খেলোয়াড় হিসেবে অনেকবারই জিম্বাবুয়েতে গেছেন। নির্বাচক হিসেবে দলের অভিভাবকদের একজন হয়ে গেলেন এই প্রথম। এবারের জিম্বাবুয়ে সফরের অন্য রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে নির্বাচক হাবিবুল বাশার
খেলোয়াড়ি জীবনে অনেকবারই জিম্বাবুয়ে সফর করেছেন। নির্বাচক হিসেবে দলের সঙ্গে গেলেন এই প্রথম। অভিজ্ঞতাটা কেমন?
হাবিবুল বাশার: সম্পূর্ণ অন্য রকম অভিজ্ঞতা, একদমই আলাদা। ফলাফল ভালো হলে আরেকটু উপভোগ করতাম। তবে আমার যে অংশটা ছিল, সেটা ঠিকভাবে করার চেষ্টা করেছি।
আগের সফরগুলোর সঙ্গে এই সফরের মূল পার্থক্যটা কোথায় দেখলেন?
হাবিবুল: সত্যি বলতে কি, খেলোয়াড়দের আপনি যত ঘনিষ্ঠই হন, নির্বাচক হলে সম্পর্কটা একটু হলেও অন্য রকম হয়ে যায়। আগে খেলোয়াড়দের সঙ্গে যেভাবে সময় কাটিয়েছি, নির্বাচক হওয়ার পর তো আর সেভাবে কাটানো যায় না। নির্বাচক যখন হয়ে গেছি, ভূমিকা তো বদলাবেই।
জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারার মূল কারণ কী মনে হয়েছে?
হাবিবুল: জিম্বাবুয়ে খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়ে নেমেছিল। খুব ভালো পরিকল্পনাও ছিল ওদের। আমাদের এই দলটার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারার অভিজ্ঞতা তেমন নেই। সম্ভবত একটু হলেও আমরা অতি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম...জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেটা হয় আরকি! কিছু বোঝার আগেই তাই ম্যাচ হেরে গেছি। যখন বুঝতে পেরেছি, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
প্রস্তুতির ঘাটতির কথাও বলা হচ্ছে। কোনটাকে বড় কারণ বলবেন—স্বল্প প্রস্তুতি, নাকি আত্মতৃপ্তিতে ভোগা?
হাবিবুল: প্রস্তুতির একটা ব্যাপার তো ছিলই। তবে আমরা বোধ হয় চিন্তাই করিনি যে জিম্বাবুয়ে আমাদের এভাবে হারাতে পারে। একটু হলেও ওদের হালকাভাবে নিয়েছিলাম, যেন ওদের বিপক্ষে খেললেই জিতে যাব। প্র্যাকটিস ম্যাচে হারের পরও একই রকম মনোভাব ছিল। আসলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই দলটা এ রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই এসেছে। এক আশরাফুল ছাড়া বোধ হয় কারোই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এভাবে হারার অভিজ্ঞতা নেই।
সিরিজ হারে তাহলে বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতাই বড়, নাকি জিম্বাবুয়ে দল হিসেবে বেশি ভালো খেলেছে?
হাবিবুল: দুটোই। দল হিসেবে জিম্বাবুয়ে খুবই ভালো খেলেছে। ২০০৪ থেকে ২০১১—এই সাত বছরে ওদের এত গোছানো ক্রিকেট খেলতে দেখিনি আমি। জয়ের আকাঙ্ক্ষাও আমাদের চেয়ে ওদের অনেক বেশি ছিল। একই সঙ্গে আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারিনি।
মাঠের বাইরে দলের মধ্যে কিছু সমস্যা ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
হাবিবুল: হারলে এ রকম আলোচনা ওঠে। বিশেষ করে, যে সিরিজে জেতার প্রত্যাশা বেশি থাকে, সেটা হারলে এ রকম হবেই। শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয়, সব দলের ক্ষেত্রেই হয়। তবে যতটুকু দেখেছি, আমার চোখে এমন কিছু পড়েনি।
ছয় বছর পর জিম্বাবুয়ে টেস্টে ফিরল। এ নিয়ে সেখানকার মানুষের মধ্যে কেমন উ ৎ সাহ দেখলেন?
হাবিবুল: এর আগেও বার চারেক জিম্বাবুয়েতে গিয়েছি। ক্রিকেট নিয়ে এত আকর্ষণ, মিডিয়াতে এত কাভারেজ কখনো দেখিনি। সিরিজ জেতার পর একটা পত্রিকার পুরো পাতাই ছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ নিয়ে। জিম্বাবুয়ের জন্য এটা অন্য রকম। প্রতিটা ম্যাচ খুব ভালো কাভারেজ পেয়েছে মিডিয়ায়। তৃতীয় ওয়ানডেটা আমি প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে দেখছিলাম। জিম্বাবুয়ে জেতার পর দেখলাম, কিছু মানুষ কাঁদছে!
পরশু রাতে দেশে ফিরে তো ঠিক উল্টো দৃশ্য দেখতে হলো! বিমানবন্দরে ঝাড়ু মিছিল করল একদল তরুণ...
হাবিবুল: বিমানবন্দর থেকে অন্য দিক দিয়ে বের হওয়ায় এটা আমার চোখে পড়েনি। পরে টেলিভিশনের খবরে দেখেছি। এ ব্যাপারে বলার কিছু নেই। এখানে কিছু বলাটাই শোভনীয় মনে হচ্ছে না। খারাপ খেললে আপনি অবশ্যই সমালোচনা করবেন। কিন্তু যেভাবে তারা এটা করেছে, এ ব্যাপারে আসলে কিছু বলার নেই।
No comments:
Post a Comment