Saturday, May 11, 2013

বেটা ওয়ান ইনভেস্টমেন্ট

পদ ও যোগ্যতা : অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। হিসাববিজ্ঞান/অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর।
অভিজ্ঞতা : দুই বছর।
বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে।
কাজের জায়গা : ঢাকা।
আবেদনের শেষ তারিখ : ২৬ মে।
ছবি এবং পূর্ণাঙ্গ সিভিসহ আবেদন করুন।
ঠিকানা : বেটা ওয়ান ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, গ্রিন ডেলটা এইমস টাওয়ার (লেভেল-৪), ৫১-৫২, মহাখালী সি/এ, ঢাকা-১২১২। সূত্র : www.bdjobs.com

ব্র্যাক

পদ ও যোগ্যতা : স্টাফ রিসার্চার। স্নাতকোত্তর। শিক্ষাজীবনের সব পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণী থাকতে হবে।
অভিজ্ঞতা : তিন বছর।
বেতন : ২৫,৬৪৫ টাকা ও অন্যান্য সুবিধা।
বয়সসীমা : সর্বোচ্চ ৪০ বছর।
আবেদনের শেষ তারিখ : ১৮ মে।
দুই কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, জীবনবৃত্তান্ত, শিক্ষা সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ফটোকপিসহ আবেদন করুন। আবেদনপত্র ও খামের ওপর আবেদনকৃত পদের নাম এবং AD#22/13 উল্লেখ করতে হবে।
ঠিকানা : ব্র্যাক, মানবসম্পদ বিভাগ, আরডিএ সেকশন, ব্র্যাক সেন্টার (৫ম তলা), ৭৫ মহাখালী, ঢাকা-১২১২। সূত্র : প্র.আ।

কোহিনূর কেমিক্যাল কম্পানি


পদ ও যোগ্যতা : শিক্ষানবিস বিক্রয় প্রতিনিধি। স্নাতক।
অভিজ্ঞতা : নিষ্প্রয়োজন।
বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে।
উচ্চতা : পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি (ন্যূনতম)।
বয়সসীমা : সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
কাজের জায়গা : নোয়াখালী।
আবেদনের শেষ তারিখ : ১৪ মে।
ছবি এবং পূর্ণাঙ্গ সিভিসহ নিম্নঠিকানায় সকাল সাড়ে ১০টায় সরাসরি উপস্থিত হয়ে সাক্ষাৎকার দিন।
ঠিকানা : নোয়াখালী রিজিওনাল অফিস, কোহিনূর কেমিক্যাল কম্পানি, কবির উদ্দিন (মেসার্স আজমীর হোটেলের উপরে), বড় পুল, চৌমুহনী, নোয়াখালী।
সূত্র : www.bdjobs.com

Friday, May 10, 2013

ওমানে সড়ক দুর্ঘটনা : তিন বাংলাদেশিসহ পাঁচজন নিহত


মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশিসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত তিন বাংলাদেশি চট্টগ্রামের অধিবাসী বলে জানা গেছে। নিহত বাংলাদেশিরা হলেন আমানবাজার গ্রামের জসিম আল দীন, বোয়ালখালীর মোহাম্মদ দেলোয়ার, কাঞ্চনা গ্রামের হেফাজেতুর রহমান। আহত এক বাংলাদেশি ফুলতলা গ্রামের মোহাম্মদ জাফরের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে।
ওমানের পুলিশ জানিয়েছে, মাস্কটের সঙ্গে দেশটির উত্তরাঞ্চলের সংযোগ সড়কে গাড়ি দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশি যাত্রীদের বহনকারী গাড়িটি বিপরীত দিক থেকে আসা ওমান পুলিশের এক ব্রিগেডিয়ারের ব্যক্তিগত গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কর্তার গাড়িচালক এবং দুই বাংলাদেশি নিহত হন। ব্রিগেডিয়ার সেলিম বিন মোহাম্মদ আল রোয়াজসহ আহত দুজন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওমানের সোহার রেফারেল হাসপাতালে মারা যান।

ফতুল্লায় গণধর্ষণ মামলার এক আসামি গ্রেপ্তার

নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় এক গার্মেন্ট নারী কর্মীকে (১৭) গণধর্ষণের ঘটনায় আরিফ(৩২) নামে এক বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার একটি বাড়ি থেকে এ বখাটেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আরিফ তল্লা এলাকার জামাল মিয়ার পুত্র ।

ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বখাটে আরিফ ফতুল্লার তল্লা এলাকার রপ্তানিমুখী নাইনটেক্স গার্মেন্টের এক নারী কর্মী (১৭) গণধর্ষণের মামলার এজাহারভূক্ত আসামি। তিনি আরো জানান, আরিফকে আদালতে প্রেরণ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডের শুনানী পরে অনুষ্ঠিত হবে।

দাম কমছে সুপার কম্পিউটারের

সুপার কম্পিউটার কেনার অফারে অবাক হচ্ছেন? দাম কমেছে, চাইলে এখন আপনিও কিনে ফেলতে পারেন একটি সুপার কম্পিউটার।
এখন মাত্র পাঁচ লাখ মার্কিন ডলারেই যে কেউ কিনে ফেলতে পারবেন সুপার কম্পিউটার ক্রে’র ছোট সংস্করণ। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক ক্রে ইনকর্পোরেশন তৈরি করছে এক্সসি৩০-এসি মডেলের ছোটো আকারের এ সুপার কম্পিউটার। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
বিশ্বের প্রথম সুপার কম্পিউটার তৈরি করেছিল ক্রে। অনেক বড় আকারের সেই সুপার কম্পিউটারের আকার ছোট করে সাশ্রয়ী দামে এখন বাজারে আনতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ক্রের তৈরি এক্সসি৩০-এসি মডেলটি হবে ক্রের তৈরি সবচেয়ে সস্তা সুপার কম্পিউটার। এ কম্পিউটারটিতে অবশ্য ক্রের সবচেয়ে দামি ও শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার এক্সসি-৩০-এর মতো সফটওয়্যার ও প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এক্সসি-৩০ সুপারকম্পিউটারটির দাম এক কোটি মার্কিন ডলার থেকে তিন কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।

তেজগাঁওয়ে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় নিহত ৩

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাত রাস্তার মোড়ে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় তিনজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে সাত রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের প্রাচীর ভেঙে কাভার্ড ভ্যানটি কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের ফটকে গিয়ে ধাক্কা খায়। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকজন পথচারী মারাত্মক আহত হন। আশপাশের লোকজন কাভার্ড ভ্যানটি আটক করলেও চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান। আহত লোকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিত্সকেরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
কাভার্ড ভ্যানের চালক ও তাঁর সহকারীকে আটকের চেষ্টা চলছে জানিয়ে তেজগাঁও অঞ্চলের পুলিশের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বিআরটিএতে খোঁজ নিয়ে কাভার্ড ভ্যানের মালিককে ডেকে আনা হবে। তবে আজ বিআরটিএ বন্ধ থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, নিহত তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

দায়িত্ব ছাড়বেন কারস্টেন

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে আর নয়। আগামী আগস্ট মাসে দুই বছর মেয়াদি চুক্তি শেষ হলেই দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন গ্যারি কারস্টেন।
আজ শুক্রবার এক খবরে ‘ক্রিকইনফো’ জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারস্টেন। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে নিজের সিদ্ধান্তটা বোর্ডকে জানিয়েও দিয়েছেন তিনি। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আগ্রহ আছে কি না, এ ব্যাপারে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বোর্ডকে অবহিত করার কথা ছিল তাঁর।
২০১১ সালের এপ্রিলে ভারতকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়ে দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন কোচ কারস্টেন। নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দায়িত্ব নেন একই বছরের আগস্টে। আগামী মাসে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শেষবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে দেখা যাবে কারস্টেনকে।
চুক্তি নবায়ন করবেন না জানিয়ে কারস্টেন বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড আমার ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, এ জন্য ধন্যবাদ। একজন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা একটা বড় অর্জন।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ক্রিস ন্যানজানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্যারি (কারস্টেন) পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চান। গত দুই বছরের চেষ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে তিনি যে অসামান্য অবদান রেখেছেন, এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।’
ন্যানজানি জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ব্যস্ত সূচি। এ কারণে কারস্টেনের উত্তরসূরি নির্বাচনে খুব বেশি দেরি করবে না বোর্ড। তিনি বলেন, ‘জুলাই ও আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফর, নভেম্বরে পাকিস্তান সফর, এরপর ঘরের মাঠে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। এ অবস্থায় দ্রুত কারস্টেনের উত্তরসূরি নির্বাচন করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনায় বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন

সাভারের ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘটনার ১৬ দিন পর আজ শুক্রবার পোশাকশ্রমিক রেশমা বেগমকে উদ্ধারের ঘটনায় বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ধ্বংসাবশেষে আটকে থাকার সময় রেশমা একটি পাইপের মাধ্যমে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে উদ্ধারকাজের বর্ণনার পাশাপাশি রেশমার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সংবাদটির শিরোনাম: ‘উইম্যান পুল্ড অ্যালাইভ ফ্রম রাবল অব বাংলাদেশ ফ্যাক্টরি।’ উদ্ধারের পর উদ্ধারকর্মীরা যে উল্লাসে ফেটে পড়েন, তা-ও বর্ণনা করা হয়েছে সংবাদটিতে।
সিএনএন শিরোনাম করেছে রেশমার উদ্ধৃতি দিয়ে। রেশমা উদ্ধারকারীদের সাহায্য চাইতে যে ডাক দিয়েছিলেন, তা-ই শিরোনাম হয়েছে সিএনএনের। শিরোনাম ছিল, ‘আই অ্যাম অ্যালাইভ বাংলাদেশ সারভাইভর সেইস প্লিজ রেস্কিউ মি’।
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ ‘উইম্যান ফাউন্ড অ্যালাইভ ইন রাবল অব বাংলাদেশ ফ্যাক্টরি সেভেনটিন ডেইজ আফটার কোলাপ্স’ শিরোনামের খবরে উদ্ধারকাজের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। রেশমাকে উদ্ধারের পেছনে মূল ভূমিকা পালনকারী সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট আবদুর রাজ্জাকের বক্তব্যও উদ্ধৃত করা হয়েছে।
বিবিসি শিরোনাম করেছে ‘ঢাকা বিল্ডিং কোলাপ্স: উইম্যান পুল্ড অ্যালাইভ ফ্রম রাবল।’ খবরে বলা হয়েছে, ‘সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর আজকের নাটকীয় খবরটি পাওয়া গেছে।’ এতে রেশমা বেগমের বক্তব্যের পাশাপাশি আবদুর রাজ্জাকের বক্তব্যও উদ্ধৃত করা হয়েছে।
আল জাজিরা শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশ ফাইন্ডস বিল্ডিং কোলাপ্স সারভাইভর’। এর উপশিরোনামে বলা হয়েছে, ঢাকার ভবনধসে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির বার্তা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। ‘সারভাইভর ফাউন্ড ইন রাবল সেভেনটিন ডেইজ আফটার বাংলাদেশ ফ্যাক্টারি কোলাপ্স: ফায়ার চিফ।’
এ ছাড়া টেলিগ্রাফ, নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, হাফিংটন পোস্ট, সিনহুয়া, প্রেসটিভিসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও পত্রিকার ওয়েবসাইটে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

আবেগতাড়িত হয়েই পদত্যাগ

রাতে বাইরে কোথাও খেতে গিয়েছিলেন। সাজেদুল ইসলাম আর শামসুর রহমানকে নিয়ে হোটেলে ফিরে রিসেপশনে কী নিয়ে যেন কথা বললেন। এরপর পা বাড়ালেন লিফটের দিকে। পেছনে থেকে ‘ক্যাপ্টেন...’ বলে ডাক দিতেই কপাল কোঁচকানো বিরক্তি নিয়ে তাকালেন মুশফিকুর রহিম, ‘আবার কী ভাই...?’
মুশফিকের বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। পরশু সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে সময়টা কেমন যাচ্ছিল না বোঝার কথা নয়। একের পর এক কথা বলতে হয়েছে এটা নিয়েই। সন্ধ্যায় মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই মুশফিককে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন দলের সঙ্গে থাকা বোর্ড কর্মকর্তা আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও কোচ শেন জার্গেনসেন। দু-একজন সতীর্থ রুমে গিয়ে বুঝিয়ে এসেছেন মাথা ঠান্ডা রাখতে। ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান ও পরিবারের সদস্যরা। পদত্যাগের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে সবাই সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করেছেন। মুশফিক সিদ্ধান্তে অনড়। এ ধরনের ‘যুদ্ধ’ আগে কখনো করেননি বলে ক্লান্তি আর বিরক্তি আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কেন হঠাৎ পদত্যাগ করলেন মুশফিক? বোর্ড জানে না, টিম ম্যানেজমেন্ট জানে না, কোচ-সতীর্থ কেউ জানেন না, সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিক এ ঘোষণার রহস্য কী?
পরশু রাতে হলিডে ইন হোটেলে দলের একাধিক খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে—সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, পদত্যাগের কারণ সেটাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলেছেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে যে কারণ দেখিয়েছে, আমাদেরও মুশফিক তাই বলেছে। এ ছাড়া আমি অন্যভাবেও খোঁজখবর নিয়েছি এখানে আর কোনো কারণ আছে কিনা। আমার মনে হয় এখানে অন্য কিছু নেই। সিরিজ হারায় আবেগপ্রবণ হয়ে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ একই ধারণা মিনহাজুল আবেদীনেরও, ‘ও এটা ইমোশনালি করেছে। নইলে বোর্ড, পরিবার, টিমমেট কারও সঙ্গে কথা না বলে সে কী করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়! আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ দলের একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেও প্রায় একই বার্তা পাওয়া গেছে। মুশফিকের পদত্যাগের কারণ হিসেবে দলের সবার সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও আসছে। তবে মুশফিকের খুব ঘনিষ্ঠরাও সমর্থন করছেন না এ ধারণাকে।
পদত্যাগ করলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুশফিকই অধিনায়কত্ব করবেন। আপাতত তাই বিষয়টা নিয়ে আর আলোচনা করতে আগ্রহী নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সে-ই অধিনায়কত্ব করবে। আর জিম্বাবুয়ে সফরের পর আপাতত খেলাও নেই। কাজেই এখানে আর নতুন করে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কথাবার্তা যা বলার দেশে ফিরে বলব’—জানিয়েছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।
দল সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও পরশু তৃতীয় ওয়ানডের শেষ দিকে মাঠেই তামিম ইকবালকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান মুশফিক। খেলা চলায় মাঠে তামিম এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি। পরে খেলা শেষে নাকি মুশফিক নিজ থেকেই সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার আগ্রহ দেখান। তার আগে ড্রেসিংরুমে ‘একটা কথা আছে’ বলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে এগিয়ে যান তামিম। অনুরোধ করেন মুশফিক যেন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ততক্ষণে বিষয়টা আঁচ করতে পেরে মাহমুদউল্লাহ, রাজ্জাক, শামসুর রহমানসহ আরও কয়েকজনও তাঁকে বোঝানো শুরু করেন। মুশফিক তার পরও সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে তামিম বলেন, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর দরকার নেই। যা বলার মুশফিক যেন সিরিজ শেষে বলেন।
বিষয়টা তখন পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের কানে না পৌঁছালেও মুশফিক আইস বাথ নেওয়ার সময় যখন তামিম ও শামসুর তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন, তাঁদের কথোপকথন কানে যায় কোচ শেন জার্গেনসেনের। টিম ম্যানেজার তানজীব আহসানকে তিনি বিষয়টা দেখতে বলেন। ম্যানেজার তখনই খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রথম শোনেন মুশফিকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা। এ সময় মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলে অন্যরা বাধা দেন। সবাই বুঝতে পারছিলেন সংবাদ সম্মেলনে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন অধিনায়ক। সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তখন মুশফিককে সংবাদ সম্মেলনে না আসতে বলে চলে আসেন নিজেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সতীর্থদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলে আসেন মুশফিকও, ঘোষণা দেন পদত্যাগের।
সিরিজ এখনো চলছে। মুশফিকের পদত্যাগ যাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনো ছায়া না ফেলে, সে ব্যাপারে যথেষ্টই সচেতন টিম ম্যানেজমেন্ট। খেলোয়াড়দের প্রতিও অলিখিত নির্দেশ এ নিয়ে কথা না বলার। তবে সূত্র জানিয়েছে, পরশু হোটেলে ফেরার পরও দলের একাধিক খেলোয়াড় মুশফিককে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। মোহাম্মদ আশরাফুল রুমে গিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাল সকালে কথা বলেছেন তামিমও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক খেলোয়াড় বললেন, ‘মুশফিক সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত হয়ে এটা করেছে। পদত্যাগ করার মতো কিছুই হয়নি। দলের কারও সঙ্গেই তাঁর কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবাই ওর সঙ্গে আছি।’ আরেকজন তো নিশ্চিত করেই বললেন, ‘মুশফিককে অনেক দিন থেকে চিনি। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, ও সিদ্ধান্ত বদলাবে। সিরিজটা শেষ হোক। দেশে ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এটা এমন সিরিয়াস কিছু না।’
জাতীয় দলের সতীর্থ থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী—মুশফিকুর রহিমকেই অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় সবাই। মুশফিকও নিশ্চয়ই বুঝবেন, ক্রিকেটে আবেগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বড়। আর সেটা তাঁর মতো ভালো নিকট অতীতে কেউ পালন করেনি।