিদ্র মানুষের

হরতালে সড়ক অবরোধের জন্য গত দুই দিনে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশের শত শত সরকারি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এসব গাছ কেটে ফেলায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ সামাজিক বনায়নের সঙ্গে জড়িত সদস্যরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ বন বিভাগের আওতায় জেলার বিভিন্ন সড়কে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে প্রায় ১০ বছর আগে গাছগুলো লাগানো হয়। এসব গাছের জন্য গ্রামের দরিদ্র জনগণকে সদস্য করা হয়। গাছ থেকে উপার্জিত অর্থ বন বিভাগ ও সামাজিক বনায়নের সদস্যরা পান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হরতাল সফল করতে সড়ক অবরোধের জন্য জেলার সদর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, কাজীপুর, রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশের শত শত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলেছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার পুরাতন বগুড়া সড়কের বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর থেকে আলকদিয়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার; বহুলী বাজার থেকে ছোনগাছা সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার; নলকা সড়কের চণ্ডীদাসগাতীতে প্রায় অধা কিলোমিটার; সিরাজগঞ্জ-বেলকুচি সড়কের সয়দাবাদে; বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের উল্লাপাড়া পূর্ব দেলুয়া, বালসাবাড়ী ও কাঁঠালতলা; রায়গঞ্জ-নিমগাছী সড়কের ভূঁইয়াগাতীসহ বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে অবরোধ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির হরতাল চলাকালেও গাছ কেটে সড়কে ফেলা হয়।
সিরাজগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, কত গাছ কাটা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সামাজিক বনায়নের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় সদস্যদের গাছ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্ত্রী কি স্বামীকে তালাক দিতে পারেন?

কোনো স্ত্রী যদি যুক্তিসংগত কারণে স্বামীকে তালাক দিতে চান, সে ক্ষমতা প্রচলিত আইনে স্ত্রীর রয়েছে।
মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাকের অধিকারকে তালাকে তৌফিজ বলা হয়। এ ক্ষমতা প্রয়োগ করে স্ত্রী আদালতে না গিয়েই সরাসরি বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন। মূলত তালাক প্রদানের বিষয়টি নির্ভর করে বিয়ের সময় সম্পন্ন করা কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটি পূরণের মাধ্যমে। এ কলামে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করেন। এ ক্ষমতা শর্তযুক্ত কিংবা শর্তহীন হতে পারে। এ কলামে লেখা থাকে, স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা স্বামী প্রদান করেছেন কি না এবং করে থাকলে কী কী শর্তে। তখন কাজি এর পাশে লিখবেন, হ্যাঁ দিয়েছেন। তা ছাড়া এ বিষয়ে একাধিক শর্ত লিখবেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে স্ত্রীর তালাকের অধিকার উল্লেখ না থাকে, সে ক্ষেত্রে কি তালাক দিতে পারবেন না? সে ক্ষেত্রেও স্ত্রী তালাক দিতে পারবেন। তবে তাঁকে পারিবারিক আদালতে আইন অনুযায়ী উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তালাকের জন্য প্রতিকার চাইতে হবে। আদালতের ডিক্রিমূলে তখন স্ত্রীর তালাক কার্যকর হবে।
আইন অনুযায়ী স্ত্রী যেসব কারণে আদালতে তালাক চাইতে পারেন, তা হলো—
 চার বছর স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে;
 স্বামী দুই বছর ভরণপোষণ দিতে অবহেলা করলে;
 স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করলে;
 স্বামী সাত বছর বা এর বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে;
 স্বামী যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া তিন বছর বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে;
 স্বামী বিয়ের সময় পুরুষত্বহীন থাকলে;
 স্বামী দুই বছর অপ্রকৃতিস্থ, কুষ্ঠরোগ বা মারাত্মক যৌনব্যাধিতে ভুগলে;
 নাবালিকা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয়ে থাকলে সাবালিকা (১৮ বছর পূর্ণ) হওয়ার পর স্ত্রী যদি তা অস্বীকার করেন (তবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে মামলা করা যায় না);
 স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করলে। যেমন: অভ্যাসগত কারণে স্ত্রীকে মারধর বা আচরণের নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে তাঁর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে, অন্য নারীর সঙ্গে স্বামী মেলামেশা করলে, নৈতিকতাবিরোধী জীবনযাপনের জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করার চেষ্টা করা হলে, স্ত্রীর সম্পত্তি হস্তান্তর করে দিলে বা সম্পত্তিতে বৈধ অধিকার প্রয়োগ থেকে তাঁকে নিবারণ করলে প্রভৃতি এবং
 মুসলিম আইনে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য বৈধ বলে স্বীকৃত অন্য যেকোনো কারণে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের দাবি করতে পারেন।

জেনে রাখুন
বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটি পূর্ণ করা হয়েছে কি না, তা মেয়ের অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সময় পাত্রপক্ষের প্ররোচনায় কাজিরা কলামটি পূরণ করতে অবহেলা করেন। যেভাবেই বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক ঘটুক না কেন, তালাকের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বামীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা মিউনিসিপ্যালিটির বা সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে নোটিশ লিখিতভাবে পাঠাতে হবে। তবে আদালতের মাধ্যমে কোনো বিবাহবিচ্ছেদের মামলার ডিক্রি হলে সেই ডিক্রির কপি চেয়ারম্যানকে প্রদান করলেই হবে। স্ত্রী তালাক দিলেও মোহরানার টাকা তাঁকে দিতে হবে এবং তালাক কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণ করতে হবে।

খোলা তালাক
মুসলিম আইনে স্ত্রীর ইচ্ছায় বিবাহবিচ্ছেদের আরেকটি ব্যবস্থা হচ্ছে খোলা তালাক। এ তালাক এমন একধরনের তালাক, যা স্বামী-স্ত্রীর সম্মতিতে কার্যকর হয়। খোলা তালাক পারস্পরিক চুক্তি দ্বারা অথবা কাজি বা আদালতের নির্দেশে হতে পারে। এ তালাকের উল্লেখযোগ্য দিক হলো—
 স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে থাকেন;
 স্বামী ওই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে থাকেন;
 স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সময় স্বামী বিনিময়ে স্ত্রীর কাছ থেকে প্রতিদান নিয়ে থাকেন এবং স্ত্রী তা দিয়ে থাকেন বা দিতে সম্মত হন। তবে খোলা তালাকের ক্ষেত্রে অন্য কোনো চুক্তি না থাকলে স্ত্রী মোহরানা পাওয়ার অধিকারী হবেন না; কিন্তু ইদ্দত পালনকালে স্ত্রী তাঁর গর্ভের সন্তানের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন।
 লেখক: আইনজীবী

৫৬ বছর পর শ্বশুরবাড়িতে প্রণব তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে

নড়াইল থেকে: দিল্লি থেকে ঢাকা। তারপর শ্বশুরবাড়ি নড়াইলের ভদ্রবিলা। নিরাপত্তায় নেয়া হয় বাড়তি ব্যবস্থা। জলপানের নানা আয়োজন। জামাইবাবু যে ভারত অধিপতি। ভদ্রবিলার গৌরব আর অহঙ্কার। শ্বশুরবাড়ি বসে তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে। তারপর স্বাদ নিলেন কুলের। শ্বশুর পক্ষের লোকজন তাকে আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূলসহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ডাবের জল এবং কুল বরই ছাড়া আর খিছু খাননি। কুল খেতে খেতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলাপচরিতায় মেতে উঠেন। প্রথমেই শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক মন্দিরে পূজা দেন। এরপর ওই বাড়িতে তৈরি করা মঞ্চে উঠে আত্মীয়দের উদ্দেশে কথা বলেন। প্রেসিডেন্টের আত্মীয়-স্বজনরা জানায়, প্রণব মুখার্জি নড়াইল সদর উপজেলার চাঁচড়া গ্রামে মামা শ্বশুরবাড়ি একটি মন্দির করে দেয়ার ঘোষণা দেন। শ্বশুরবাড়ির মন্দিরে পূজা-অর্চনাসহ শ্বশুরকুলের স্বজনদের সঙ্গে একান্তে ৫০ মিনিট সময় কাটান প্রণব ও তার স্ত্রী শুভ্রা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা ফারুকী মোহাম্মদ, ডিসি জহুরুল হক, জেলা পরিষদ প্রশাসক এডভোকেট সুবাস বোসসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। বিয়ের ৫৬ বছর পর এ প্রথমবারের মতো তিনি গতকাল সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি বেড়িয়ে গেলেন। সঙ্গে তাদের পালিত কন্যাও ছিল। এতকাল পরে জামাইবাবু ও বোন শুভ্রা মুখার্জিকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত ছোটভাই কানাইলাল আনন্দ অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। জামাইবাবু প্রণব মুখার্জি ও বোন শুভ্রা মুখার্জি কানাইলালকে সান্ত্বনা দেন। তারা জানিয়েছেন সময় কম তাই বেশি সময় থাকা যাচ্ছে না। তবে ভাগ্যে থাকলে আবার দেখা হবে এমনটাই জানিয়েছেন। কানাইলাল তাদের রিসিভশন জানানোর জন্য সকাল থেকে প্রস্তুতি নিয়ে অধির আগ্রহে বাড়িতেই ছিলেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক হেলিকপ্টারযোগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। ডিসি জহুরুল হক তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য এস কে আবু বাকের, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা রহমান ও ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী ও পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম। প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক সেখান থেকে সড়ক পথে শ্বশুরালয়ে যান। অন্য একটি হেলিকপ্টারে ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি (ডেলিগেট) দল নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম হলিপ্যাডে অবতরণ করেন। বেলা  ১১টা ২৭ মিনিটে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান বিশাল গাড়িবহর নিয়ে। গাড়ি বহরে এসএসএফ, দেশীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি, ডিসি-এসপির গাড়ি, প্রটোকলের গাড়িসহ মোট ৩২টি গাড়ি ছিল। হু হু করে সাইরেন বাজিয়ে নড়াইলের এস এম সুলতান চিত্রা সেতু পার হয়ে গাড়িগুলো চলে যায় ভদ্রবিলা গ্রামে। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিল হাজারো কৌতূহলি মানুষ ভারতের প্রেসিডেন্টকে এক নজর দেখার জন্য। কিন্তু সে সুযোগ কারও ভাগ্যে জোটেনি। তিনি যে গাড়িতে ছিলেন। গাড়িটি ছিল কালো রঙের। গ্লাসের রং ছিল কালো। বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা দেখে সাধারণ মানুষ অনুমান করেন এ গাড়িতে প্রেসিডেন্ট আছেন। প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার নড়াইলে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে নড়াইলের প্রধান প্রধান সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হেলিকপ্টারে উঠার পর আবার যান চলাচল শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বেলা ১২টায় ভদ্রবিলা শ্বশুরবাড়ি হতে বের হন। সড়ক পথে সোজা চলে আসেন হেলিকপ্টারের কাছে। ১২টা ৪৩ মিনিটের সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি কুষ্টিয়ার শিলাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে আকাশে উড়ে। প্রেসিডেন্ট ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের সফরে সার্বিক ব্যববস্থাপনায় ছিল জেলা প্রশাসন। তাদের নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্বে ছিল এসএসএফ। হরতালসহ বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বিষয় মাথায় রেখে মোতায়েন করা হয় দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিপুলসংখ্যক সদস্য, ডগ স্কোয়াড ও নৌ ডুবুরি। সুদীর্ঘ বিবাহিত জীবনে এ প্রথম সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে পদচিহ্ন দিলেন বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান।
৩ দিনের সফর শেষে ফিরে গেলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট
কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফিরে গেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। সফরের তৃতীয় ও শেষ দিনে রাজধানী ঢাকা, নড়াইলের শ্বশুরালয়, কুষ্টিয়ায় কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ী ও টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস-এ ব্যস্ত সময় কাটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান। রোববার দুপুরে ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশের মেয়ে শুভ্রা মুখার্জিসহ ৯০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে আসা বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী প্রণব মুখার্জি এখানে অবস্থানকালে প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এছাড়া, জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ এডভোকেট, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ডা. দীপু মনি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান এবং সপরিবারে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি দেয়া হয়। তিনি সমাবর্তন বক্তা হিসেবে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতাও করেন। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে তার হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি তাদের সম্মানে আয়োজিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগ দেন। তিনি ঢাকাস্থ ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। ঢাকায় শত ব্যস্ততার মাঝেও ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ড. কামাল হোসেনের মতো সুহৃদের খোঁজখবর নিতে ভুলেননি প্রণব মুখার্জি। সফরকালে ভারতীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের কথা থাকলেও পরে তার দলের তরফে তা বাতিল করা হয়।
ঢাকায় রেল ইঞ্জিন উদ্বোধন: রেলওয়ের উন্নয়নে ভারত থেকে আমদানি করা ইঞ্জিন আর ট্যাংক ওয়াগন উদ্বোধন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। গতকাল দিনের শুরুতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট  রেলস্টেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট তা উদ্বোধন করেন। এ সময় তারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সবুজ পতাকা নাড়ার পর ২০টি ট্যাংক ওয়াগন ও একটি ব্রেকভ্যান সংযুক্ত ব্রডগেজ ইঞ্জিন চালু হয়। স্টেশনে উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের ইঞ্জিন ও ওয়াগনগুলো আমদানির বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে ১০০  কোটি ডলারের ঋণচুক্তির আওতায়  রেলওয়েতে ৭৩ কোটি ডলারের ১৪টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৬৩ কোটি ডলারের ১১টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ  রেলওয়ে ভারতের কাছ থেকে ২৬টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন, ১৫৬টি ব্রডগেজ ট্যাংক ওয়াগন ও ৬টি ব্রেকভ্যান কিনছে। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল  থেকে ইঞ্জিনগুলো আসা শুরু হবে। তবে ভারতের প্রেসিডেন্টের সফর উপলক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বুধবার ২টি লোকোমোটিভ আসে। বর্ণাঢ্য এ উদ্বোধনীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রেলমন্ত্রী  মো. মুজিবুল হক, ডাক ও  টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ  রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tuesday, March 5, 2013

জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি করে তা কেন্দ্রে পাঠাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ও যুব সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুব সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে হরতালবিরোধী সমাবেশে তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ করতে হবে।”