Sunday, April 3, 2011

আশরাফুলের এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান

বাংলাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সিংজুরী ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের দেওয়ান মো. শওকত ওসমানের ছেলে ডি এম আশরাফুল আলম তার ভগ্নীপতি দেওয়ান মো. ফরিদ উদ্দিনের সহায়তায় দীর্ঘদিন গবেষণার পর মো. আবুল হোসেন, মো. বাবুল হোসেন এবং আ. ছাত্তার নামের ৩ জনকে নিয়ে কাজ করে আবিষ্কার করলেন এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান (ইপিএফ)। এই ফ্যান দেখতে সাধারণ ফ্যানের মতোই। এই ফ্যান তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেছেন ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, কেমিক্যাল এবং নিজের তৈরি কয়েকটি মেকানিক্যাল সূত্র। এসব ফ্যান বাইরের কোনো বিদ্যুৎ ছাড়াই দুটি বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম। তবে এর জন্য ফ্যানগুলো চালাতে কোনো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয় না। অর্থাৎ বাল্ব দুটি জ্বালাতে যে বিদ্যুতের প্রয়োজন তা এই ফ্যান থেকেই উৎপন্ন হয়। শুধু তাই নয়, এই ফ্যানে রয়েছে বিদ্যুৎ সঞ্চয় রাখার ব্যবস্থা। অর্থাৎ যখন আমাদের বাল্ব জ্বালানোর কোনো প্রয়োজন হবে না তখন ওই বন্ধ থাকা বাল্বের বিদ্যুৎ সঞ্চয় হতে থাকবে এবং পরে যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এই সঞ্চিত বিদ্যুৎ থেকেই একঘণ্টা পর্যন্ত দুটি বাল্ব অথবা একটি বাল্ব জ্বলবে এবং একটি ফ্যান চলবে। তাই এখন যেসব ফ্যান ব্যবহার করা হচ্ছে এর পরিবর্তে যদি আমরা এই এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান (ইপিএফ) ব্যবহার করি তবে শীতের সময়ের মতো গরমের সময়েও বিদ্যুতের ঘাটতি কম থাকবে বলে তিনি মনে করেন। এখানে উল্লেখ্য, তিনি দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ নিজের আবিষ্কৃত এনার্জি স্টেপ-আপ ডিভাইস (ইএসইউডি) নামের একটি যন্ত্র নিয়ে গবেষণা করছেন। আর এর সফলতার জন্য তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। যন্ত্রটি তৈরি করতে তিনি বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল, বিজ্ঞানী ডেনিয়েল এবং নিজের আবিষ্কৃত কয়েকটি মেকানিক্যাল সূত্র ব্যবহার করেন। এই ডিভাইসটির কাজ হচ্ছে ইনপুট বিদ্যুৎ শক্তিকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে আউটপুট করা। তিনি বলেন, এর কাজ সফলতার সঙ্গে শেষ হওয়ার পর যদি ডিভাইসটি ছোট বড় সব মিল-কারখানা, মার্কেট এবং অ্যাপার্টমেন্টে ব্যবহার করা হয়, তবে বিদ্যুৎ খরচ শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ কমে আসবে। অর্থাৎ এখন যেখানে ১০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে সেখানে মাত্র ১৫ থেকে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেই চলবে। ফলে সাশ্রয় হবে ৮০ থেকে ৮৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ। যা দিয়ে আরও ছোটখাটো কারখানা চালানো সম্ভব। শুধু তাই নয়, এ ডিভাইসে থাকবে ব্যাকআপ ক্ষমতা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে এটি ৬০ থেকে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাকআপ দেবে। ফলে লোডশেডিংয়েও কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। ডিভাইসটি দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।
বাংলাদেশের বিদ্যুতের সমস্যা দূর করতে তিনি যে প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন তার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে তিনি সরকারি-বেসরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

কোন প্রাণী কতদিন বাঁচে

প্রাণীর নাম আয়ু
মানুষ : ১১৪ বছর
গরিলা : ৩৯.৩ বছর
বাঘ : ৩১.১০ বছর
কচ্ছপ (টরটয়েড) : ১১৬ বছর
কাছিম (টার্টল) : ৫০০ বছর
তিমি : ৮৭ বছর
কন্ডুর শকুন : ৭২ বছর
দাঁড়কাক : ৬৯ বছর
স্বাদু পানির মুসেল : ৬০ বছর
গন্ডার : ৪০ বছর
নোয়া জাতের অজগর :৩৯ বছর
পায়রা : ৩৫ বছর
ফিতাকৃমি বা টেপওয়াম : ৩৫ বছর
হাতি : ৭০ বছর

যৌতুকবিহীন বিয়ের ঘটক শামসুদ্দিন

নওগাঁর ঘটক শামসুদ্দিন মণ্ডল। যিনি পুরো নওগাঁ ও আশপাশের জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ২০০ বিয়ে দিয়েছেন। আর এসব বিয়ে সবই যৌতুকবিহীন। এমন দৃষ্টান্ত আসলেই বিরল।
আশি বছর বয়সী এই ঘটক এখন দাদুতে পরিণত হয়েছেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার কাছে ঘটক শামসুদ্দিন হলো এক আশ্বাসের নাম। কেননা যৌতুকবিহীন পাত্র তার সন্ধানে আছে অনেক। ঘটক শামসুদ্দিন বসবাস করেন নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চক আবদাল কঞ্চিপুকুর গ্রামে। বাবা মৃত মফিজ উদ্দীন। ১৯৬২ সাল থেকে তিনি এক প্রকার স্বেচ্ছাশ্রমে ঘটকালি শুরু করেন। তখন থেকে তিনি যতগুলো বিয়ে দিয়েছেন তার সবই যৌতুকবিহীন। শামসুদ্দিন মণ্ডলরা ৩ ভাই ও ১ বোন। তিনিই সবার বড়। বাবা ছিলেন কৃষক। অভাবের কারণে পড়াশোনা বেশি করা হয়নি। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব তার কাঁধে এসে যায়। আর তখন থেকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন ঘটকালি। তেমন চাহিদা নেই। বিয়ে হলে যে যা দেয় তা নিয়েই সন্তুষ্ট শামসুদ্দিন। ছোট ভাই-বোনের বিয়ে দিয়েছেন। তাদের বিয়েও হয়েছে যৌতুকবিহীন।

ইভ টিজিং!

বলিউড অভিনেত্রী মাহিমা চৌধুরী ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়েছেন। বিষ্ণুপুরের জুবিলি পার্কে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তিনি এ বিব্রতকর ঘটনার শিকার হন। পরে তিনি এক ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে চলে আসতে সক্ষম হন। মাহিমা সেখানে এক প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তেমন জোরালো ছিল না। এ সুযোগে কয়েকজন যুবক তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।

Friday, April 1, 2011

গাড়ি তৈরিতে আনারস ও কলা


সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা। এর ধারাবাহিকতায় মানুষের ধারণার সঙ্গে যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তিবিদ্যা। আজ যা নতুন, আগামীকাল তা হয়ে যাচ্ছে পুরাতন। সম্প্রতি ব্রাজিলের গবেষকরা জানিয়েছেন, সুস্বাদু আনারস বা কলার তন্তু ব্যবহার করে মজবুত এবং হালকা প্লাস্টিক তৈরি করা যায়। আর সেই প্লাস্টিক ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করা সম্ভব। গবেষকদের দাবি, ফলের তন্তু থেকে তৈরি প্লাস্টিক গাড়ির বডি এবং ইঞ্জিন তৈরিতেও ব্যবহার করা যাবে। সুস্বাদু আনারস এবং কলা ব্যবহার করে গাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ব্রাজিলের সাও পাওলো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। গবেষকদের দাবি, আগামী ২ বছরের মধ্যেই এ পদ্ধতিতে গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। আনারস এবং কলার তন্তু ব্যবহার করে তৈরি করা প্লাস্টিক ইতোমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। সাও পাওলো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক আলসেইডস লিয়াও জানিয়েছেন, সুস্বাদু এসব ফলের তন্তু প্লাস্টিককে অত্যন্ত মজবুত করে। এই প্লাস্টিক ওজনে সাধারণ প্লাস্টিকের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ হালকা এবং ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি মজবুত। এখন দেখার পালা আনারস ও কলার তন্তু ব্যবহার করে প্লাস্টিক উৎদ্ভাবন করে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করা যায় কিনা।

গ্রীষ্মে লোডশেডিং-এ হারিকেন ব্যবসায়ীর প্রস্তুতি

আসছে গ্রীষ্ম, বাড়বে লোডশেডিং। এসময় হারিকেন আর মোমবাতির থাকে ব্যাপক চাহিদা। সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছেন রাজধানীর এক হারিকেন ব্যবসায়ী _রোহেত রাজীব

বয়স চার ওজন ৬০ কেজি

আর দশটি শিশুর মতো লু হাও সাধারণ শিশু নয়। এর কারণ মাত্র চার বছর বয়সে তার ওজন গিয়ে ঠেকেছে ৬০ কেজিতে। এ কারণে উঠতে-বসতে মাঝে মাঝে অন্যের সহায়তার প্রয়োজন হয় তার।

মুটিয়ে যাওয়া চীনা শিশুটির মা-বাবা জানান, বাচ্চাটি এই বয়সে অন্যান্য সাধারণ শিশুর চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ওজনের এবং সে প্রতি রাতে বড় তিন বাটি ভাত খায়। বাবা লু ইউনচেং এবং মা চেন ইউয়ান বুঝতে পারছেন না তাদের ছেলে কেন এতো মুটিয়ে গেল। অথচ জন্মের সময় ওর ওজন ছিল মাত্র ২ দশমিক ৬ কেজি। তিন মাস বয়স থেকে তার ওজন নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে এবং তার ক্ষুধা প্রতি সপ্তাহে প্রচণ্ডভাবে বাড়তে থাকে।

সে তার ক্লাসের ফাঁকে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হাউয়ের এক বছর বয়স থেকেই তার বাবা-মা তার খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হয়েছিলেন কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।

বাংলার বাঁশি বিদেশে

'বাঁশি শুনে আর কাজ নেই...সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি...' জনপ্রিয় গানটির প্রথম পংক্তিটির 'বাঁশি' বাহারি কৃত্রিম ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমের ছোবলে কদর কিছুটা কমলেও বন্ধ হয়ে যায়নি। এখনো বাঁশি শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখাসহ শ্রীমর্দ্দী গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের মানুষ এর ওপর ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই নবাব সিরাজদ্দৌলার আমল থেকে। মেঘনা নদীর কোলঘেঁষা ছোট্ট দ্বীপের মতো কুমিল্লার হোমনা পৌরসভার দক্ষিণের গ্রাম শ্রীমদ্র্দী। মেঘনার চরে গড়ে ওঠা শ্রীমর্দ্দীর রয়েছে বাঁশি তৈরির সুদীর্ঘ ইতিহাস।

গ্রামটিতে ১৯ হাজার লোক বসবাস করছে কেবল বাঁশি শিল্পকে পুঁজি করে। যদিও বাঁশি কারিগরগণ কেউ স্বচ্ছল নয়, তবু তারা বসবাস করছে ভিন্ন আমেজ-স্বকীয়তা বজায় রেখে। এ-গাঁয়ে যেমন রয়েছে তুখোড় বাঁশি বাজানেওয়ালা বা বাঁশরিয়া ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম, হাসু ফকির, করম আলী তেমনি এ গাঁয়ের তৈরি উন্নতমানের বাঁশি বাংলার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে মধ্যপ্রাচ্যের সবকটি দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, জাপান, অষ্ট্রেলিয়া, ডেনমার্কসহ ইউরোপের আরও অনেক রাষ্ট্রে আধুনিক প্রযুক্তিকে হার মানিয়ে রপ্তানি হচ্ছে।

কথা হয় তরুণ মফিজ মিয়ার সঙ্গে। সে জানায়,_'আমি ছুডু সময় (৮ বছর বয়স) থেইক্ক্যা বাঁশি বানাইতে পারি। কেউ শিখাইয়া দেয় নাই। আব্বা-আম্মার বাঁশি বানানো দেইখ্যা শিখছি। অহন তো আমার লগে কেউ পারতো না। জমিতে বদলি দিয়া আমার বন্ধু হারিছ ডেইলি পায় ১০০ টাকা, আমি আপনাগো দোয়ায় কামাই ১৭০ থেইক্ক্যা ২০০ টাকা'। বাঁশির গ্রাম শ্রীমদ্র্দী ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় আরেক বাঁশি কারিগর প্রাথমিক স্কুল গণ্ডি পেরোনো গোপাল (৩২), অনিল (২২) ও তাদের মা রেখা রানীর (৫৫) সঙ্গে। বাড়ির উঠোনে জলচৌকীতে বসে তাদের দেওয়া মুঁড়ি খেতে খেতে কথা বলতে থাকি। রেখা রানী জানায়,_'অনিল-গোপালের বাবা রতন দাস বাঁশি লইয়া শহরে যায় পাইকারি বিক্রি করন লাগি। আমরা মায়-পুতে (ছেলে) হারাদিন বইয়া বাঁশি বানাই। তয় আগের মতো লাভ হয় না।বিদেশি বেটারা ৪-৫ বছর ধইরা বাঁশি নিতাছে'। অনিল বলে,_'ছোট বেলায়ই বাঁশি রং, বার্নিশ, চাক্কি, ছিদ্র করা শিখছি। অহন বিদেশি গো জন্য স্পেশাল বাঁশি কারুকাজ করা নানা বাহারি ডিজাইনের বাঁশি বানাই। গোপালের মতে এই মৌসুমে হাতে কাজ থাকে বেশি। কারণ, বৈশাখ মাসে দেশ-বিদেশের বাঙালিদের কাছে বাঁশির কদর বেশি থাকে। ঢাকার পাইকাররা ফোনে বেশি-বেশি বাঁশি বানানোর জন্য অনুরোধ করে। চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় কেবল পুঁজির অভাবে।

চাকরির বয়সসীমা ৫৮ বছরের প্রস্তাব

সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৫৮ বছর করার প্রস্তাব করে সিভিল সার্ভিস আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ নিতে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জেলা প্রশাসকদের ওয়েবসাইটে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীরা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ দিতে পারবেন। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের (সিপি) দফতরে ডাকযোগে অথবা csaopinion_moestab.gov.bd ঠিকানায় ই-মেইলে মতামত ও পরামর্শ দেওয়া যাবে। খসড়ার ২০ (১) ধারায় স্বাভাবিক অবসরের বয়সসীমা ৫৮ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে চাকরিকাল ২০ বছর পূরণ হলেই কোনো কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।

এতে জনপ্রশাসনকে তিনটি স্তরে ১২টি গ্রেডে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সুপিরিয়র স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেড এবং জুনিয়র স্তরে ১০, ১১ ও ১২তম গ্রেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্য সাতটি গ্রেডকেই সিনিয়র স্তরভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে সুপিরিয়র স্তরের দ্বিতীয় গ্রেডে সিনিয়র স্তরের তৃতীয় গ্রেড থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে পদ পূরণের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ উন্মুক্ত রাখা হবে। যা রাষ্ট্রপতির শর্ত ও মেয়াদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সিনিয়র স্তরের সর্বনিন্ম গ্রেডের শতকরা ৮০ শতাংশ পদে সরাসরি নিয়োগ হবে। অন্য ২০ শতাংশ পদ জুনিয়র স্তর থেকে যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সরাসরি নিয়োগ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে করা হবে।

প্রস্তাবিত আইনের ১৫ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সদস্য পরপর তিন বার একই ধরনের পদে পদোন্নতির পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করতে পারবেন। তবে চতুর্থবারও অকৃতকার্য হলে কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার তাকে অবসরে পাঠাতে পারবে। এক্ষেত্রে অবসরের স্বাভাবিক বয়স হবে ৫৫ বছর

নয়টার বিমান কয়টায় ছাড়ে!

নয়টার বিমান কয়টায় ছাড়ে_ তা কারও জানা নেই। বিমান মন্ত্রণালয়, বিমান কর্তৃপক্ষ, কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ জানে না বাংলাদেশ বিমান চলছে কীভাবে। কেউ কারও কথা শুনছে না। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিমান কর্তৃপক্ষে দূরত্ব দিন দিন বাড়ছে। চরম দুনীর্তি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও কোটারি স্বার্থের কারণে জলাঞ্জলি যাচ্ছে দেশের স্বার্থ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ম্লান হচ্ছে দেশের সুনাম। বিমানের বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটিও। বিমান মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের নানা অপকর্ম তুলে ধরে খুব শীঘ্রই এই কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি রিপোর্ট দেবে। আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বিমান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভায় রিপোর্টটি অনুমোদিত হবে বলে জানা গেছে। তখন সেটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেওয়া হবে।

বিমানের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিমানে এখন চলছে চরম নৈরাজ্য। সিডিউলের কোনো বালাই নেই। কোন ফ্লাইট কখন ছাড়বে বা কয়টার ফ্লাইট কয়টায় ছাড়বে তা কেউ জানেন না। পাইলট থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিরাজ করছে পারস্পরিক কোন্দল। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বিমানে নতুন কিছু নয়। পাইলটরা কোনো নিয়মনীতি মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা দেশের ইমেজকে সব কিছুর ঊধর্ে্ব না রেখে হুটহাট করে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করেন না। মাত্র কিছুদিন আগেই এ ধরনের একটি বিব্রতকর ঘটনায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন। এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনায় দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে যাত্রী সেবা। এরই মধ্যে বিমানের লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এসব রুটের বিমানের ভাড়া এখন অনেক বেশি। যাত্রীসেবার মান সবচেয়ে নিম্নমানের হওয়া সত্ত্বেও ভাড়া বাড়ানোর কারণে বিমান দিন দিন যাত্রী হারাচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো মার্কেটিং বিভাগকে না জানিয়েই অর্থ বিভাগের সিদ্ধান্তে বাড়ানো হয়েছে ভাড়া। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বিমানকে নিউইয়র্ক রুটটিও হারাতে হয়েছে। এখন সর্বসাকুল্যে ৮টি উড়োজাহাজ নিয়ে চলছে বাংলাদেশের গর্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। নতুন উড়োজাহাজ না কিনে লিজে আনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়েও চলছে নানা ধরনের তুগলকি কাণ্ড। লিজের জাহাজ কবে আসবে তাও কারও জানা নেই। এদিকে বিমানের লোকসানের হার এমন পর্যায়ের পেঁৗছেছে যে, চলতি মাসের বেতন নিয়েই সংকট চলছে। প্রতি মাসে ২৮-২৯ তারিখের মধ্যে বেতন হলেও গতকাল পর্যন্ত বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয়নি বলে জানা গেছে।

বিমান পরিচালনা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও বিব্রত। কারণ বিমান পরিচালনা বোর্ড মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত মানছে না। এদিকে মন্ত্রণালয়ও মানছে না সংসদীয় কমিটি সুপারিশ। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি হযবরল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তিনপক্ষই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বিমান মন্ত্রী জিএম কাদের প্রধানমন্ত্রীকে একটি লিখিত আবেদনও পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সংসদীয় কমিটি বিমান বিষয়ে এ যাবৎ বেশ কয়েকটি সভা করেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি ওই সব সভায় আলোচনা হয়েছে। কমিটির সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল বিষয়টি নিয়ে অনেক বার কথাও বলেছেন। কিন্তু কোনো সমাধানে পেঁৗছতে পারেননি। অবশেষে আগামী ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য কমিটির সভায় নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কমিটির সদস্য সৈয়দ মহসিন আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ৬ তারিখের সভার সিদ্ধান্তের পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করা হবে। কমিটি যে সব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, বৈঠকের আগে কোনো কিছুই বলা যাবে না। তবে বিস্ময়কর অনেক তথ্য প্রমাণ কমিটির হাতে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সার্বিক বিষয়ে বিমান পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিমানের ৮টি জাহাজ আছে। এর মধ্যে ৪টি ডিসি-১০ এর বয়স ৩৩ বছর। এফ-২০ গুলোর বয়সও একই রকম। এ সব জাহাজ এখন আর কেউ বানায় না। এগুলোর স্পেয়ার পার্সও পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় এ ধরণের জাহাজ দিয়ে একটি এয়ারলাইন্স চালানো সত্যি কষ্টকর। আর সে কারণেই ফ্লাইট সিডিউল রক্ষা করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় ও বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনও দূরত্ব নেই দাবি করে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব বিমান বোর্ডের একজন সদস্য, সে কারণে কোনও দূরত্ব সৃষ্টির সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বিমানের সব অনিয়ম, দুনীর্তি দূর করার চেষ্টা করছি। দুনীর্তির-অনিয়মের সঙ্গে যদি তাল মিলিয়ে চলতাম তাহলে আমি সবার কাছেই প্রিয় পাত্র হতাম।