Wednesday, March 6, 2013

মাথাব্যথায় অবহেলা নয়

মাথাব্যথা একটি উপসর্গ। জীবনে সবাই কম-বেশি এ উপসর্গে ভোগেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাথা ধরার কারণ হলো টেনশন, স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তা, শব্দ, আলো ও ধোঁয়ায় এটি বেড়ে যায়। টেনশনজনিত মাথাব্যথা সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না। তবে ভেবে দেখুন ঠিক কী কী ঘটনা ঘটলে মাথাব্যথা শুরু হয়, এগুলো এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। অকারণে মুঠো মুঠো প্যারাসিটামল বা পেইনকিলার না খেয়ে আইসপ্যাক, ম্যাসাজ ও রিলাক্সেসন বা শিথিলায়নপদ্ধতিতে ব্যথা কমান।
মাথাব্যথার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো মাইগ্রেন। ব্যথা শুরু হওয়ার আগে অনেক সময় চোখ ঝাপসা হয়, চোখে আঁকাবাঁকা লাইন দেখা যায়, বমি আসতে পারে। তারপর শুরু হয় একপাশে তীব্র ব্যথা। বমিও হতে পারে। এ সময় অন্ধকারে থাকতে ভালো লাগে। কয়েক ঘণ্টা পর ব্যথা চলে যায় এবং খুব অবসন্ন লাগে, গভীর ঘুম হয়। মাইগ্রেনের রোগীরা কিছু বিষয় মনে রাখবেন।
—ভালো ও গভীর ঘুমের অভাব, দুশ্চিন্তা, অনেকক্ষণ টিভি বা কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, উচ্চ কোলাহল, অতি উজ্জ্বল আলোতে মাইগ্রেন হয়। এগুলো এড়িয়ে চলুন।
—চকলেট, পনির, অ্যালকোহল, টেস্টিং সল্ট খেলে মাইগ্রেন হতে পারে।
—মেয়েদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে এটি বাড়তে পারে। মাসিকের সময় মাইগ্রেন বেড়ে যেতে পারে।
জ্বর হলেও মাথাব্যথা হয়। তবে অসহনীয় মাথাব্যথা, সঙ্গে চোখ ঝাপসা হয়ে আসা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, কোনো একদিক বা হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া, সকালবেলা বেশি ব্যথা হওয়া এবং হাঁচি, কাশি বা মাথা নিচু করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। তাই সব মাথাব্যথাকে অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর প্রস্তুতি

অধ্যায়-২
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

 এক কথায় উত্তর দাও।
৪. ইংরেজরা বাংলায় আসার কারণে কী হয়েছে?
উত্তর: ইংরেজরা বাংলায় আসার কারণে বাংলার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায় এবং সমাজ ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
৫. ইংরেজরা কত বছর বাংলা শাসন করেছিল?
উত্তর: ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর ধরে এ দেশ শাসন করে।
৬. বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের নাম কী?
উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলা।
৭. সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে বাংলার নবাব হন?
উত্তর: ২২ বছর বয়সে।
৮. ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্য সংস্থার নাম কী ছিল?
উত্তর: ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্য সংস্থার নাম ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
৯. পলাশীর যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ইংরেজ শক্তির সঙ্গে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
১০. বক্সারের যুদ্ধ কবে হয়েছিল?
উত্তর: বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৪ সালে হয়েছিল।
১১. কোম্পানির শাসন কত বছর চলেছিল?
উত্তর: এ দেশে ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ১০০ বছর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলেছিল।
১২. ভারতবর্ষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা কে ছিল?
উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।
১৩. সিপাহি বিদ্রোহ কবে দেখা দেয়?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ দেখা দেয়।
১৪. ব্রিটিশ সরকার বাংলাসহ ভারতের শাসনভার কবে নিজ হাতে তুলে নেয়?
উত্তর: ১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ সরকার বাংলাসহ ভারতের শাসনভার নিজ হাতে তুলে নেয়।
১৫. ইংরেজ শাসনের নীতি কী ছিল?
উত্তর: ইংরেজ শাসনের নীতি ছিল ‘ভাগ করো শাসন করো’।
১৬. ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ কী?
উত্তর: কোম্পানি শাসনের সময়ে ১৭৭০ সালে (বাংলা ১১৭৬) বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, যা ইতিহাসে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
১৭. নবজাগরণের কয়েকজন ব্যক্তির নাম লেখো।
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
১৮. ইংরেজরা কত সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়েছিল?
উত্তর: ১৯১১ সালে ইংরেজরা বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়।
১৯. ভারতীয় মুসলিম লীগ কত সালে গঠিত হয়?
উত্তর: ১৯০৬ সালে ঢাকায় ভারতীয় মুসলিম লীগ নামের একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে।
২০. ইংরেজরা কাকে ফাঁসি দিয়েছিল?
উত্তর: ইংরেজরা ক্ষুদিরাম ও মাস্টারদা সূর্য সেনকে ফাঁসি দিয়েছিল।
২১. নারী জাগরণের অগ্রদূত কে?
উত্তর: বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
২২. ভারতবর্ষ স্বাধীন হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়।

ক্ষতি হচ্ছে দরিদ্র মানুষের

হরতালে সড়ক অবরোধের জন্য গত দুই দিনে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশের শত শত সরকারি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এসব গাছ কেটে ফেলায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ সামাজিক বনায়নের সঙ্গে জড়িত সদস্যরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ বন বিভাগের আওতায় জেলার বিভিন্ন সড়কে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে প্রায় ১০ বছর আগে গাছগুলো লাগানো হয়। এসব গাছের জন্য গ্রামের দরিদ্র জনগণকে সদস্য করা হয়। গাছ থেকে উপার্জিত অর্থ বন বিভাগ ও সামাজিক বনায়নের সদস্যরা পান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হরতাল সফল করতে সড়ক অবরোধের জন্য জেলার সদর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, কাজীপুর, রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশের শত শত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলেছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার পুরাতন বগুড়া সড়কের বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর থেকে আলকদিয়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার; বহুলী বাজার থেকে ছোনগাছা সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার; নলকা সড়কের চণ্ডীদাসগাতীতে প্রায় অধা কিলোমিটার; সিরাজগঞ্জ-বেলকুচি সড়কের সয়দাবাদে; বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের উল্লাপাড়া পূর্ব দেলুয়া, বালসাবাড়ী ও কাঁঠালতলা; রায়গঞ্জ-নিমগাছী সড়কের ভূঁইয়াগাতীসহ বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে অবরোধ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির হরতাল চলাকালেও গাছ কেটে সড়কে ফেলা হয়।
সিরাজগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, কত গাছ কাটা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সামাজিক বনায়নের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় সদস্যদের গাছ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্ত্রী কি স্বামীকে তালাক দিতে পারেন?

কোনো স্ত্রী যদি যুক্তিসংগত কারণে স্বামীকে তালাক দিতে চান, সে ক্ষমতা প্রচলিত আইনে স্ত্রীর রয়েছে।
মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাকের অধিকারকে তালাকে তৌফিজ বলা হয়। এ ক্ষমতা প্রয়োগ করে স্ত্রী আদালতে না গিয়েই সরাসরি বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন। মূলত তালাক প্রদানের বিষয়টি নির্ভর করে বিয়ের সময় সম্পন্ন করা কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটি পূরণের মাধ্যমে। এ কলামে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করেন। এ ক্ষমতা শর্তযুক্ত কিংবা শর্তহীন হতে পারে। এ কলামে লেখা থাকে, স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা স্বামী প্রদান করেছেন কি না এবং করে থাকলে কী কী শর্তে। তখন কাজি এর পাশে লিখবেন, হ্যাঁ দিয়েছেন। তা ছাড়া এ বিষয়ে একাধিক শর্ত লিখবেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে স্ত্রীর তালাকের অধিকার উল্লেখ না থাকে, সে ক্ষেত্রে কি তালাক দিতে পারবেন না? সে ক্ষেত্রেও স্ত্রী তালাক দিতে পারবেন। তবে তাঁকে পারিবারিক আদালতে আইন অনুযায়ী উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তালাকের জন্য প্রতিকার চাইতে হবে। আদালতের ডিক্রিমূলে তখন স্ত্রীর তালাক কার্যকর হবে।
আইন অনুযায়ী স্ত্রী যেসব কারণে আদালতে তালাক চাইতে পারেন, তা হলো—
 চার বছর স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে;
 স্বামী দুই বছর ভরণপোষণ দিতে অবহেলা করলে;
 স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করলে;
 স্বামী সাত বছর বা এর বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে;
 স্বামী যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া তিন বছর বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে;
 স্বামী বিয়ের সময় পুরুষত্বহীন থাকলে;
 স্বামী দুই বছর অপ্রকৃতিস্থ, কুষ্ঠরোগ বা মারাত্মক যৌনব্যাধিতে ভুগলে;
 নাবালিকা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয়ে থাকলে সাবালিকা (১৮ বছর পূর্ণ) হওয়ার পর স্ত্রী যদি তা অস্বীকার করেন (তবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে মামলা করা যায় না);
 স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করলে। যেমন: অভ্যাসগত কারণে স্ত্রীকে মারধর বা আচরণের নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে তাঁর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে, অন্য নারীর সঙ্গে স্বামী মেলামেশা করলে, নৈতিকতাবিরোধী জীবনযাপনের জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করার চেষ্টা করা হলে, স্ত্রীর সম্পত্তি হস্তান্তর করে দিলে বা সম্পত্তিতে বৈধ অধিকার প্রয়োগ থেকে তাঁকে নিবারণ করলে প্রভৃতি এবং
 মুসলিম আইনে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য বৈধ বলে স্বীকৃত অন্য যেকোনো কারণে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের দাবি করতে পারেন।

জেনে রাখুন
বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটি পূর্ণ করা হয়েছে কি না, তা মেয়ের অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সময় পাত্রপক্ষের প্ররোচনায় কাজিরা কলামটি পূরণ করতে অবহেলা করেন। যেভাবেই বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক ঘটুক না কেন, তালাকের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বামীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা মিউনিসিপ্যালিটির বা সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে নোটিশ লিখিতভাবে পাঠাতে হবে। তবে আদালতের মাধ্যমে কোনো বিবাহবিচ্ছেদের মামলার ডিক্রি হলে সেই ডিক্রির কপি চেয়ারম্যানকে প্রদান করলেই হবে। স্ত্রী তালাক দিলেও মোহরানার টাকা তাঁকে দিতে হবে এবং তালাক কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণ করতে হবে।

খোলা তালাক
মুসলিম আইনে স্ত্রীর ইচ্ছায় বিবাহবিচ্ছেদের আরেকটি ব্যবস্থা হচ্ছে খোলা তালাক। এ তালাক এমন একধরনের তালাক, যা স্বামী-স্ত্রীর সম্মতিতে কার্যকর হয়। খোলা তালাক পারস্পরিক চুক্তি দ্বারা অথবা কাজি বা আদালতের নির্দেশে হতে পারে। এ তালাকের উল্লেখযোগ্য দিক হলো—
 স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে থাকেন;
 স্বামী ওই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে থাকেন;
 স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সময় স্বামী বিনিময়ে স্ত্রীর কাছ থেকে প্রতিদান নিয়ে থাকেন এবং স্ত্রী তা দিয়ে থাকেন বা দিতে সম্মত হন। তবে খোলা তালাকের ক্ষেত্রে অন্য কোনো চুক্তি না থাকলে স্ত্রী মোহরানা পাওয়ার অধিকারী হবেন না; কিন্তু ইদ্দত পালনকালে স্ত্রী তাঁর গর্ভের সন্তানের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন।
 লেখক: আইনজীবী

৫৬ বছর পর শ্বশুরবাড়িতে প্রণব তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে

নড়াইল থেকে: দিল্লি থেকে ঢাকা। তারপর শ্বশুরবাড়ি নড়াইলের ভদ্রবিলা। নিরাপত্তায় নেয়া হয় বাড়তি ব্যবস্থা। জলপানের নানা আয়োজন। জামাইবাবু যে ভারত অধিপতি। ভদ্রবিলার গৌরব আর অহঙ্কার। শ্বশুরবাড়ি বসে তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে। তারপর স্বাদ নিলেন কুলের। শ্বশুর পক্ষের লোকজন তাকে আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূলসহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ডাবের জল এবং কুল বরই ছাড়া আর খিছু খাননি। কুল খেতে খেতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলাপচরিতায় মেতে উঠেন। প্রথমেই শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক মন্দিরে পূজা দেন। এরপর ওই বাড়িতে তৈরি করা মঞ্চে উঠে আত্মীয়দের উদ্দেশে কথা বলেন। প্রেসিডেন্টের আত্মীয়-স্বজনরা জানায়, প্রণব মুখার্জি নড়াইল সদর উপজেলার চাঁচড়া গ্রামে মামা শ্বশুরবাড়ি একটি মন্দির করে দেয়ার ঘোষণা দেন। শ্বশুরবাড়ির মন্দিরে পূজা-অর্চনাসহ শ্বশুরকুলের স্বজনদের সঙ্গে একান্তে ৫০ মিনিট সময় কাটান প্রণব ও তার স্ত্রী শুভ্রা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা ফারুকী মোহাম্মদ, ডিসি জহুরুল হক, জেলা পরিষদ প্রশাসক এডভোকেট সুবাস বোসসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। বিয়ের ৫৬ বছর পর এ প্রথমবারের মতো তিনি গতকাল সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি বেড়িয়ে গেলেন। সঙ্গে তাদের পালিত কন্যাও ছিল। এতকাল পরে জামাইবাবু ও বোন শুভ্রা মুখার্জিকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত ছোটভাই কানাইলাল আনন্দ অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। জামাইবাবু প্রণব মুখার্জি ও বোন শুভ্রা মুখার্জি কানাইলালকে সান্ত্বনা দেন। তারা জানিয়েছেন সময় কম তাই বেশি সময় থাকা যাচ্ছে না। তবে ভাগ্যে থাকলে আবার দেখা হবে এমনটাই জানিয়েছেন। কানাইলাল তাদের রিসিভশন জানানোর জন্য সকাল থেকে প্রস্তুতি নিয়ে অধির আগ্রহে বাড়িতেই ছিলেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক হেলিকপ্টারযোগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। ডিসি জহুরুল হক তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য এস কে আবু বাকের, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা রহমান ও ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী ও পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম। প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক সেখান থেকে সড়ক পথে শ্বশুরালয়ে যান। অন্য একটি হেলিকপ্টারে ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি (ডেলিগেট) দল নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম হলিপ্যাডে অবতরণ করেন। বেলা  ১১টা ২৭ মিনিটে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান বিশাল গাড়িবহর নিয়ে। গাড়ি বহরে এসএসএফ, দেশীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি, ডিসি-এসপির গাড়ি, প্রটোকলের গাড়িসহ মোট ৩২টি গাড়ি ছিল। হু হু করে সাইরেন বাজিয়ে নড়াইলের এস এম সুলতান চিত্রা সেতু পার হয়ে গাড়িগুলো চলে যায় ভদ্রবিলা গ্রামে। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিল হাজারো কৌতূহলি মানুষ ভারতের প্রেসিডেন্টকে এক নজর দেখার জন্য। কিন্তু সে সুযোগ কারও ভাগ্যে জোটেনি। তিনি যে গাড়িতে ছিলেন। গাড়িটি ছিল কালো রঙের। গ্লাসের রং ছিল কালো। বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা দেখে সাধারণ মানুষ অনুমান করেন এ গাড়িতে প্রেসিডেন্ট আছেন। প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার নড়াইলে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে নড়াইলের প্রধান প্রধান সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হেলিকপ্টারে উঠার পর আবার যান চলাচল শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বেলা ১২টায় ভদ্রবিলা শ্বশুরবাড়ি হতে বের হন। সড়ক পথে সোজা চলে আসেন হেলিকপ্টারের কাছে। ১২টা ৪৩ মিনিটের সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি কুষ্টিয়ার শিলাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে আকাশে উড়ে। প্রেসিডেন্ট ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের সফরে সার্বিক ব্যববস্থাপনায় ছিল জেলা প্রশাসন। তাদের নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্বে ছিল এসএসএফ। হরতালসহ বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বিষয় মাথায় রেখে মোতায়েন করা হয় দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিপুলসংখ্যক সদস্য, ডগ স্কোয়াড ও নৌ ডুবুরি। সুদীর্ঘ বিবাহিত জীবনে এ প্রথম সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে পদচিহ্ন দিলেন বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান।
৩ দিনের সফর শেষে ফিরে গেলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট
কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফিরে গেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। সফরের তৃতীয় ও শেষ দিনে রাজধানী ঢাকা, নড়াইলের শ্বশুরালয়, কুষ্টিয়ায় কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ী ও টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস-এ ব্যস্ত সময় কাটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান। রোববার দুপুরে ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশের মেয়ে শুভ্রা মুখার্জিসহ ৯০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে আসা বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী প্রণব মুখার্জি এখানে অবস্থানকালে প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এছাড়া, জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ এডভোকেট, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ডা. দীপু মনি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান এবং সপরিবারে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি দেয়া হয়। তিনি সমাবর্তন বক্তা হিসেবে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতাও করেন। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে তার হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি তাদের সম্মানে আয়োজিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগ দেন। তিনি ঢাকাস্থ ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। ঢাকায় শত ব্যস্ততার মাঝেও ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ড. কামাল হোসেনের মতো সুহৃদের খোঁজখবর নিতে ভুলেননি প্রণব মুখার্জি। সফরকালে ভারতীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের কথা থাকলেও পরে তার দলের তরফে তা বাতিল করা হয়।
ঢাকায় রেল ইঞ্জিন উদ্বোধন: রেলওয়ের উন্নয়নে ভারত থেকে আমদানি করা ইঞ্জিন আর ট্যাংক ওয়াগন উদ্বোধন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। গতকাল দিনের শুরুতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট  রেলস্টেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট তা উদ্বোধন করেন। এ সময় তারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সবুজ পতাকা নাড়ার পর ২০টি ট্যাংক ওয়াগন ও একটি ব্রেকভ্যান সংযুক্ত ব্রডগেজ ইঞ্জিন চালু হয়। স্টেশনে উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের ইঞ্জিন ও ওয়াগনগুলো আমদানির বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে ১০০  কোটি ডলারের ঋণচুক্তির আওতায়  রেলওয়েতে ৭৩ কোটি ডলারের ১৪টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৬৩ কোটি ডলারের ১১টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ  রেলওয়ে ভারতের কাছ থেকে ২৬টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন, ১৫৬টি ব্রডগেজ ট্যাংক ওয়াগন ও ৬টি ব্রেকভ্যান কিনছে। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল  থেকে ইঞ্জিনগুলো আসা শুরু হবে। তবে ভারতের প্রেসিডেন্টের সফর উপলক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বুধবার ২টি লোকোমোটিভ আসে। বর্ণাঢ্য এ উদ্বোধনীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রেলমন্ত্রী  মো. মুজিবুল হক, ডাক ও  টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ  রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tuesday, March 5, 2013

জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি করে তা কেন্দ্রে পাঠাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ও যুব সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুব সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে হরতালবিরোধী সমাবেশে তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ করতে হবে।”

প্রণবের হোটেলের বাইরে বিস্ফোরণ

সোমবার দুপুর দুটো৷হঠাত্‍ই বিস্ফোরণ ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে৷ মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ কারণ এই হোটেলেই উঠেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর  দুটো নাগাদ সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অটোয় চড়ে এসে দুই যুবক হাতবোমা ছুড়ে পালায়৷এর কিছুক্ষণ আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফেরেন রাষ্ট্রপতি৷ তারপরই এই বিস্ফোরণের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ যদিও, বোমটি অত্যন্ত কম শক্তিশালী ছিল বলে জানিয়েছে ঢাকা পুলিশ৷ তবে, বিস্ফোরণ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতির পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না বলে বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে৷< > রাজাকারদের ফাঁসির দাবি ও মৌলবাদীদের পাল্টা প্রতিবাদে  বাংলাদেশে এখন অগ্নিগর্ভ অবস্থা৷ এই অবস্থায় বাংলাদেশ সফরে গিয়ে, সেদেশের গণতন্ত্রের উপর আস্থা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি৷ একইসঙ্গে, নাম না করে মৌলবাদীদের হিংসাত্মক আন্দোলনকেও যে তিনি সমর্থন করেন না তা বুঝিয়ে দেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রপতির হোটেলের সামনে এই বিস্ফোরণের ঘটনা রীতিমত চিন্তা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসনের৷ মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন রাষ্ট্রপতি৷ এরপর যাবেন নরাইলে৷ রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে৷
 তিনদিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ঢাকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতির৷ এদিকে, হরতালের দোহাই দিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক এড়ালেন বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়া৷ খালেদার আচরণে ক্ষুব্ধ ভারত৷ শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে ভারতের অবস্থানে অসন্তুষ্ট হয়েই কি খালেদার এই আচরণ? কূটনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন৷

Monday, March 4, 2013

দুটি ট্যাবলেট পিসি আনছে স্যামসাং

ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনায় টাচ স্ক্রিনের দুটি অত্যাধুনিক ট্যাবলেট পিসি বাজারে ছাড়ছে স্যামসাং। 'সিরিজ ৭ ক্রোনোস' ও 'সিরিজ ৭ আল্ট্রা' নামের এ দুটি ট্যাবলেটে টাচ ছাড়াও থাকছে পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে, উইন্ডোজ-৮ সহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা। ট্যাবলেট পিসির পাশাপাশি অফিসে সার্বক্ষণিক ব্যবহারে জন্য একটি টাচ মনিটর বাজারে ছাড়ছে কম্পানিটি। দেখতে সাধারণ এলসিডি মনিটরের মতো হলেও 'সিরিজ ৭ টাচ (এসসি৭৭০)'তেও থাকছে উইন্ডোস-৮। এর ফলে ক্রেতারা এখন মনিটরে আঙুলের স্পর্শ দিয়েই কম্পিউটার পরিচালনা করতে পারবে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্রেতা-পরিবেশকদের নিয়ে ভারতের হায়দরাবাদের কনভেনশন সেন্টারে দুই দিনের 'স্যামসাং ফোরাম ২০১৩' সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন কম্পানিটির দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার প্রধান বিডি পার্ক। সম্মেলনের শেষ দিনে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর পণ্যগুলো প্রদর্শন করা হয়। অত্যাধুনিক এসব ট্যাবলেট ও মনিটরের পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির টেলিভিশন, গ্যালাক্সি সিরিজের ট্যাবলেট নোটও বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে স্যামসাং। পণ্যগুলো এ বছরের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে বলে জানান স্যামসাং বাংলাদেশ প্রধান চুন স্যু মুন।
সিরিজ ৭ ক্রোনোস : কোয়াড কোর সমৃদ্ধ এটি খুবই চিকন ও পাতলা। মাত্র ২০.৯ মিলিমিটার পুরু এটি। র‌্যাম এক্সিসিলেটর থাকায় ব্যবহারসহ ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর ক্ষেত্রে ১৫০ শতাংশ বেশি গতিসুবিধা ভোগ করা যাবে। ১৫.৬ ইঞ্চির পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে ও ১০ পয়েন্ট টাচ সুবিধার কারণে কাজ ও বিনোদনের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
সিরিজ ৭ আল্ট্রা : এটি আরো পাতলা ও হালকা। এতে থাকছে ১৩.৩ ইঞ্চির পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে ও ১০ পয়েন্ট টাচ স্ক্রিন। এর ২৫৬ গিগাবাইট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
সিরিজ ৭ টাচ (এসসি ৭৭০) : নতুন এ মনিটরের মাধ্যমে স্যামসাং বিশ্বের মনিটর বাজারে শীর্ষ স্থানে পৌঁছানোর আশা করছে। এটি স্যামসাংয়ের বাজারে ছাড়া প্রথম উইন্ডোস-৮ সমৃদ্ধ ১০ পয়েন্ট মাল্টিটাচ ডিসপ্লে। মনিটরে আঙুল ব্যবহার করেই ক্রেতা যেকোনো কিছু ঘুরানো, সিলেক্ট করাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবে।
গ্যালাক্সি নোট ৫১০ : ২০১২ সালে সারা বিশ্বে মোবাইল ফোনসেটের মধ্যে গ্যালাক্সি নোটের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়েছে জানিয়ে কম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আরো আকর্ষণীয় নোট তৈরি করেছে স্যামসাং। এর মধ্যে একটি হলো গ্যালাক্সি নোট ৫১০। এটিকে যে কেউ ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি নোট, ডায়েরি ও ই-বুক রিডার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবে। এটিকে ডিজিটাল শিডিউলার ও ব্যক্তিগত ডায়েরি হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। নোটটির ধারণক্ষমতা ১৬ গিগাবাইট।
৮৫ এস ৯ টিভি : ৮৫ ইঞ্চি মনিটরের এ টেলিভিশনটি বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোর বাজারে পাওয়া যাবে আগামী মে মাসের শেষের দিকে। এ ছাড়া ৬৫ ইঞ্চির মনিটরের আরেকটি টেলিভিশনও বাজারে আসবে প্রায় একই সময়ে।
এনএক্স৩০০ : এটি একটি স্মার্ট ক্যামেরা। এতে রয়েছে এনএক্স ৪৫ মিমি এফ ১.৮ ২ডি/৩ডি লেন্স। এটি দিয়ে স্থির চিত্রের পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করা যাবে। এতে রয়েছে ২০.৩ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সিএমওএস সেন্সর। ফলে উচ্চ মানসম্পন্ন ছবি তোলা যাবে।
এ ছাড়া মিনিটে ৪০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ছাপানোর ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিন্টার, অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিন বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে কম্পানিটি।

এইচএসসি ২০১৩ প্রস্তুতি : বাংলা প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্ন একটি তুলসী গাছের কাহিনী
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বাস্তুভিটা হারিয়ে সর্বস্বান্ত ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে তারা ছুটে আসে শহরে। দু-চারজনের বস্তিতে ঠাঁই মিললেও অধিকাংশই জীবনবঞ্চনার শিকার হয়ে পথে-ঘাটে ও স্টেশনে-ফুটপাতে পড়ে থাকে। হরিদাস তাদেরই একজন। হিন্দু বলে বস্তিতেও তার ঠাঁই মেলে না। অগত্যা সে লঞ্চঘাটের একটা নির্জন স্থানে আশ্রয় পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে পায়। একটা অচেনা কষ্টকে দীর্ঘশ্বাসে দূর করতে চায় হরিদাস। কিন্তু তার চোখে কেবলই হারানো বাস্তুভিটার বেদনাময় চিত্র। এরই মধ্যে হঠাৎ পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে হরিদাস আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।
ক) কত দিনের মাথায় উদ্বাস্তু দল দখলকৃত বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছিল?
অথবা, বাড়ি ছাড়ার মেয়াদ চব্বিশ ঘণ্টা থেকে বেড়ে কত দিন হয়েছিল?
খ) 'অন্যের অপমান দেখার নেশা বড় নেশা'_কথাটির প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা দাও।
গ) নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর কী সাদৃশ্য/বৈসাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) দেশ বিভাগের ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যা ও সাম্প্রদায়িকতা উদ্দীপকে কিভাবে প্রতিফলিত/ প্রতিস্থাপিত হয়েছে? 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের সমাজবাস্তবতা আলোচনা প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : ক. দশম দিনের মাথায় উদ্বাস্তু দল দখলকৃত বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছিল।
অথবা, (উত্তর) : বাড়ি ছাড়ার মেয়াদ চব্বিশ ঘণ্টা থেকে সাত দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
খ) সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের অব্যবহিত পরই ঢাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে কলকাতা থেকে আগত কয়েকজন উদ্বাস্তু কর্মচারী।
কিন্তু ভাগ্য তাদের সুপ্রসন্ন নয়। উদ্বাস্তু দলটি বাড়ি দখল করার কয়দিনের মাথায় পুলিশ এসে জানায়, সরকারের হুকুমে তাদের এ বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। এতে বাড়ির নতুন বাসিন্দারা নানা রকম ওজর-আপত্তি তুলতে থাকে। এমতাবস্থায় আশপাশে লোকজন জড়ো হয়। নিরাশ্রিত ভাগ্যাহত ওই উদ্বাস্তু দলটির তখনকার দুর্দশাপূর্ণ পরিস্থিতিতে রাস্তায় কৌতূহলী জনতার ভিড় জমা প্রসঙ্গেই গল্পের লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। আমাদের সমাজের উৎসুক জনতার সাধারণ প্রবণতা হলো কারো কোনো অপমানজনক পরিস্থিতিতে অতিমাত্রায় কৌতূহল প্রদর্শন। লেখক সাধারণ জনতার এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোঝাতেই উক্তিটি করেছেন।
গ) সমাজসচেতন কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু জীবনের সংকট চমৎকারভাবে অঙ্কিত হয়েছে।
দেশ বিভাগের ফলে ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের কারণে আপন নিবাস খুঁজে পেতে মানুষ দেশত্যাগী হয়। আশ্রিত মানুষগুলো ঘরবাড়ি ছেড়ে অপর দেশে গিয়ে হয় অনাশ্রিত, উদ্বাস্তু। তদ্রূপ উদ্দীপকের মানুষগুলোও নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে বাস্তুভিটা হারিয়ে পরিণত হয় উদ্বাস্তুতে। এ যেন গল্পের উদ্বাস্তু সংকটের আরেক প্রতিচিত্র।
গল্পে কলকাতা থেকে আগত মতিন, মোদাব্বের ও তার সঙ্গীরা ঢাকা শহরে এসে আশ্রয়ের সন্ধানে উদয়াস্ত ঘোরাফেরা করতে থাকে। হঠাৎ একদিন তারা একটি নির্জন তালাবদ্ধ পরিত্যক্ত বাড়ি পেয়ে ন্যায়-অন্যায়ের বোধ উপেক্ষা করে হৈ-হুল্লোড় করে দখল করে নেয়। কলকাতার ঘিঞ্জি পরিবেশে জীবনযাপন আর উদ্বাস্তু জীবনের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে তারা ভাবতে থাকে, দখলকৃত বাড়িটি তাদের জন্য এক পরম নির্ভরতার আশ্রয়। উদ্বাস্তু জীবনের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা থেকে তারা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও উদ্দীপকের মানুষগুলোও বাস্তুভিটা হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে শহরে ছুটে আসে। নিঃস্ব হরিদাস তাদেরই একজন। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে শহরে এসে বস্তিতেও তার ঠাঁই মেলে না। অগত্যা সে লঞ্চঘাটে আশ্রয় নেয়। কিন্তু সে আশ্রয়ও বেশি দিন স্থায়ী হয় না। গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মতোই পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে আবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। দেশ বিভাগের কারণেই হোক আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলেই হোক তারা সবাই উদ্বাস্তু জীবনের গভীর সংকটে নিমজ্জিত। তারা বাস্তুভিটা হারিয়ে আশ্রয়হীন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। এদিক থেকে নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর সাদৃশ্য রয়েছে। বাস্তুহারা, সর্বহারা, অনাশ্রিত জীবনের এমন মানবিক বাস্তবতাই জীবনসন্ধানী লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে চিত্রিত হয়েছে।
ঘ) কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের ফলে উদ্বাস্তু মানুষের দুঃখ-জর্জরিত অনিশ্চিত জীবনের কথা নিখুঁত বর্ণনায় উপস্থাপন করেছেন।
উদ্দীপকে নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে মানুষের জীবনের যে দুর্ভোগপূর্ণ জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে তা যেন গল্পের উদ্বাস্তু সংকটের আরেক প্রতিচিত্র। গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মানবেতর জীবনযাপনের সঙ্গে উদ্দীপকের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর জীবনবঞ্চনার কোনো পার্থক্য নেই। উভয় ক্ষেত্রেই সংকটময় উদ্বাস্তু জীবনের এক করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে।
লেখক তাঁর গল্পে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্ট সামাজিক সমস্যার সামগ্রিক চিত্রটি তুলে ধরেছেন। দেশ ভাগের পেছনে সক্রিয় ছিল জটিল রাজনীতি। এতে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যাটিই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়; কিন্তু এর পেছনে সাম্প্রদায়িক সংকট প্রকটরূপে বিদ্যমান ছিল। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, অনেক মানুষের স্বদেশভূমি ত্যাগ, উদ্বাস্তুদের আগমনে সমাজজীবন ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। পূর্ব বাংলা থেকে হিন্দুরা চলে যায় পশ্চিম বাংলায়। পশ্চিম বাংলা থেকে মুসলমানরা চলে আসে পূর্ব বাংলায়। দেশত্যাগী হয়ে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই হারায় বাস্তুভিটা। ফলে তাদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দশা। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্নে মাথা গোঁজার একটু নিরাপদ আশ্রয়ের প্রত্যাশায় এসব মানুষের মধ্যে দেখা যায় নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। সামাজিক অস্থিরতার ডামাডোলে জবরদখল, লুটতরাজ স্বাভাবিক মনে হয়। অবৈধ দখলের মাধ্যমে কেউ কেউ আশ্রয় জোটাতে পারলেও জীবনের নিরাপত্তা, সংশয়ের মধ্যেই থেকে যায়।
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও উদ্দীপকে আমরা অনুরূপ চিত্রই প্রতিফলিত হতে দেখি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোও বসতবাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে তারা ছুটে আসে শহরে। ভাগ্যগুণে গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মতো পরিত্যক্ত বাড়ি পাওয়ার মতোই নদীভাঙা মানুষগুলোর দু-চারজনের ঠাঁই মেলে বস্তিতে। গল্পের উদ্বাস্তুদের মতো অনেককেই জীবন বঞ্চনার শিকার হয়ে পথেঘাটে, স্টেশনে-ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হরিদাস তাদেরই একজন। গল্পে কলকাতা থেকে আগত মতিন, মোদাব্বেরসহ তাদের সঙ্গীরা ঢাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে নিলেও উদ্দীপকের হরিদাসের কপালে বস্তিও জোটে না। 'হিন্দুয়ানির চিহ্ন' তুলসী গাছটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেলেও হিন্দু বলে হরিদাসের বস্তিতেও ঠাঁই মেলে না। পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে তার জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আর এই উদ্বাস্তু জীবনের দুর্ভোগ-দুর্দশার বেদনাময় চিত্রটিই লেখক 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে তুলে ধরেছেন।

শহিদুল ইসলাম
প্রভাষক
ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ
খিলগাঁও, ঢাকা

এইচআইভির চিকিত্সায় সাফল্য

এইচআইভি ভাইরাস শরীরে নিয়ে জন্ম নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি শিশুর সেরে ওঠার লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাঁরা বিশেষ ধরনের একটি ওষুধ প্রয়োগ করে এ সাফল্য পেয়েছেন।
গবেষকেরা আশা করছেন, বিশেষ ধরনের এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি সফল হলে শিশুদের এইচআইভি সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
তাঁরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঞ্চলের মফস্বলের একটি হাসপাতালে শরীরে এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে জন্ম হয়েছিল মেয়েশিশুটির। শিশুটির বয়স যখন এক বছর পূর্ণ হয়, তখন থেকেই তাকে চিকিত্সা দেওয়া শুরু হয়েছিল। এখন তার বয়স আড়াই বছর। গত এক বছরে শিশুটির শরীরে এইচআইভি-সংক্রান্ত কোনো জটিলতা দেখতে পাননি গবেষকেরা। তাঁরা অবশ্য আরও পর্যবেক্ষণ করবেন এবং এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি নিয়ে পরীক্ষা চালাবেন বলেই জানিয়েছেন।
গবেষকদের ভাষ্য, মেয়েটি যদি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে, তবে এইচআইভি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঘটনা হবে এটি। ২০০৭ সালে টিমোথি রে ব্রাউন নামে একজন ব্যক্তি এইচআইভি থেকে রক্ষা পান।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেবোরাহ পারসুদ আটলান্টায় অনুষ্ঠিত রেট্রোভাইরাসেস অ্যান্ড অপরচুনিস্টিক ইনফেকশনস নামক এক সম্মেলনে এ সাফল্যের কথা জানান।
গবেষক পারসুদ জানিয়েছেন, শিশুদের এইচআইভি নিরাময়যোগ্য হতে পারে—এ পরীক্ষা তা প্রমাণ করেছে। যে শিশুটিকে নিয়ে এ পরীক্ষা করা হয়েছে তার ক্ষেত্রে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল সর্বোচ্চ। গবেষকেরা মেয়েটির চিকিত্সায় দ্রুততম সময়ে এ ওষুধ প্রয়োগ করেন।