এ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন রহস্যময় স্থান, গুহা, বাড়ি, দালালকোঠা ও বন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ২০০ কি.মি. দূরে অবস্থিত বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্ট ট্রি মানুষের কাছে শত শত বছর ধরে আজও রহস্যময়তার বার্তা বহন করে চলছে। বনটি দেখতে অতি চমৎকার ও মনোমুঙ্কর। ভ্রমণকারীদের অতি সহজেই বনটি তার সৌন্দর্যময়তা দিয়ে আকৃষ্ট করতে পারে। বনটি শুধু সৌন্দর্যের জন্যই বিখ্যাত নয় এর মাঝে রয়েছে প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার ফুটউচ্চতার গাছ-গাছালি। বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্টে রয়েছে হাজার বছরের পুরনো বৃক্ষ। যে বৃক্ষগুলো দেখতে একটু লালচে ধরনের, শুধু লাল তা নয়, এ বনের মধ্যে রয়েছে সবুজ, বাদামি, আকাশী রংয়ের বৃক্ষ। গহীন লাল কাঠের বনে প্রবেশ করার জন্য রয়েছে শত শত পথ, তবে আশ্চর্য ব্যাপার হলো প্রতিটি পথই লালগালিচা দিয়ে ঢাকা। আসলে পথগুলো লালগালিচা দিয়ে ঢাকা মনে হলেও মূলত তা লালগালিচা নয়। এ বনের মাটিকেই লালগালিচা মনে হয়। বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্টের আয়তন প্রায় ১০০ বর্গ কি.মি.। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ছোট নদনদী। নদীগুলোর উৎপত্তি সাগর, মহাসাগর থেকে। লাল বনের পাশেই রয়েছে বিখ্যাত রেড উড ন্যাশনাল পার্ক। দর্শনার্থীরা বনে প্রবেশ করার আগে ন্যাশনাল পার্ক থেকে লাল কাঠের বন সম্পর্কে তথ্য নেয়। লাল কাঠের বনের মাঝে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছাউনির ঘর, যে ঘরে কাঠুরীরা বসবাস করে। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো_ বনের ঠিক মাঝখানে রয়েছে হামবোল্ট পয়েন্ট, যে পয়েন্টকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে বয়ে বেড়াচ্ছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কথিত আছে হামবোল্ট পয়েন্ট থেকে ৫০ গজ দূরে গেলে কোনো মানুষ আর বন থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন লোক নিজেদের যোগ্য প্রমাণার্থে হামবোল্ট পয়েন্ট গিয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেকে মনে করেন, যারা ফিরে আসেনি তারা ছোট ছোট রেড উড ট্রি হয়ে গেছে। তবে স্থানীয় বন কর্মকর্তারা মনে করেন হামবোল্ট পয়েন্ট থেকে ৫০ গজ পরেই রয়েছে চোরাগলি, যে গলিতে একবার পা পড়লে ফিরে আসা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময়ে লাল কাঠের বনটি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেকে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডোসহ নানা বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে আসছে। রেড উড ফরেস্ট কাঠের বনের হামবোল্ট পয়েন্ট ছাড়া বনটির বাকি স্থানগুলো বেশ নিরাপদ।
No comments:
Post a Comment