Tuesday, May 7, 2013

বুধ-বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল

আগামী ৮ ও ৯ তারিখ বুধ-বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্ত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। সোমবার বিএনপির সিনিয়র নেতা এবং ১৮ দলীয় জোটের কয়েকজন শীর্ষ নেতাদের সাথে খালেদা জিয়ার বৈঠক থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে, দেশব্যপী পুলিশের গণহত্যা বিশেষ করে রোববার রাতে মতিঝিলে হেফাজতকর্মীদের উপর গণহত্যার প্রতিবাদে এ হরতাল আহ্বান করা হয়।
এছাড়া মঙ্গলবার হেফাজত নেতাকর্মীদের গায়েবানা জানাজা পড়ারও ঘোষণা দেয়া হয় বৈঠকে।
১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে অংশ নেন বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, খেলাফত মজলিত সভাপতি মওলানা মোহাম্মদ এসাহাক প্রমুখ।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সারোয়ারি রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ড. ওসমান ফারুক, সাদেক হোসেন খোকা, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু প্রমুখ অংশ নেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সরকারকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে এ ঘোষণা দেয়া হল।

বোমা ফাটালো এএইচআরসি: নিহতের সংখ্যা ২৫০০ এর বেশি


দেশের কোন মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ না করলেও আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো সোচ্চার হয়ে উঠছে। ইখওয়ান অনলাইনের পর এবার বোমা ফাটালো এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন। তারা দাবি করেছে ৫মে রাতে মতিঝিলে হেফাজতের কর্মীদের সরাতে পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির যৌথ অভিযানে ২৫০০০এরও অধিক হেফাজত কর্মী নিহত হয়েছে।
তারা বলে, রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশের অবস্থা দেখেই বুঝা যায় লাশের সংখ্যা কত ব্যাপক হতে পারে।
প্রতিবেদনে তারা বাংলাদেশের টিভি ও নিউজপেপারের কঠোর সমালোচনা করে। তারা একটি ইংরেজি দৈনিকের দেয়া মাত্র ৭ জন লাশের কথা উল্লেখ করে। এছাড়া তারা বলে- দেশটির প্রায় সব টিভি চ্যানেলই নিরব।

Monday, May 6, 2013

বাড়ি গেলেন আল্লামা শফী

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী পুলিশের উপস্থিতিতে রাজধানীর লালবাগের জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসা (লালবাগ মাদ্রাসা) থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
আজ সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে লালবাগ মাদ্রাসা থেকে একটি গাড়িতে করে তিনি বিমানবন্দরের দিকে রওনা হন। এ সময় আল্লামা শফীর সঙ্গে দলের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, শফীর ছেলে আনাছ মাদানীসহ পাঁচজন ছিলেন। লালবাগ অঞ্চলের উপকমিশনার হারুণ অর রশিদ এ খবর জানান। তবে শফী চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হলেও অন্যদের কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি।
ঘটনাস্থলে উপকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তো আসলে আপনাদের দেখেই এলাম। পরে ঘরে গিয়ে দেখি উনি বাড়ি যাবেন।’ এ সময় সাংবাদিকেরা পুলিশকে জিজ্ঞেস করেন, ‘রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কী কথা হলো?’ উপকমিশনার সাংবাদিকদের জানান, ‘তেমন কোনো কথা হয়নি। উনি (আল্লামা শফী) বাড়ি যাবেন। বিমানবন্দরে যাবেন।’
তবে হেফাজতে ইসলামের নেতা মো. খোরশেদ আলম জানান, ডিবি পুলিশ আল্লামা শফীকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

মাদ্রাসায় কান্নার রোল
আল্লামা শফীকে যখন লালবাগ মাদ্রাসা থেকে পুলিশ নিয়ে যায়, তখন ওই এলাকায় মানুষের ভিড় জমে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে কান্নার রোল ওঠে।

তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
রাজধানীর লালবাগের জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসার (লালবাগ মাদ্রাসা) ভেতরে আজ দুপুর ১২টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঢোকে। সেখানে থাকা হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রায় তিন ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
পুলিশের এই দলের নেতৃত্ব দেন লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ। মাদ্রাসায় প্রবেশের আগে তিনি দাবি করেন, পুলিশের ওপর হামলা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে, মানুষ খুন করে কিছু লোক ভেতরে লুকিয়ে আছে।
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীও ওই মাদ্রাসায় ছিলেন। হেফাজতের আরও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা সেখানে ছিলেন।

কাঁচপুরে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ১০

নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড-কাঁচপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আজ সোমবার ভোর থেকে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে বিজিবির সদস্যরাও পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন। বেলা দুইটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলছিল। এতে পুলিশ ও বিজিবির তিন সদস্যসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।

পুলিশ-বিজিবির সদস্যসহ নিহত ১০
নিহতেরা হলেন পুলিশের কনস্টেবল ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ফিরোজ (৩৫) ও ভাঙ্গা উপজেলার জাকারিয়া (২৮), বিজিবির নায়েক সুবেদার শাহ আলম (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকার সাইফুল ইসলাম, মাসুম, হান্নান মিয়া, বাবু গাজী, জসীমউদ্দিন, মারজানুল ইসলাম (১৬) এবং চট্টগ্রামের মাদারবাড়ির কাভার্ডভ্যানের সহকারী মিজান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিত্সা কর্মকর্তা সালাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, পুলিশের দুই ও বিজিবির এক সদস্যকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।



সিদ্ধিরগঞ্জের মা জেনারেল হাসপাতালের চিকিত্সক আবদুল কাইয়ুম জানান, আহত অবস্থায় নেওয়ার পর তাঁদের হাসপাতালে সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যার সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সক নাজিম উদ্দিন জানান, এই হাসপাতালে মাসুম ও হান্নান মিয়াকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জের সুগন্ধা ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আইয়ুব জানান, গুলিবিদ্ধ বাবু গাজীকে তাঁদের হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সিএনজি অটোরিকশাচালক জসীমউদ্দিনের লাশ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় এলাকায় পড়ে ছিল। পরে খবর পেয়ে স্বজনেরা লাশ নিয়ে যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্টার বইয়ের তথ্যমতে, এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় থাকা মারজানুল ইসলামকে (১৬) মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার এনামুল হকের ছেলে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের মাদারবাড়ি এলাকার কাভার্ডভ্যানের সহকারী মিজানকেও মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হাসপাতালে বিজিবির ডিজি ও আইজিপি
বিজিবির সদস্য নিহত হওয়ার খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) আজিজ আহমেদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, গতকাল রোববার রাতে পুলিশ-র্যাব ও বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের সরিয়ে দেয়। আজ সকালে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর সেতু এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকের সঙ্গে প্রথমে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় হেফাজতের কর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা অবরোধ সরাতে যান। এ সময় বিজিবির দুজন সদস্য মূল দল থেকে একটু দূরত্বে চলে গেলে হেফাজতের কর্মীরা ওই দুজনের ওপর হামলা চালান। এই দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সকাল ১০টার দিকে চিকিত্সকেরা শাহ আলমকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন ওই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকারও আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি সাইনবোর্ড-কাঁচপুর এলাকায় হেফাজতের তাণ্ডবে পুলিশের দুই সদস্যের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাইনবোর্ড-কাঁচপুর এলাকা রণক্ষেত্র
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোরে ফজরের নামাজের পরপরই সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত কয়েকটি মাদ্রাসায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেন হেফাজতের কর্মীরা। এ সময় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে তাঁদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পুলিশের একটি ও বিজিবির একটি গাড়িসহ অন্তত ২০টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন হেফাজতের কর্মী-সমর্থকেরা। পরে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা, হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, শিমরাইল পুলিশ বক্স ও সিদ্ধিরগঞ্জে ডেসকোর অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন তাঁরা। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেলা একটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে যান চলাচল শুরু হয়।
তবে বেলা দুইটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মহাসড়কের আশপাশের অলিগলিতে অবস্থান নিয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন হেফাজতের কর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশের বক্তব্য
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি দাবি করেন, হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা যুক্ত হয়ে সহিংসতা চালিয়েছেন।

দিগন্ত ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার বন্ধ

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে সরকারি সংস্থা। এটি দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেডের প্রতিষ্ঠান। যার চেয়ারম্যন মীর কাশেম আলী যুদ্ধাপরাধের মামলায় কারাগারে রয়েছেন। সোমবার ভোরের দিকে হঠাৎ করেই পুরানা পল্টনের ১৬৬, সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বরণীর আল-রাজী কমপ্লেক্সে দিগন্ত টেলিভিশনের অফিসে গিয়ে এর সম্পচার বন্ধ করে দেন বিটিআরসি’র কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দিগন্ত টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ জানায়, ভোর ৪টার পর পুলিশ দিগন্ত টেলিভিশনের অফিসে এসে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। তবে কি কারণে এর সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তা তারা কর্তৃপক্ষকে জানায়নি। বন্ধ করে দেয়ার পর কিছু যন্ত্রপাতিও জব্দ করে নিয়ে যায়। একইভাবে গতরাতে ইসলামিক টিভির সম্প্রচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

দেশবাসীকে রাজপথে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান বিএনপির

সরকারের নৈরাজ্য বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রাজপথে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
আজ রোববার রাতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার। রাতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এম কে আনোয়ার জানান, হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের ওপর সরকার দলীয় কর্মীদের হামলা ও পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনায় নিন্দা এবং এর বিচার দাবি করেছে বিএনপি। এছাড়াও আজকে যে সব জায়গায় হামলা হয়েছে সেখানে বিএনপি, জামায়াতের কেউ জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেছেন।
এম কে আনোয়ার বলেন, খালেদা জিয়া নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের ব্যাপারে সরকার দলীয় নেতাদের প্রত্যাখ্যানের বক্তব্যে সরকারের মনোভাব প্রকাশ করে দিয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়া বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টা সময় শেষ হওয়ার পরের কর্মসূচি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ, রেল, নৌ ও স্থলপথ অবরোধ, একটানা কয়েকদিন হরতাল। তবে ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

Sunday, May 5, 2013

আবার লগি বৈঠার তান্ডব আওয়ামী হায়েনাদের










আওয়ামী হায়েনাদের চরিত্র এখনো বদলায় নাই। ফটিকছড়ি থেকে কোন শিক্ষাই নিতে পারে নি এই হায়েনারা। আবারো লগি বৈঠা নিয়ে তৌহিদী জনতার উপর সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে এই নাস্তিকদের দোসররা। এদের প্রতিরোধ করে বাংলার মাটিতে দাফন করে দেয়া ছাড়া উপায় নাই।

পল্টনে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল, হামলা

পল্টন মোড়ে অবস্থান নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চারদিক থেকে হামলা চালাচ্ছে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। রোববার দুপুরে শুরু হওয়া পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষ বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত থামেনি। অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পর পর ১৫-২০টি ককটেল ছুড়ে মারে। বিস্ফোরণে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

পল্টন মোড়ে পুলিশ ও র‌্যাবের ওপর বিজয়নগর, বাইতুল মোকাররম ও জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও লাটিসোঁটা নিয়ে হামলা করছে হেফাজত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও শটগান থেকে গুলি নিক্ষেপ করছে। তবে হেফাজতের লোকজন কিছুটা পিছু হটে আবারও হামলা চালাচ্ছে।

টহলরত পুলিশের সাঁজোয়া যানে (এপিসি) ককটেল হামলা চালায় হেফাজত। তবে যানটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।

সকাল থেকে ঢাকার চারপাশে মহাসড়কগুলো অবরোধ করে হেফাজত। এতে আন্তনগর বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাক কার্যত দেশের বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

পল্টনে তুমুল সংঘর্ষ, নিহত ২, আহত শতাধিক

রাজধানীর পল্টন এলাকায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। পুলিশ বৃষ্টির মতো শ’ শ’ রাউন্ড গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। এতে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। একজনের নাম সিদ্দিকুর রহমান (২৮)। তিনি হানিফ পরিবহনের হেলপার বলে জানা গেছে। তবে অপরজন হেফাজত কর্মী বলে জানা গেছে। বিজয়নগর এলাকায় একটি পুলিশ বক্স আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় হেফাজত কর্মীরা। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তখন পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। এসময় হেফাজতের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। আমাদের মেডিকেল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আহত শতাধিক হেফাজত কর্মীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এসময় হেফাজত কর্মীরা ওই এলাকায় মিছিল করার চেষ্টা করছিলেন। এতে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ জানিয়েছে হেফাজতের কর্মীরা লাঠি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে যেতে চায়। আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিক থেকেও লাঠি নিয়ে কর্মীরা বায়তুল মোকাররমের দিকে আসলে চাইল মাঝ থেকে দুই পক্ষকে বাধা দেয়া হয়। এতে হেফাজতের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। হেফাজতকর্মীরা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে পুলিশ পল্টন মোড়ে অবস্থান করছে। তবে ওই এলাকায় হেফাজত কর্মীদের উপস্থিতি বাড়ায় পুলিশ পিছু হটছে। হেফাজতের কর্মীরা বায়তুল মোকাররমের উত্তরগেটে সীমানা প্রাচীরের মধ্যে রাখা দুটি মোটর সাইকেলে পুড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে যোহরের নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হেফাজত কর্মীদের বের হতে পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মসজিদের দক্ষিণ গেট দিয়ে হেফাজত কর্র্মীরা লাঠি নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধ দেয়। অন্যদিকে হেফাজত কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ পিছু হটে জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।  সব শেষে পাওয়া খবরে জানা গেছে, পল্টনে পুলিশকে দুই দিক থেকে হেফাজত কর্মীরা ঘিরে রেখেছেন।

ত্রিশালে গণধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় গতকাল শুক্রবার রাতে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন আরিফ (২০) ও সুমন (১৮)। তাঁরা পেশায় রাজমিস্ত্রি। ধানীখোলা গ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ত্রিশাল থানার পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, গতকাল রাত নয়টার দিকে ধানীখোলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে। রাতেই বাড়ির পাশের একটি স্থান থেকে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগে চিকিত্সাধীন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির অবস্থা সংকটাপন্ন।
ত্রিশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি  জানান, ধর্ষণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মেয়েটি যে বিদ্যালয়ে পড়ে, ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক  বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা খুব মর্মাহত। সে আমার স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে।’
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান  বলেন, তিনি ঘটনার কথা শুনেছেন। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।