Sunday, February 24, 2013

নারী বেশি কথা বলে কেন?

নারীর মস্তিষ্কে বিশেষ ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোটিন’ বেশি পরিমাণে থাকে। এ জন্য তারা পুরুষের তুলনায় বেশি কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীর মস্তিষ্কে ফক্সপিটু নামের ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোটিন’ বেশি থাকে। নারীরা প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার শব্দ উচ্চারণ করে। এ সংখ্যা পুরুষের তুলনায় অন্তত ১৩ হাজার বেশি।
সংশ্লিষ্ট গবেষক মার্গারেট ম্যাককার্থি বলেন, বিশেষ প্রোটিনের উপস্থিতির কারণে প্রাণীর লৈঙ্গিক পার্থক্যবিষয়ক গবেষণা এটিই প্রথম। এতে নারী-পুরুষের মস্তিষ্ক ও আচরণগত ব্যবধানের বিষয়টি আগের তুলনায় স্পষ্ট হয়েছে। পর্যবেক্ষণে নারীর মস্তিষ্কে ফক্সপিটুর অধিক মাত্রা এবং প্রভাব প্রমাণিত হয়েছে। স্নায়ুজীববিদ্যার ভিত্তিতে স্তন্যপায়ী প্রাণীর কথা বলার ধরন বিবেচনায় এই গবেষণার ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে। টেলিগ্রাফ।

বখাটের হাতে প্রাণ গেল ছাত্রীর?

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় হালিমা আক্তার নামের একটি মেয়েকে এক বখাটে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের মানিকরাজ গ্রামে গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। নিহত হালিমা স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রের বিবরণ অনুযায়ী, মানিকরাজ গ্রামের হালিমাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন পাশের বাড়ির মহসিন মিঝি। মহসিনের অশোভন প্রস্তাবে হালিমা সাড়া না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হন। ওই দিন বিকেলে হালিমাকে বাড়ির পাশে একা পেয়ে বেদম মারধর করে রাস্তায় পাশে ফেলে রাখেন মহসিন। খবর পেয়ে হালিমার আত্মীয়স্বজন তাকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে হালিমা মারা যায়। 
হালিমার ভাই দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘পাশের বাড়ির বখাটে মহসিনের অশোভন প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মহসিন আমার বোনকে বেদম মারধর করেন। এ ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয় মহসিনের পক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শুক্রবার রাতে হালিমার লাশ উদ্ধার করে।’
ঘটনার পর থেকে মহসিন পলাতক রয়েছেন। তাই চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Saturday, February 23, 2013

অশ্বিনের ঘূর্ণি আর ক্লার্কের বীরত্ব

'প্রিয়' মাঠে 'প্রিয়' প্রতিপক্ষ! ১০০তম টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়া। মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল তাঁর জন্য। তবে ফেরাটা রাঙিয়ে নিতে পারেননি হরভজন সিং। কিন্তু সেসব রোমাঞ্চও উজ্জীবিত করতে পারেনি 'ভাজ্জি'কে। চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনটা কেটেছে তাঁর একেবারে সাদামাটা, উইকেট পাননি একটাও। হরভজনের 'সেঞ্চুরি'র ম্যাচের প্রথম দিনের আলোটা কেড়ে নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মাইকেল ক্লার্ক। ঘূর্ণি বলের অনুপম প্রদর্শনীতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে ৮৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। অশ্বিনের স্পিন ভেল্কির জবাবে হার না মানা ঝকঝকে অপরাজিত সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে সমান্তরালেই রেখেছেন ক্লার্ক। পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার হেনরিকস মোয়েজেসও বিখ্যাত ব্যাগি গ্রিন মাথায় পরে প্রথম দিনেই রেখেছেন নিজ প্রতিভার স্বাক্ষর। ক্লার্কের সেঞ্চুরি ও মোয়েজেসের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৭ উইকেটে ৩১৬ রান করে দিনের খেলা শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া।
আরেকবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলটে টেনে নিতে পারায় উচ্ছ্বসিত হওয়ারই কথা ক্লার্কের। রিকি পন্টিংয়ের হাত থেকে অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাঁর ব্যাটে রীতিমতো রূপকথার ফর্ম। চেন্নাইয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক স্কোর গড়ার পথে মোট টেস্ট রানে ছাড়িয়ে গেছেন কিংবদন্তি স্যার ডন ব্রাডম্যানকে। অশ্বিনের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে ১৫৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও এভাবে দিনটা শেষ করতে পেরে খুশিই থাকার কথা ক্লার্কের! হেনরিকসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটেও ঠিক ১৫৩ রান যোগ করেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
দিনটা অন্য রকম হতে পারত ভারতেরও। অশ্বিন ছাড়া ক্লার্ক বাহিনীর ওপর ছড়ি ঘোরাতে পারেনি তাদের আর কোনো বোলারই। রঙির পোশাকে দ্যুতি ছড়ালেও সাদা জার্সি গায়ে দিয়েই যেন ছন্দটা হারিয়ে ফেলেন ভুবনেশ্বর কুমার। নতুন বলে ধার ছিল না ইশান্ত শর্মার বোলিংয়েও। দুই স্পিনার হরভজন ও রবীন্দ্র জাদেজাও ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। কাজের কাজ যা করেছেন ওই অশ্বিনই, অস্ট্রেলিয়ার হারানো সাতটি উইকেটের ছয়টিই তামিলনাড়ুর এই ছেলের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েও অস্ট্রেলিয়ার রানের গতিটাও তাই সচল ছিল সব সময়। ওয়ানডে স্টাইলে শুরুটা করেছিলেন এড কাওয়ান ও ডেভিড ওয়ার্নার। অশ্বিন আক্রমণে এসেই ৮ রানের মধ্যে তুলে নেন কাওয়ান ও হিউজেসকে। স্লিপে ১৮ রানের সময় বীরেন্দর শেবাগের হাতে জীবন পাওয়া ওয়ার্নারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শেন ওয়াটসন। জোড়া উইকেট হারানোর পরও রানের গতি ধরে রেখে লাঞ্চের আগের সময়টা নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেন তাঁরা, ২ উইকেটে ১২৬ রানে লাঞ্চে যায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের বিরতি ছন্দপতন ঘটায় তাঁদের খেলায়! বিরতির পর খেলা শুরু হলে স্কোরবোর্ডে আর কোনো রান যোগ না করেই সাজঘরে ফেরে ওয়াটসন, ৫ রান পরে তাঁকে অনুসরণ করেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান ওয়ার্নারও। অশ্বিনের স্পিনের বিপক্ষে বেশিক্ষণ টিককে পারেননি ম্যাথু ওয়েডও। দারুণ শুরুর পরও হতাশার সাগরে তলিয়ে যেতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। অভিষিক্ত হেনরিকসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ১৫০ রানের বেশি পার্টনারশিপ গড়ে ওই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তুলেছেন ওই ক্লার্কই। ক্রিকইনফো
সংক্ষিপ্ত স্কোর : অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ৩১৬/৭ (কাওয়ান ২৯, ওয়ার্নার, ৫৯, হিউজ ৬, ওয়াটসন ২৮, ক্লার্ক ১০৩*, ওয়েড ১২, হেনরিকস ৬৮, স্টার্ক ৩, সিডল ১*; অশ্বিন ৬/৮৮, জাদেজা ১/৫৬)।

জায়নামাজে আগুন, টাইলস ভাঙচুর

জুমার নামাজ আদায় শেষ না করেই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ভেতরে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির ও তাদের সমর্থক ১২ দলের নেতা-কর্মীরা। মসজিদের ভেতরে জায়নামাজে (কার্পেট আকারে বিছানো) এবং সংরক্ষিত ধর্মীয় গ্রন্থে আগুন দিয়েছে তারা। মসজিদের টাইলস ও আসবাবপত্র ভেঙে পুলিশের দিকে ছুড়ে মেরেছে। শাহবাগের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিজেদের পছন্দমতো ফতোয়া দেওয়ার জন্য খতিবের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এতে কাজ না হওয়ায় মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্লোগান দিয়েছে। এ কারণে সাধারণ মুসল্লিরাও ঠিকমতো জুমার নামাজ আদায় করতে পারেনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের সুযোগ নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে জড়ো হয় ১২ দলের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের লোকজন। তাদের টার্গেট ছিল বিশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগ দখল করা। এ কারণে সাধারণ মুসল্লির চেয়ে গতকাল বায়তুল মোকাররমে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদেরই উপস্থিতি ছিল বেশি। নামাজের আগে থেকেই মসজিদের ভেতরে তারা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। প্রজন্ম চত্বরের তরুণদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দেওয়ার দাবিতে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া শুরু হলে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় মসজিদের ভেতরে। এক পর্যায়ে তারা মসজিদের জায়নামাজ ও ইসলামী গ্রন্থে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা কোনোমতে নামাজ আদায় করে মসজিদ ত্যাগ করে।
আব্দুর রহমান ও মজিবুর রহমান নামের দুজন মুসল্লি কালের কণ্ঠকে জানান, জুমার নামাজ আদায় করার জন্য তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদে আসেন। এ সময় গেটে তাঁদের তল্লাশি করে পুলিশ। ভেতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, মসজিদে জামায়াত-শিবির ও তাদের সমর্থকরা খুবই তৎপর। সংঘর্ষকারীরা নামাজ না পড়েই নানা ধরনের অপতৎপরতা শুরু করে। তারা খতিবকে দিয়ে প্রজন্ম চত্বরের সমাবেশের ব্লগারদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে। এতে খতিব রাজি না হলে হট্টগোল শুরু করে তারা। এক পর্যায়ে মসজিদের ভেতরেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, গতকাল সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রীয় মসজিদের চারদিকে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারি ছিল। তল্লাশি করেই মুসল্লিদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই মসজিদের ভেতরে হট্টগোল শোনা যায়। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, মসজিদের ভেতরে আগুন দিয়েছে কিছু লোকজন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার নাজমুল আলম বলেন, গতকাল সকাল থেকে মসজিদের ভেতরে জামায়াত-শিবির ও তাদের সমর্থক ১২ দলের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধসহ শাহবাগের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসব কর্মকাণ্ড সাধারণ মুসল্লি ও মসজিদের খতিবসহ অন্যরা মেনে না নেওয়ায় তারা মসজিদেই আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং মসজিদে দাঁড়িয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের গালাগাল দেওয়া শুরু করে। মসজিদের দামি টাইলস ভেঙে তারা পুলিশকে ছুড়ে মারে।

নারীবেষ্টিত গাদ্দাফি

উদ্ভট তথ্য এবং তত্ত্বের উদ্ভাবক ছিলেন লিবিয়ার চার দশকেরও বেশি সময়ের শাসক কর্নেল গাদ্দাফি। পোশাকের ক্ষেত্রে তার রুচি ছিল বিচিত্র। সবসময় থাকত একদল নারী দেহরক্ষীর নিরাপত্তায়। নিজেকে তিনি অভিহিত করতেন আরব নেতাদের নেতা, আফ্রিকার রাজাদের রাজা এবং মুসলমানদের ইমাম বলে। তার প্রতাপ ও দাপটে আফ্রিকার অনেক রাষ্ট্রপ্রধান কাঁপতেন। বৈচিত্র্যে ভরা ছিল তার জীবন। তরুণ সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পশ্চিমা সমর্থিত রাজা প্রথম ইদ্রিসকে হটিয়ে ১৯৬৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ক্ষমতা দখল করেন গাদ্দাফি। জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রের ধুয়া তোলে তরুণ গাদ্দাফি নিজেকে দ্রুতই প্রতিষ্ঠা করেন এক বিপ্লবী, অভাবনীয় এবং বর্ণাঢ্য নেতা হিসেবে। নিজেকে মিসরের প্রেসিডেন্ট এবং আরব জাতীয়তাবাদের নেতা গামাল আবদেল নাসেরের অনুসারী হিসেবে প্রচার করেন। প্রচার করেন নিজের ক্ষমতা ও শক্তি। কখনো তিনি নিজেকে দাবি করতেন মাও সে তুং, স্টালিন কিংবা হিটলারের ভক্ত বলে। ১৯৪২ সালে সারতের কাছাকাছি এক মরুভূমিতে বেদুইন তাঁবুতে জন্ম গাদ্দাফির। পশ্চিমারা আরবের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধে লিপ্ত এমন কথা বলে ক্ষমতা গ্রহণের কিছুদিনের মধ্যেই পশ্চিমাদের খেপিয়ে তোলেন তিনি। গাদ্দাফির নেতৃত্বে লিবিয়া আন্তর্জাতিকভাবে প্রথম একঘরে হয় ১৯৮৮ সালে স্কটল্যান্ডের লকারবির আকাশে আমেরিকার বিমানে হামলার পর। দীর্ঘদিন পশ্চিমা অবরোধে থাকার পর ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হওয়ায় অবশেষে ২০০৩ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো হয়। এরপর থেকে নতুনভাবে শুরু করেন রাজনৈতিক মিশন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে গাদ্দাফি আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় আরবের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার সাধনায় লিপ্ত হন তিনি। যে ইসলামকে ভিত্তি করে তিনি তার মসনদ ধরে রেখেছিলেন সেই ইসলামেরই ধ্বজাধারী আরেক গোষ্ঠী তালেবানকে তিনি বিক্ষোভের মদদদানের অভিযোগ তোলেন। সামনা-সামনি তাকে দেখলে যে কেউ চমকে উঠত। প্রায়ই রংচঙে ঢিলেঢালা পোশাক পরতেন তিনি। আমাজনিয়ান স্টাইলে সজ্জিত উচ্চপর্যায়ের দেহরক্ষী পরিবেষ্টিত থাকতেন। যখন উর্দি পড়তেন তখন তার জামা, কাঁধ ও টুপি থাকত সোনালি সুতায় কাজ করা এবং মেডেলে সজ্জিত। সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ব্রিটেন থেকে। লিখেছিলেন 'গ্রিন বুক' নামের একটি বই। তবে গাদ্দাফি সবসময় ভালোবাসতেন নারীসঙ্গ। তার পাগলামির আরেক নিদর্শন ছিল ঐতিহ্যবাহী বেদুইন তাঁবু। রাষ্ট্রীয় অতিথিদের তাঁবুর নিচেই আপ্যায়িত করতে পছন্দ করতেন তিনি। এমনকি বিদেশ সফরেও বাদ যেত না তাঁবু ও নারী। ২০০৭ সালে

প্যারিস সফরে সঙ্গে নিয়ে যান তাঁবু। সেই সঙ্গে নারী দেহরক্ষীর এক বিশাল বহর। সেখানের সরকারি অতিথি ভবনের বাগানে টানানো হয় তার ২০০ বর্গফুটের তাঁবুটি। ২০০৯ সালে ইতালি সফরে গিয়ে সৃষ্টি করেন এক বিতর্ক। তিনি বলেন, 'ইউরোপের সবার ধর্ম হওয়া উচিত ইসলাম।' ২০০৫ সালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ কয়েকজন আরব নেতা ও ফিলিস্তিনিদের তিনি 'ইডিয়ট' বলে সম্বোধন করেন। প্রয়াত সৌদি বাদশাহ ফাহাদের মুখের ওপর একবার সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়েছিলেন তিনি। গাদ্দাফি হাতে সাদা গ্লাভস পরতেন যাতে 'জনগণের রক্তরঞ্জিত কয়েকজন

আরব নেতার হাত তাকে স্পর্শ করতে না হয়।' অথচ জনগণের রক্তে নিজের হাতই রঞ্জিত করেছেন তিনি। এসব উদ্ভট তথ্য ও উপাত্তের উদ্ভাবক হিসেবে সবসময়ই ইতিহাসের পাতায় জায়গা পাবেন গাদ্দাফি।

বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে : ক্রাউলি

মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার যোসেফ ক্রাউলি বলেছেন, সবার দৃষ্টিই এখন বাংলাদেশের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনসহ সারা বিশ্ব বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ২১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ এশিয়ানদের এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। খবর এনার। কংগ্রেসম্যান ক্রাউলি মনে করেন, নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হওয়া দরকার। পারস্পরিক সম্পর্ক সুসংহত হলে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সুফলও দ্রুত আসবে। ক্রাউলি বলেন, 'বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই দলের সমঝোতা প্রয়োজন। গণতন্ত্রের স্বার্থে দুই পক্ষকেই নমনীয় হতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'জিএসপি সুবিধা যাতে অব্যাহত থাকে, সে চেষ্টা আমার রয়েছে। তবে শুল্কমুক্তভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ব্যাপারে তেমন কোনো তদবির পরিলক্ষিত হচ্ছে না।'

এক বক্তৃতায় দেড় কোটি টাকা

প্রতিটি বক্তৃতার জন্য সম্মানী হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় কোটি টাকা দেওয়া হবে হিলারি ক্লিনটনকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি যে বেতন পেতেন তার চেয়েও বেশি পাবেন এখন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে যারা সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়ে থাকেন, তাদের তালিকায় নাম লেখালেন তিনি। এজেন্সি 'হ্যারি ওয়াকার' তার প্রতিনিধিত্ব করবে। এ সংগঠনটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও হিলারির স্বামী বিল ক্লিনটনেরও প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।

ব্রিটেনের বেশির ভাগ মানুষ গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে না

সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটেনের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের দেশটির সংবাদ মাধ্যমের প্রতি কোনো আস্থা নেই। সেখানকার সাধারণ মানুষ মনে করেন, সংবাদ মাধ্যমগুলো সত্য খবর প্রকাশের চেয়ে মুনাফা অর্জনকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।আইপিএসওএস/এমওআরআই সমগ্র ব্রিটেনে এ জরিপ চালিয়েছে এবং এতে ১০১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্রিটিশ নাগরিক অংশগ্রহণ করেছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ২১ শতাংশ বলেছেন, তারা ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের সত্যনিষ্ঠ বলে মনে করেন।

Friday, February 22, 2013

রাজধানীতে অশ্লীল ছবি ও পোস্টার

রাজধানীর গুলিস্তান শপিং কমপ্লেঙ্ থেকে বুধবার রাতে বিপুল পরিমাণ অশ্লীল ছবির রিল, পোস্টার, ফটোসেটসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তারা হলেন সাজ্জাদ হোসেন, ইকবাল হোসেন মিলন, আবু তাহের, সুরুজ সরদার, শাজাহান ও বিশ্বনাথ সাহা। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় মামলা হয়েছে। র্যাব-৩ এর কমান্ডার অতিরিক্ত ডিআইজি মলি্লক ফখরুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে গুলিস্তান শপিং কমপ্লেঙ্রে ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিভিন্ন ছায়াছবির অশ্লীল দৃশ্য সংবলিত ২৫১ ক্যান রিল, ১০ হাজার পোস্টার, ৪০০টি ফটোসেট উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ক্যাপ্টেন এনামুল হকের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে বলে জানান তিনি।

বইমেলায়ও জনস্রোত

একুশের চেতনায় প্রাণের বইমেলা গতকাল তার চিরাচরিত রূপ ফিরে পায়। মাতৃভাষার চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে মেলায় আসেন অগণিত আবালবৃদ্ধবনিতা। রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, আ ম রি বাংলা ভাষাসহ নানা ধরনের স্লোগানে অঙ্কিত লাল-সবুজের পোশাক আর আলপনায় গোটা মেলা প্রাঙ্গণে ছিল একুশের আবহ। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে এবারের মেলায় একাত্তরের চেতনাও প্রতিফলিত হয়েছে। সকালে শহীদ মিনার থেকেই জনস্রোত নেমেছিল মেলা প্রাঙ্গণে। সারিবদ্ধ হয়ে মেলায় ঢুকার পাশাপাশি স্টলগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। শহীদ মিনারের বেদিতে শহীদদের পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন শেষে অনেকেই ছুটে আসেন বইমেলায়। সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ছিল বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। বিক্রি বাড়ায় প্রকাশকদের মুখে ছিল হাসি। তবে বরাবরের মতো এবারও নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের বই বেশি বিক্রি হয়েছে। অন্যপ্রকাশের স্টলে হুমায়ূন আহমেদের 'দেয়াল' কিনতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।

২৩৪৭ নতুন বই : প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২১ দিনে মেলায় ২৩৪৭টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। গতবার এ সময়ে প্রকাশ হয়েছিল ২৭৯২টি। সে হিসাবে গতবারের তুলনায় এবার ৪৪৫টি বই কম প্রকাশ হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে ২২৭৩টি, ২০১০ সালে ২৬৩০টি, ২০০৯ সালে ২১৯৭টি, ২০০৮ সালে ১৯৫৫টি, ২০০৭ সালে ১৪৬৪টি ও ২০০৬ সালে ১৬৬০টি প্রকাশ হয়। এ বছর প্রকাশের দিক থেকে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে কবিতার বই (৫৭৫টি)। এ ছাড়া গল্প ৩০৮, উপন্যাস ৪২৪, প্রবন্ধ ১৫৯, গবেষণা ৩২, ছড়া ৭৩, শিশুসাহিত্য ৮২, জীবনী/ স্মৃতিচারণ ৭৩, রচনাবলি ১, ভাষা আন্দোলন/ মুক্তিযুদ্ধ ৪৭, নাটক ১৪, গণিত/ বিজ্ঞান ৪২, ভ্রমণ ৪১, ইতিহাস ৩২, রাজনীতি ১৬, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ২১, কম্পিউটার ২, রম্য/ ধাঁধা ৪৯, ধর্মীয় ১৭, অনুবাদ ২৭, অভিধান ১, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ও গোয়েন্দা ১৯ এবং অন্যান্য বিষরের ওপর ২৮৭টি বই।

গতকাল নজরুল মঞ্চে ১৩টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে। এর মধ্যে আবদুস সোবহান সিকদারের 'দুই পাখি এক বনে'; আবদুর রউফের 'পর্বতকন্যা' ও গীতালী হাসানের 'বিগ ফাইভ আর পাখির দেশে' অন্যতম। এদিকে ২২৫টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে গল্প ৩৯, উপন্যাস ৩৬, প্রবন্ধ ১৫, কবিতা ৫২, গবেষণা ৪, ছড়া ১০, শিশুসাহিত্য ৬, জীবনী ৬, মুক্তিযুদ্ধ ২, নাটক ১, বিজ্ঞান ৩, ভ্রমণ ৪, ইতিহাস ২, রাজনীতি ১, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ৪, কম্পিউটার ১, রম্য/ধাঁধা ৫, ধর্মীয় ২, অনুবাদ ২, অভিধান ১ এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ২৯টি। সকালে মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত স্বরচিত কবিতা পাঠের আসরে সভাপতিত্ব করেন কবি আসাদ চৌধুরী। সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাড়া জাগানো 'কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি' কবিতার কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংগীত পরিবেশন করেন ফকির আলমগীর, আবদুল জব্বার, তিমির নন্দী, নমিতা ঘোষ, মহাদেব ঘোষ, শ্রেয়সী রায়, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, আবদুল হালিম খান ও দীপঙ্কর মণ্ডল