Monday, January 14, 2013

জয় পেল শ্রীলঙ্কা

অবশেষে জয়ের মুখ দেখেছে শ্রীলঙ্কা। টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ও ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে কোণঠাসা হওয়া সিংহের মতো ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কানরা। ৮ উইকেটের দাপুটে এই জয় দিয়ে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা ফিরিয়েছে সফরকারীরা। জয়ের জন্য ১৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।
৮ উইকেটের বড় ব্যবধানের জয় পেলেও শুরুটা ভালোভাবে করতে পারেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ওভারেই ওপেনার উপুল থারাঙ্গার উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ক্লিন্ট ম্যাককে। তবে এরপর দীর্ঘ সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের হতাশায় পুড়িয়েছেন আরেক ওপেনার তিলকারত্নে দিলশান ও লাহিরু থিরিমানে। দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৭ রানের চমত্কার এক জুটি গড়ে দলকে সহজ জয়ের পথে নিয়ে যান এই দুই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের ৩৪তম ওভারে এই জুটি ভাঙতে সক্ষম হন বেন কাটিং। ৫১ রান করে ফিরে যান দিলশান। তবে ততক্ষণে জয় প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বাকি রানগুলো অনায়াসেই সংগ্রহ করেছেন থিরিমানে ও জানিথ পেরেরা। ১০২ রানের দারুণ এক শতকের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন থিরিমানে। 
এর আগে টসে জিতে লঙ্কান অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা বেশ ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন শ্রীলঙ্কার পেসাররা। প্রথম সাত ওভারের মধ্যে মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করতেই সাজঘরে ফেরেন দুই অসি ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ফিলিপ হিউজেস। তৃতীয় উইকেটে ৩৯ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন অধিনায়ক জর্জ বেইলি ও ডেভিড হাসি। কিন্তু ১৭তম ওভারে বেইলি রানআউটের ফাঁদে পড়লে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে যায় স্বাগতিকেরা। ২৬ রান করে ফিরে যান বেইলি। এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সাজঘরের পথ ধরেন স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড হাসি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সে সময় ২৫ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৮৩ রান। দলের ভয়াবহ এই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে লড়াকু মনোভাব নিয়ে মাঠে নামেন ব্রাড হাডিন। সপ্তম উইকেটে বেন কাটিংকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গড়েন ৫৭ রানের এক গুরুত্বপূর্ণ জুটি। শেষ পর্যায়ে হাডিনের ৬৭ বলে ৫০ রানের ইনিংসে ভর করেই ১৭০ রানের সম্মানজনক সংগ্রহ জমা করে অস্ট্রেলিয়া। কাটিংয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭ রান।

ভারতে আবারও গণধর্ষণ

সারা ভারত যখন ধর্ষণের প্রতিবাদে সরব, ঠিক তখনই দেশটিতে আরেকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটল। রাজধানী নয়াদিল্লিতে গণধর্ষণের কয়েক সপ্তাহ পরই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য পাঞ্জাবে। এর দায়ে রাজ্য পুলিশ ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করেছে। এ ঘটনায় আরও একজনকে পুলিশ খুঁজছে।
রাজ্য পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, গণধর্ষণের সর্বশেষ শিকার ওই নারীর বয়স ২৯ বছর। তিনি গত শুক্রবার রাতে বাসে করে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাসের চালক তাঁকে গ্রামের কাছে না নামিয়ে অমৃতসর থেকে দূরে এক নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে ধর্ষণ করে। তবে ওই নারীর সর্বশেষ অবস্থার বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানী দিল্লিতে এক মেডিকেলছাত্রী বাসে ধর্ষণের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে চিকিত্সার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে কয়েক দিনের চিকিত্সা শেষে ওই ছাত্রী ২৯ ডিসেম্বরে মারা যান। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Thursday, January 10, 2013

পরিণীতির নতুন রূপ

ইশকজাদে আর লেডিস ভার্সেস রিকি বহেল—দুটি ছবিতেই পরিণীতি চোপড়াকে দেখা গেছে সাদামাটা মিষ্টি মেয়ের রূপে। এবার নিজেকে বদলাচ্ছেন তিনি। দারুণ গ্ল্যামারাস চেহারায় নিজেকে উপস্থাপন করবেন নির্মাতা শাদ আলীর নতুন ছবিতে কিল দিল-এ। ক্যাথরিন হাইল অভিনীত দি আগলি ট্রুথ ছবির মতো কিছুটা হবে কিল দিল। তাই ভারত আর ইউরোপের নানা জায়গায় কেনাকাটা করে বেড়াচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘এটা আমার প্রথম গ্ল্যামারাস চরিত্র। সালোয়ার-কামিজ পরা মেয়ের ইমেজ থেকে আমি বেরিয়ে আসতে চাই। ভারতীয় পোশাক আমি পছন্দ করি। কিন্তু পাশ্চাত্যের পোশাকও আমাকে মানায়। এ ছবিতে তেমন পোশাকই পরব।’
ককটেল ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের চরিত্রটি পরিণীতির খুব পছন্দের। আর তেমনই নাকি হতে যাচ্ছে কিল দিল ছবিতে তাঁর চরিত্রটি। মুম্বাই মিরর।

টেলিটক থ্রিজির গ্রাহক ১ লাখ

দেশে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক লাখ পেরিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ‘স্মার্টফোন এক্সপো ২০১৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন টেলিটকের বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমান।
মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, ১৪ অক্টোবর দেশে প্রথমবারের মতো থ্রিজি সেবা চালু করে টেলিটক। শুরুতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও পরে দ্রুত বাড়তে থাকে টেলিটকের সিমের চাহিদা। সম্প্রতি নতুন ইন্টারনেট মডেম বাজারে এনেছে টেলিটক। এ মডেম বিক্রিতেও প্রচুর সাড়া মিলেছে। টেলিটকের থ্রিজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে আরও গ্রাহক বাড়ানোর কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে টেলিটকের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী ও বিটিএস বাড়ানোর কাজ চলছে। 
মুজিবুর রহমান আরও জানান, গ্রাহকসংখ্যা ও টেলিটক থ্রিজি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে টেলিটক। থ্রিজি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং তরুণদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে এবারের স্মার্টফোন এক্সপোতে অংশ নিচ্ছে টেলিটক। ১১ জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ‘এক্সপো মেকার’ আয়োজিত স্মার্টফোন এক্সপোতে বিভিন্ন অফার নিয়ে হাজির হবে টেলিটক।’
মুজিবুর রহমান বলেন, টেলিটকের থ্রিজিকে পরীক্ষামূলক বলা হলেও এটি পরীক্ষামূলক নয়। টেলিটকের থ্রিজি ব্যবসায়িক দিক থেকেই দেখা হচ্ছে। টেলিটকের গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো ও টেলিটক গ্রাহক সেবার পরিধি আরও বাড়ানো হচ্ছে। শিগগিরই বিভাগীয় শহরগুলোতে থ্রিজি চালুর ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
শিগগিরই বেসরকারি অপারেটরদের থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপনের অনুমতি দেবে সরকার। এ পরিস্থিতিতে টেলিটক অন্যান্য অপারেটরের সঙ্গে ভালোভাবেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে বলে জানিয়েছেন টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক।

সাশ্রয়ী দামের আইফোন আনবে অ্যাপল!

সাশ্রয়ী দামের আইফোনের একটি সংস্করণ বাজারে আনতে পারে অ্যাপল। চলতি বছরেই এ আইফোনের দেখা মিলতে পারে। নতুন সংস্করণের এ আইফোন বাজারে আনতে কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাজারে অ্যাপলের পণ্য ঘিরে সব সময় উন্মাদনা থাকে। প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অ্যাপলের নতুন পণ্য ঘিরে খবর প্রকাশিত হতে দেখা যায়। সম্প্রতি আইফোনের নতুন একটি সংস্করণ আসছে বলেও খবর রটেছে। সাশ্রয়ী মডেলটি ‘আইফোন মিনি’ হতে পারে বলেও অনেক প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। 
এক খবরে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সাশ্রয়ী সংস্করণের আইফোন বর্তমানে বাজারে থাকা আইফোনের মতো হতে পারে। তবে নতুন সংস্করণে ব্যবহূত হবে সাশ্রয়ী উপাদান। ধাতব কাঠামোর পরিবর্তে ব্যবহূত হবে প্লাস্টিকের কাঠামো।
সাশ্রয়ী দামের স্মার্টফোন তৈরির বিষয়ে অ্যাপলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। 
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাজারে সাশ্রয়ী দামের স্মার্টফোনের চাহিদা রয়েছে। সাশ্রয়ী দামের স্মার্টফোনের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। স্যামসাংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিক অর্থাত্ অক্টোবর মাস থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সাশ্রয়ী সংস্করণের আইফোন বা ‘আইফোন মিনি’ বাজারে আনতে পারে অ্যাপল। দক্ষিণ এশিয়ার বাজারের কথা ভেবেই এ স্মার্টফোন বাজারে আনতে যাচ্ছে অ্যাপল।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের গবেষক নেইল মাউসটন রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চলতি বছরে স্মার্টফোন বাজার ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, চীনে স্মার্টফোন বিক্রি হবে সবচেয়ে বেশি।

এক টেরাবাইট পেন ড্রাইভ!

এক টেরাবাইট তথ্য ধারণক্ষমতার পেন ড্রাইভ বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে কিংস্টন। গত সোমবার এ ইউএসবি ড্রাইভের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্ল্যাশ ড্রাইভ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট পিসিম্যাগ।
কিংস্টন জানিয়েছে, পেন ড্রাইভ আকৃতির ছোটো এ ডিভাইসটির নাম কিংসটন ডেটা ট্রাভেলার হাইপার এক্স প্রিডেটর ৩.০, এটি দ্রুতগতিতে তথ্য স্থানান্তরে সক্ষম।
যদিও কিংস্টন পেনড্রাইভটির দাম এখনও প্রকাশ করেনি তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর দাম প্রায় দুই হাজার ডলার হতে পারে।

পানিতেও ব্যবহার করা যাবে স্মার্টফোন

পানিতেও কোনো ক্ষতি হবে না, এমন স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসছে সনি। যুক্তরাষ্ট্রের লাগ ভেগাস সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক শো ২০১৩-তে নতুন এ স্মার্টফোনটি প্রদর্শিত হচ্ছে।
এক্সপেরিয়া জেড নামের তৈরি বিশেষ এ স্মার্টফোনটি গোসলখানায়ও ব্যবহার করা যাবে কোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়াই। জাপানে পানিবান্ধব বিভিন্ন পণ্য থাকলেও স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে এ ধরনের সুবিধা কমই আছে। এক্সপেরিয়া জেড স্মার্টফোনটি হাই ডায়নামিক রেঞ্জ সুবিধার রেকর্ডিং সুবিধাযুক্ত। থাকছে ৫ ইঞ্চি পর্দা, ফোরজি সুবিধা, ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ইত্যাদি। সনি মোবাইলের নির্বাহী স্টিভ ওয়াকের বলেন, আপনি যদি গোসল করার সময় হাই ডেফিনেশন ছবি দেখতে চান, তাহলে আপনার জন্য এ স্মার্টফোন। এ ছাড়া আপনার এ স্মার্টফোনটি যদি ময়লাযুক্ত হয়ে যায়, সুন্দর করে ধুয়ে নিতে পারবেন! 
এবারের প্রদর্শনীতে নতুন এ ফোনটি প্রদর্শিত হলেও বাজারে আসবে আরও পরে। নানা ধরনের নতুন সব সুবিধা যুক্ত হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারীদের ফোনটি বেশ পছন্দসই হবে বলেও ধারণা নির্মাতাদের। যাঁদের ফোন বেশি পানিতে পড়ে কিংবা যাঁরা পানিতে পড়ার পর প্রিয় স্মার্টফোনটি নষ্ট হয়ে যাবে বলে ভয়ে থাকেন, তাঁরা এ ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে পাবেন স্বস্তি। এখন অপেক্ষা নতুন এ ফোন বাজারে আসার।

লটারি জেতাই কাল হলো তাঁর

মাত্র ৬০ ডলারের লটারি কিনে জিতেছিলেন ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলার (প্রায় তিন কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা)। কিন্তু টাকার চেকটি ইস্যু হওয়ার পরদিনই জগত্ ছেড়ে চলে যান তিনি। প্রথমদিকে সবার কাছে মৃত্যুটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মনে হয়েছিল।
কিন্তু লটারি জেতা, মৃত্যু এবং একটি ফোন পুরো ঘটনাটিকে নাটকীয় রূপ দিয়েছে। পুলিশ বলছে, মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তবে উরুজ খান নামের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ আমেরিকান ব্যবসায়ী ঠিক কীভাবে মারা যান সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয় তাঁকে।
এনডিটিভি জানায়, ৪৬ বছরের ওই ব্যবসায়ী শিকাগোর বাসায় মাঝরাতে হঠাত্ চিত্কার করে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। উরুজের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিত্সকরা। 
এর কয়েকদিন পর পুলিশের কাছে একটি ফোন আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি পুলিশকে জানান, উরুজের ওপর প্রাণঘাতী সায়ানাইড ব্যবহার করা হয়েছিল। এ সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশের একটি দল।
উরুজের স্ত্রী শাবানা আনসারি বলেন, ‘আমি মনে করি না, তাঁর প্রতি কারো আক্রোশ ছিল বা তাঁর সাথে কারো শত্রুতা ছিল।’ উরুজ লটারিতে জেতা টাকা ঋণ পরিশোধে, ব্যবসা বাড়াতে ও সেন্ট জুড চিলড্রেন’স রিসার্চ হাসপাতালের জন্য অনুদানে খরচ করতে চেয়েছিলেন।
উরুজ ১৯৮৯ সালে ভারতের হায়দরাবাদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। শিকাগো শহরে লন্ড্রির দোকান ছিল তাঁর। গত বছরের জুনে ওই দোকানের আসা-যাওয়ার পথের সেভেন ইলেভেন নামের দোকান থেকে দুটি লটারি কেনেন তিনি। এর মধ্যে একটি টিকেটেই ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায় তাঁর। ট্যাক্স বাদ দিয়ে ওই লটারিতে জেতেন সোয়া চার লাখ ডলার। গত বছরের ১৯ জুলাই তাঁর নামে চেকটি ইস্যু করা হয়। এর পরদিন মারা যান তিনি।
কর্তৃপক্ষ এখন তদন্ত করে দেখছে, উরুজকে হত্যা করা হয়েছে কিনা। তবে পুলিশ এখনও সন্দেহজনক কোনো উপাদান কিংবা জড়িত কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারেনি। এ কারণে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, উরুজকে সত্যি হত্যা করা হয়েছে কিনা। 
কর্তৃপক্ষ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উরুজের মরদেহ কবর থেকে তুলে অতিরিক্ত কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিকল্পনা করছে। কুক এলাকার গবেষণাগার পরীক্ষক স্টিফেন চিনা জানান, ‘মামলা শুরুর আগে এ সম্পর্কে যত বেশি তথ্য পাওয়া যাবে ততই ভালো।’ তবে, উরুজকে যে হত্যা করা হয়েছে এমন ধারণার ব্যতিক্রম কোন ফল পরীক্ষা থেকে পাওয়া যাবে না।
কিছুদিন আগে উরুজ মক্কা থেকে হজ পালন করে দেশে ফিরেছিলেন। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, হজ থেকে ফিরে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি কখনো কোন অবস্থায় বাজি ধরবেন না।

বেদখলে নগরীর সরকারি যাত্রী ছাউনি

মিরপুর বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে নাজিয়া সুলতানা তার বয়স্ক মাকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় ছিলেন। পাশে যাত্রী ছাউনি থাকলেও সেখানে মাকে বসানোর সুযোগ পান না নাজিয়া। ছাউনির অর্ধেকজুড়ে 'অলি জেনারেল স্টোর'। বাকি জায়গায় পত্রিকাসহ বিভিন্ন পণ্যের হকাররা নিজেদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। ভোগান্তির কারণে অনেকটা বিরক্তি প্রকাশ করেই নাজিয়া বলেন, 'শহরে এখন শুধু নামেই যাত্রী ছাউনি আছে। কিন্তু এর অধিকাংশই ব্যবহার হচ্ছে ব্যবসায়িক কাজে।'
এ তো গেল মিরপুর এলাকার চিত্র। কিন্তু পথ চলতে গিয়ে গোটা রাজধানীতেই সরকারি অর্থায়নে নির্মিত যাত্রী ছাউনিগুলো আর সাধারণ যাত্রীদের কাজে আসছে না। এগুলো যে শুধু ব্যবসায়িক কাজেই ব্যবহার হচ্ছে, তা নয়, যাত্রীদের বদলে অনেক সময় পুলিশ সদস্যদেরও দল বেঁধে ছাউনিগুলোতে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। বিশেষ করে প্রেসক্লাব ও শাহবাগ এলাকায় এটি নিয়মিত ব্যাপার। অন্যদিকে বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানিসহ বিভিন্ন পণ্যের বিশাল বিলবোর্ডও এখন গিলে খাচ্ছে নগরীর যাত্রী ছাউনিগুলো। কিন্তু এদিকে যেন দৃষ্টি দেওয়ার কেউ নেই। ঢাকায় নির্মিত অধিকাংশ যাত্রী ছাউনিই বর্তমানে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ফলে যাত্রী ছাউনিতে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী ও ক্লান্ত পথচারীরা এখন আর এগুলো ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন না। যাত্রী ছাউনিগুলোতে মূলত মোবাইল ফোন রিচার্জ, জেনারেল স্টোর, ওষুধের দোকান, ফাস্টফুডের দোকানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে প্রথমে বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রী ছাউনিগুলো লিজ নেন। পরবর্তীতে এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চুক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকার মাঝারি শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে যাত্রী ছাউনিগুলো খুচরা দোকানদারদের ভাড়া দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৮৫-৮৬ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নগরীতে প্রায় দেড়শ' যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করে। সে সময় চুক্তির মাধ্যমে ডিসিসির সম্পত্তি বিভাগ থেকে যাত্রী ছাউনির একটি অংশে সংবাদপত্রের দোকান তৈরি করা যাবে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়। এ চুক্তির মেয়াদ ২০১৩-১৪ সালে শেষ হওয়ার কথা।
কিন্তু শুধু সংবাদপত্রের দোকান তৈরির কথা থাকলেও পরে অবৈধভাবে যাত্রী ছাউনিগুলোর বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হতে থাকে। ডিসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা যাত্রী ছাউনি থেকে কয়েকবার অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা আদালতের ইনজেকশন নিয়ে ডিসিসিকে তাদের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা থেকে বিরত রাখেন। ডিসিসি জানায়, বর্তমানে নগরীতে ডিসিসির মাত্র ২৫ থেকে ৩০টির মতো যাত্রী ছাউনি অবশিষ্ট আছে। এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'অসাধু ব্যবসায়ীরা কোর্ট থেকে স্টে অর্ডার নিয়ে যাত্রী ছাউনিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন। আমরা চাই যাত্রীদের সুবিধার্থে দেশের বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রী ছাউনি নির্মাণে এগিয়ে আসবে। এতে ছাউনিগুলোতে অন্যরা দোকান তৈরির সুযোগ পাবেন না এবং যাত্রীরাও আর ভোগান্তির শিকার হবেন না।
সম্প্রতি মিরপুর ১১ থেকে ১০ নম্বর পর্যন্ত তিনটি যাত্রী ছাউনি ঘুরে দেখা যায়, এগুলোর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জায়গায় গড়ে উঠেছে খাবার ও ওষুধের দোকান। ১০ নম্বর এলাকার সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সামনেই যাত্রী ছাউনিতে গড়ে উঠেছে 'অলি' নামক জেনারেল স্টোর। এ ছাউনির সামনে অবস্থিত বিআরটিসি কাউন্টারে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের যাত্রী ছাউনির পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে প্রধান সড়কেই ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে দোকানের মালিক মুন্না জনান, বছরখানেক আগে 'নেপচুন' নামক একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ যাত্রী ছাউনিতে দোকান নির্মাণের জন্য জমা বাবদ ৫০ হাজার টাকা জমা দেন। মাসে তাকে ভাড়া দিতে হয় আরও ৪ হাজার টাকা। এখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, 'যাত্রী ছাউনির অবৈধ স্থাপনার কারণে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে সাধারণ যাত্রীদের বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবে বেশি কষ্ট হয় নারী, শিশু ও বয়স্কদের। দোকানের মালিক মুন্না বলেন, 'লোকসমাগম বেশি হওয়ায় ২০১২ এর বিশ্বকাপের পর এ জায়গাটিতে দোকান দিয়েছি। ব্যবসা ভালো হচ্ছে।' একই দিন সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নগরীর ধানমন্ডি সিটি কলেজের সামনের যাত্রী ছাউনিটিতে অবৈধভাবে জেনারেল স্টোর, মোবাইল ফোন রিচার্জের দোকান ও ফটোকপির দোকান গড়ে উঠেছে। এতে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ যাত্রীদের ছাউনির ব্যবহারের বদলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ছাড়া কলেজ গেটের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও আসাদগেটে 'আড়ং'-এর উল্টোদিকের যাত্রী ছাউনিগুলোতে ওষুধ ও খাবারের দোকান তৈরি করা হয়েছে। ঢাকার পুরনো ও অপরিষ্কার যাত্রী ছাউনিগুলোর ভগ্নদশাই বলে দেয়, বহু আগে নির্মাণের কারণে এর বেশির ভাগই এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া নোংরা পরিবেশের কারণে অব্যবহৃত থাকায় অনেক ছাউনিতে মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে মানুষ থাকতে শুরু করেছেন। 


তীব্র শৈত্যপ্রবাহে কাবু দেশ, ৫৭ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে তাপমাত্রা ৩.২

নজীরবহীন শৈত্যপ্রবাহে কাবু হয়ে গেছ বাংলাদেশ। কনকনে শীত আর প্রবল কুয়াশার ফলে ঢাকাসহ সারা দেশেই কয়েকদিন ধরে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
দিনের বেলাও হেডলাইট চালিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকরা। বিশেষ করে হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে ঘন কুয়াশার জন্য কয়েকদিন ধরে সূর্য দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে গত ৪৫ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বুধবার, ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুধুমাত্র জানুয়ারি মাস বিবেচনায় এটি ৫৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ১৯৫৫ সালে দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয়েছিল ৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এর আগে ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ শাহ আলম চীনের সংবাদ মাধ্যম সিনহুয়াকে বলেন, তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছে। ঢাকা থেকে ৩৩৮ কিলোমিটার দূরের দিনাজপুর জেলায় তাপমাত্রা কমে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, বুধবার রাজধানী ঢাকার রেকর্ড করা তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ১৯৬৪ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। সেসময় ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।