Saturday, November 2, 2024

কোহলির চেয়ে ক্লাসেনের দাম বেশি

 

আইপিএলের মেগা নিলামের আগে ধরে রাখা খেলোয়াড়ের তালিকা জমা দিতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। গতকাল শেষ দিনেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তা নিশ্চিত করেছে। ১০ দল মিলে ধরে রেখেছে ৪৬ জন খেলোয়াড়

রুপির অঙ্কে ধরে রাখা খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার ওপরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হাইনরিখ ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানকে রেখে দিতে ২৩ কোটি রুপি খরচ করেছে হায়দরাবাদ। আইপিএলে ধরে রাখা (রিটেইনড) খেলোয়াড়দের মধ্যে ক্লাসেনই এখন সবচেয়ে দামি। যৌথভাবে দুইয়ে বিরাট কোহলি ও নিকোলাস পুরান। তাঁদের ধরে রাখতে ২১ কোটি রুপি দিতে হচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসকে।

প্রবল চাপের মধ্যেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারা, যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া এবং শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারা ক্লাসেনকে ধরে রাখতে হায়দরাবাদকে প্রভাবিত করেছে। তাঁর উইকেটকিপিং দক্ষতাও দুর্দান্ত।


আইপিএলে ধরে রাখা খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে দামি

খেলোয়াড়দলদাম
হাইনরিখ ক্লাসেনসানরাইজার্স হায়দরাবাদ২৩ কোটি রুপি
বিরাট কোহলিরয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু২১ কোটি রুপি
নিকোলাস পুরান




লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস




২১ কোটি রুপি






হায়দরাবাদের হয়ে সর্বশেষ দুই মৌসুম ১৭৭ ও ১৭১ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন ক্লাসেন। ৪১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬৩টি ছক্কা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি অন্য দলগুলোর আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। এ কারণেই ক্লাসেনকে রেখে দিতে ২৩ কোটি রুপি ঢেলেছে হায়দরাবাদ। অথচ ২০১৯ সালে তাঁকে মাত্র ৫০ লাখ রুপিতে কিনেছিল বেঙ্গালুরু। সেই মৌসুমে ৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯ রান করেন। পরের তিন মৌসুম তাঁর প্রতি কোনো দলই আগ্রহ দেখায়নি।

তবে বিশ্বজুড়ে অন্যান্য টি–টোয়েন্টি লিগে ভালো করে আবারও আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজর কাড়েন। গত বছর তাঁকে ৫ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে দলে ভেড়ায় হায়দরাবাদ। এক বছরের ব্যবধানে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি রুপি। অর্থাৎ ক্লাসেনের পারিশ্রমিক বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ!

আইপিএলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ছয়জন খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারে। এর মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন জাতীয় দলে খেলা (ক্যাপড প্লেয়ার) ক্রিকেটার হতে হয়। প্রথম তিনজনকে ধরে রাখতে যথাক্রমে ১৮ কোটি, ১৪ কোটি ও ১১ কোটি খরচ করতে হয়। শেষ দুজনের জন্য বরাদ্দ ১৮ ও ১৪ কোটি রুপি। সব মিলে ৭৫ কোটি রুপি।


ক্লাসেন ছাড়াও হায়দরাবাদ ধরে রেখে প্যাট কামিন্স, অভিষেক শর্মা, ট্রাভিস হেড ও নিতীশ রেড্ডিকে। দলটির ধরে রাখা পাঁচ খেলোয়াড়ের শুরুতেই ক্লাসেনের নাম। সেই হিসেবে ক্লাসেনের ১৮ কোটি রুপি পাওয়ার কথা। কিন্তু একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইলেই ৭৫ কোটি রুপি পাঁচজন ক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে নিজেদের মতো করে বণ্টন করতে পারে। হায়দরাবাদ সেটাই করেছে। মানে ক্লাসেনকে আরও ৫ কোটি রুপি বেশি দিয়েছে।

কোহলি ও পুরানের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। অর্থ বণ্টনের সময় এই দুজনকে ৩ কোটি রুপি করে বেশি দিয়েছে বেঙ্গালুরু ও লক্ষ্ণৌ। পুরো আইপিএল ক্যারিয়ারে বেঙ্গালুরুর হয়েই খেলেছেন কোহলি। শোনা যাচ্ছে, আগামী মৌসুমে তিনি আবারও দলটির নেতৃত্বে ফিরবেন। ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান একটি রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন। তাঁর আগে ভারতের আর কোনো ক্রিকেটার আইপিএলে ২০ কোটি রুপি দাম পাননি।



আইপিএলের মেগা নিলাম হওয়ার কথা নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। নিলামের ভেন্যু হিসেবে সৌদি আরবের জেদ্দা অথবা রিয়াদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ইংল্যান্ডের লন্ডন এমনকি সিঙ্গাপুরের নাম শোনা গেলেও এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।




আইপিএল, না টাকার খেলা; কারও বেতন বেড়েছে ৬৯০০%, কারও ৬৪০০%

 

৬৯০০ শতাংশ! সংখ্যাটা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। এত বেতনও বাড়তে পারে! পারে আবার কী, বেড়েছেও। এবারের আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের উইকেটকিপার ধ্রুব জুরেলের পারিশ্রমিক বেড়েছে ৬৯০০ শতাংশ, যা আইপিএলের আগামী মৌসুমে সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধির নজির।

শুধু কি জুরেল, ৬৪০০ শতাংশ বেতন বেড়েছে লঙ্কান পেসার মাতিশা পাতিরানারও। এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন, যাঁদের বেতন গত মৌসুমে ছিল মাত্র ২০ লাখ, তাঁরাই এবার পাবেন কোটি কোটি রুপি।


বেতন বৃদ্ধির তালিকায় জুরেল-পাতিরানার পরের নামটা বেঙ্গালুরুর রজত পাতিদারের। তাঁর বেতন বেড়েছে ৫৪০০ শতাংশ। সমান শতাংশ বেতন বেড়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের পেসার মায়াঙ্ক যাদবেরও। তরুণ ব্যাটসম্যান সাই সুদর্শনের বেতন বেড়েছে ৪১৫০ শতাংশ। শশাঙ্ক সিংয়ের ২৬৫০ শতাংশ, রিংকু সিংয়ের ২২৬৪ শতাংশ।


গত মৌসুমে জুরেলের পারিশ্রমিক ছিল মাত্র ২০ লাখ রুপি। সেই জুরেলকে এবার ১৪ কোটি রুপিতে (প্রায় ২০ কোটি টাকা) ধরে রেখেছে তাঁর দল রাজস্থান রয়্যালস। পাতিরানাও গত মৌসুমে চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে ২০ লাখ রুপি বেতনে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। পাতিরানাকে এবার চেন্নাই ধরে রেখেছে ১৩ কোটি দিয়ে। পাতিদারকে বেঙ্গালুরু দিচ্ছে ১১ কোটি রুপি। গত মৌসুমে তাঁরও বেতন ছিল ২০ লাখ রুপি।

মায়াঙ্কের ঘটনা আরও রোমাঞ্চকর। গত মৌসুমেই প্রথমবার আইপিএল খেলেন মায়াঙ্ক। চোটের কারণে খেলতে পারেন মাত্র ৪ ম্যাচে। এই ৪ ম্যাচেই সামর্থ্য যা দেখানোর দেখিয়ে দিয়েছেন। তাতে ২০ লাখ রুপি থেকে তাঁর বেতন বেড়ে হয়েছে ১১ কোটি রুপি।



সাই সুদর্শন খেলেন গুজরাট টাইটানসের হয়ে। গত মৌসুমে তাঁর সঙ্গে দলটি চুক্তিবদ্ধ ছিল ২০ লাখ রুপিতে। তবে এবার তিনি পাচ্ছেন ৮ কোটি ৫০ লাখ রুপি। পাঞ্জাব কিংসের শশাঙ্ক সিং এবার পাবেন ৫ কোটি ৫০ লাখ রুপি। গত মৌসুমে তিনিও খেলেছেন ২০ লাখ রুপিতে।

অন্যদের চেয়ে গত মৌসুমে একটু বেশিই পেতেন কলকাতার রিংকু সিং। তিনি কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে পেতেন ৫৫ লাখ। আগামী মৌসুমের জন্য তাঁকে ১৩ কোটি রুপি দিয়ে ধরে রেখেছে তাঁর দল।

আইপিএলের পরবর্তী আসরের জন্য খেলোয়াড় ধরে রাখার সর্বশেষ দিন ছিল গত ৩১ অক্টোবর। প্রতিটি দলের জন্য সর্বশেষ আসরের ছয়জন খেলোয়াড় ধরে রাখার সুযোগ ছিল। কিন্তু ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে মাত্র ২টি ৬ জন রেখেছে। অন্যগুলোর কেউ রেখেছে ৫ জন, কেউবা ৪ জন। দলগুলো বড় বড় তারকাকেও ছেড়ে দিয়েছে। তবে কোটি কোটি রুপি খরচ করে এসব তরুণ ক্রিকেটারকে ধরে রেখেছে।





মেট্রোরেলের এমআরটি পাসের রেজিস্ট্রেশন ৭ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত

 


অনিবার্য কারণে মেট্রোরেলের এমআরটি পাসের রেজিস্ট্রেশন ও পুনরায় ইস্যু কার্যক্রম ৭ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। এ জন্য গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিএমটিসিএলের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ খবর জানানো হয়েছে।


মেট্রোরেলে যাতায়াতের জন্য এমআরটি পাস ও একক যাত্রা টিকিট রয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার ঝামেলা এড়াতে অনেক যাত্রী, বিশেষ করে নিয়মিত যাত্রীরা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পাস করে নেন। এতে ব্যস্ত সময়ে লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ঝক্কি এড়ানোর পাশাপাশি ভাড়া ১০ শতাংশ কমে পাওয়া যায়। এ ছাড়া এমআরটি পাসধারীরা স্টেশনের টিকিট কাউন্টার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ৩০ মিনিট পর পর্যন্ত মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারেন। এমআরটি পাসে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স বা স্থিতি রাখা যায়।

ঢাকায় ছিনতাইকারী ও ডাকাতেরা বেপরোয়া, বেশি কোন এলাকায়

 

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে গত ১০ অক্টোবর রাতে ছিনতাইকারীরা রবিউল ইসলাম নামে এক নিরাপত্তাকর্মীকে বুকে, পিঠে ও হাতে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ১৮ অক্টোবর দিনদুপুরে ডাকাতি হয় ইডেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মমতাজ শাহানারার বাসায়। ৯-১০ জন ডাকাত উত্তরার ওই বাসায় ঢুকে মমতাজ শাহানারাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৮৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

মোহাম্মদপুর ও উত্তরার এই দুটি ঘটনা রাজধানীতে ছিনতাইকারী ও ডাকাতেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠার দুটি উদহারণ। পাশাপাশি বেড়েছে খুনের ঘটনাও। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকায় ১৯২ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল মোহাম্মদপুরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে ২১টি। নগরের বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি, এমনকি অভিজাতপাড়ায়ও মানুষ ছিনতাই ও ডাকাতির শিকার হচ্ছেন। এতে নগরবাসীর দিন কাটছে আতঙ্কে। মোহাম্মদপুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে গত শনিবার থানার সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নানা কারণে মোহাম্মদপুর আগে থেকেই রাজধানীর অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর একটি। জনবল-সংকটের কারণে পুলিশ সেখানে ঠিকমতো টহল দিতে পারছে না।

গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকায় ১৯২ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল মোহাম্মদপুরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে ২১টি। নগরের বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি, এমনকি অভিজাতপাড়ায়ও মানুষ ছিনতাই ও ডাকাতির শিকার হচ্ছেন।


ডিএমপির পরিসংখ্যান

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে (অক্টোবরের ২৩ তারিখ পর্যন্ত) রাজধানীতে ১৯২ জন খুন হয়েছেন। শুধু মোহাম্মদপুরেই ২১টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে খুনের ঘটনা ছিল ১১টি, অক্টোবরে ১৯টি।

একইভাবে বেড়েছে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাও। যদিও এ ধরনের ঘটনার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা মামলা করতে চান না।

ডিএমপির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গত মাসের প্রথম ২৩ দিনে রাজধানীতে ২৬টি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। একই সময়ে ডাকাতির মামলা হয় চারটি। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ১৫টি ছিনতাই ও ৫টি ডাকাতির মামলা হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২৯টি মামলা হয়েছিল। ডাকাতির কোনো মামলা হয়নি। ওই বছরের অক্টোবরে ছিনতাইয়ের মামলা ছিল ২৮টি, ডাকাতির মামলা ৩টি।

নানা কারণে মোহাম্মদপুর আগে থেকেই রাজধানীর অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর একটি। জনবল-সংকটের কারণে পুলিশ সেখানে ঠিকমতো টহল দিতে পারছে না।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান
 

পুলিশ, ভুক্তভোগী ও হাসপাতাল সূত্র বলছে, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে পুলিশি কার্যক্রম ভেঙে পড়ে। পরে পর্যায়ক্রমে সেটা স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করলেও হঠাৎ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে যায়। ছিনতাইকারী ও ডাকাতের কবলে পড়ে মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে গেলে কিংবা থানায় মামলা হলে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। কিন্তু অনেকে বাড়তি ঝামেলা মনে করে বা হয়রানির ভয়ে থানা-পুলিশ পর্যন্ত যেতে চান না। তাই থানায় ছিনতাই-ডাকাতির যে পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধ করা হয়, তা প্রকৃত ঘটনার চেয়ে অনেক কম। অনেক সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো দেখাতে থানা–পুলিশ মামলা গ্রহণে গড়িমসি করে, এমন অভিযোগও আছে। আবার অনেক সময় ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার নজিরও রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে (অক্টোবরের ২৩ তারিখ পর্যন্ত) রাজধানীতে ১৯২ জন খুন হয়েছেন। শুধু মোহাম্মদপুরেই ২১টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে খুনের ঘটনা ছিল ১১টি, অক্টোবরে ১৯টি।


ছিনতাইকারীর হাতে নিহত

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার কুতুবখালীতে রাসেল শিকদার নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা।

এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর ভোরে খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন মুস্তাকিম আলিফ (২৫) নামের এক তরুণ। ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় বেড়িবাঁধে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন দিনমজুর আলমগীর ব্যাপারী।

৩ সেপ্টেম্বর কদমতলীর মেরাজনগরে ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাতে খুন করে কাঁচামাল বিক্রেতা হাশেমকে। একই দিন ভোরে হাজারীবাগের সিকদার মেডিকেলের পাশে যাত্রীবেশে ছিনতাইকারীরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সাদেকিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

নওগাঁ থেকে জাররাফ আহমেদ নামে এক যুবক ২৭ আগস্ট ভোরে ঢাকায় নেমেই দারুস সালাম এলাকায় ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ হারান।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ডাকাতির ঘটনার মধ্যে একটি হচ্ছে ১১ অক্টোবর রাতে মোহাম্মদপুরে বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসায় ও কার্যালয়ে ডাকাতি হয়। সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরা ডাকাতেরা নিজেদের যৌথ বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করে নিয়ে যান। অবশ্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এই ঘটনায় জড়িত অনেককে শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের একাধিক সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার এসে ঢাকা মহানগর পুলিশের মাঠপর্যায়ে ব্যাপক রদবদল করে। এখন ঢাকার থানাগুলোতে পুলিশের বড় অংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। তারা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলি এখনো ঠিকমতো চেনে না। এ ছাড়া রাজধানীতে তাদের সোর্সও (তথ্যদাতা) এখনো গড়ে ওঠেনি।


কী বলছে পুলিশ

পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানোকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপর পুলিশের ওপরও ব্যাপক হামলা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক থানা ভবন, পুলিশের টহল যান। সপ্তাহখানেক থানায় কোনো পুলিশ ছিল না। পরে পুলিশ ফিরলেও যানবাহন ও জনবল-সংকটে পুলিশের টহল কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়নি। এ সুযোগে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের কেউ কেউও ডাকাতিতে যুক্ত হয়েছে, এমন উদহারণও পাওয়া গেছে।

পুলিশের একাধিক সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার এসে ঢাকা মহানগর পুলিশের মাঠপর্যায়ে ব্যাপক রদবদল করে। এখন ঢাকার থানাগুলোতে পুলিশের বড় অংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। তারা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলি এখনো ঠিকমতো চেনে না। এ ছাড়া রাজধানীতে তাদের সোর্সও (তথ্যদাতা) এখনো গড়ে ওঠেনি। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতেতে প্রতিকার পেতে ভুক্তভোগীদের থানায় যাওয়ার ওপর জোর দিলেন ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। তিনি গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ছিনতাই-ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশকে টহল দিতে ৩০০ মোটরসাইকেল দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির যেসব গাড়ি পোড়ানো হয়েছিল, সেগুলো মেরামত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও র‍্যাব দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে বলে জানালেন মহানগর পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতি বেড়ে গেছে। যৌথ বাহিনী সেখানে অভিযান পরিচালনা করছে। কিছু ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান


প্রতিবাদের পর অভিযান

সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি ও সংঘর্ষের ঘটনাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে স্থানীয় বাসিন্দারা গত শনিবার সন্ত্রাসমুক্ত মোহাম্মদপুরের দাবিতে থানার সামনে প্রতিবাদ জানান। এরপর ওই দিন রাতেই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব যৌথ অভিযান শুরু করে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ছিনতাই ও ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০৮ জনকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।

এরপর মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ঢাকার অন্যান্য এলাকার উন্নতি নেই। গত বুধবার দুপুরে পল্লবীর বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় মাদকের কারবার নিয়ে বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আয়েশা আক্তার (২৮) নামের এক নারী নিহত হন। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলের অদূরে দোতলা একটি বাড়ির জানালার পাশে দাঁড়ানো ওই নারীর শরীরে লেগেছিল।


বিশেষ অভিযান জোরদারের নির্দেশ

সন্ত্রাস, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, কিশোর গ্যাং, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে চলমান বিশেষ অভিযান জোরদার করতে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়।

জানতে চাইলে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতি বেড়ে গেছে। যৌথ বাহিনী সেখানে অভিযান পরিচালনা করছে। কিছু ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে। পুরো ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, অপরাধ যাতে না বাড়ে, সে ব্যাপারে তৎপরতা অব্যাহত আছে। 

 



ঢাকার আজ সকালের বায়ু অস্বাস্থ্যকর


 ঢাকার বায়ুদূষণ কমছে না। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার অবস্থান সপ্তম। এ সময় আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ১৭১। বাতাসের এই মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়।

ঢাকার বায়ুদূষণের দুটি বড় উৎস যানবাহনের ধোঁয়া ও কলকারখানা থেকে বের হওয়া দূষিত বাতাস। ছুটির দিনে রাজধানীতে, বিশেষ করে সকালের দিকে যানবাহন অনেক কম চলে। অনেক কলকারখানাও বন্ধ থাকে। তবু দূষণ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।

বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।

আজ সকাল ১০টার দিকে বায়ুদূষণে প্রথম অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ছিল ৮৪৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের দিল্লির স্কোর ২৪৩।

ঢাকার বায়ু আজ অস্বাস্থ্যকর। এই বায়ু যেকোনো মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। আজ ঢাকা ও আশপাশের যে তিন অঞ্চলের দূষণ পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত বেশি খারাপ, সেগুলোর মধ্যে আছে মহাখালীর আইসিডিডিআরবি, সাভারের হেমায়েতপুর ও গুলশান–বাড্ডা লিংক রোড।

ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। আজ ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি।

 

এ পরিস্থিতিতে আইকিউএয়ারের পরামর্শ, ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম যতটা সম্ভব এড়াতে হবে এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।


Thursday, October 31, 2024

বাসচাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিহত, বাসে আগুন-অবরোধ

 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহত মাইশা ফৌজিয়া মিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসটিতে আগুন দেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

খবর পেয়ে বরিশাল নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে মাইশা মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কুয়াকাটা থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস নামে একটি বাস তাঁকে চাপা দেয়। পরে আহত মাইশাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।


কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ভোলা রোডের মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে বাসটি মাইশাকে ধাক্কা দেয়। বাসটি দ্রুতগতিতে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। বাসের ধাক্কায় মাইশা ছিটকে রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেলে তাঁর শরীরের একাংশের ওপর দিয়ে বাসটি চলে যায়।

পরে শিক্ষার্থীরা বাসটি জব্দ করলেও চালক পালিয়ে যান। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও এবং মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তাঁরা। রাত ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে বাসের চালককে গ্রেপ্তার করতে না পারলে মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. রাজীব জানান, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দোষীকে গ্রেপ্তার না করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত আমরা হাসপাতালে যাই। কিন্তু হাসপাতালের নেওয়ার পরপরই মাইশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি।’

বরিশাল নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাদের ফোর্স ইতিমধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে। দ্রুতই আমরা তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর অবস্থান থেকে যা যা করা দরকার আমরা তা-ই করতে বাধ্য হব।’



‘নবীকে কটূক্তি’র অভিযোগে জনদাবির মুখে কিশোরকে মারধর, এরপর যা হলো

 ফরিদপুরে বিক্ষুব্ধ জনতার একাংশ


  • Author,

ইসলামের নবীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'ফেসবুকে কটূক্তিমূলক মন্তব্য' করার অভিযোগে সেনা হেফাজতে নেওয়া ফরিদপুর জেলার সেই কিশোর এখন জেল হাজতে।

যদিও ফরিদপুরের স্থানীয় সাংবাদিক, কলজের শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে কিশোরটি দাবি করেছেন– তিনি ওই কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেননি, অন্য কেউ করেছে।

এই ঘটনা আজ থেকে দুই দিন আগের। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও ক্লাস করতে গিয়েছিলেন জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী কিশোরটি।

কিন্তু কলেজে যাওয়ার পর অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি এবং মারধরেরও শিকার হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেছেন।


শিক্ষার্থী ও আশেপাশের ক্ষিপ্ত জনতা তাকে “মেরে ফেলতে চেয়েছিলো” এবং তখনকার সেই পরিস্থিতি সামাল না দিতে পেরে শেষ পর্যন্ত জনদাবি মেনে তাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এদিকে সেনাবাহিনী কিশোরটিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময়কার কিছু ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে এখন জোর সমালোচনা চলছে। যাচাই করে ভিডিওগুলোর সত্যতা পেয়েছে বিবিসি বাংলা।


ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

ফরিদপুরের স্থানীয় সাংবাদিক মফিজুর রহমান শিপন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গত সোমবার কলেজে যাওয়ার পর কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ তোলে যে কিশোরটি ইসলামের নবীকে নিয়ে “এলোমেলো কথাবার্তা” ফেসবুকে লিখেছে এবং “এরপর এ নিয়ে একটা মব তৈরি হয়।”

“কিন্তু ছেলের বক্তব্য, ও অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে না। ও অস্বীকার করে যে সে এরকম কিছু লিখে নাই। তারপর তারা ওকে থাপ্পড়-টাপ্পড় মারে। পরে তারা রাস্তায় গাড়ি ভাঙ্গে, অবরোধ করে,” তিনি বলেন।

একই বক্তব্য পাওয়া যায় কাদিরদী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মোল্যা’র থেকেও। তিনি ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই ছিলেন।

বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান যে শুরুতে তিনি ঘটনার ভয়াবহতা বুঝতে পারেননি।

“আমি তখন মাঠেই ছিলাম। দেখি যে ছাত্রদের মাঝে কানাকানি, ছেলেটাকে ঘিরে রাখছে অন্যরা। একটা ছেলে বললো যে ওকে মারবে। কেন মারবে? সাধারণত কলেজে বেঞ্চে বসা নিয়ে, কোনও মেয়ের সাথে কথা বলা নিয়ে রাগারাগি হয়। আমি তাৎক্ষণিকভাবে ওকে আমার রুমে নিয়ে এলাম,” বলছিলেন তিনি।

“পরে জানা গেল, ওর মোবাইল থেকে কুরুচিপূর্ণ ফেসবুক স্টোরি ছড়ায়ে পড়ছে। এ নিয়ে এলাকায় বড় ধরনের ঝামেলা হয়। পুরো কলেজ এরিয়ায় ছাত্র জড়ো হয়ে গেছে।”

তার মতে, তিনি যদি ওই মুহূর্তে এই কিশোরকে না সরাতেন, তাহলে তার প্রাণ হুমকির মুখে পড়তো।

“হাজার হাজার জনতা বলছিলো, আমাদের কাছে ছেড়ে দেন। তাদের একটাই কথা– আমরা ওকে মেরে ফেলবো, নবীর জন্য আমরা জেলে যাবো, দরকারে ফাঁসিতে যাবো।”

কাদিরদী ডিগ্রী কলেজের অবস্থান বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নে। কলেজ থেকে ফোন পেয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাফিউল আলম ঘটনাস্থলে যান। এর আগে তিনি বোয়ালমারী থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও (ইউএনও) অবহিত করেন।

বিবিসি বাংলা’র কাছে সেদিনের পরিস্থিতির বর্ণনা দেন এভাবে, “প্রিন্সিপালের রুমে ছেলেটা আছে। সেই দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করছিলো মানুষ। একটাই কথা, মেরে ফেলবে।”

অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মোল্যা জানান, “ও স্বীকার করেছে যে এটা তার পুরনো আইডি ছিল। কিন্তু আইডিটা হ্যাক হয়ে যায়। কমেন্টটা আইডি থেকেই গেছে, কিন্তু সে দেয় নাই। সে বলেছে সে মোবাইল চালায় না।”

সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও বলছিলেন যে সত্য-মিথ্যা “দেখার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি তখন ছিল না। সবারই নাজুক অবস্থা। মানুষের একটাই কথা, ও নবী সম্বন্ধে বাজে মন্তব্য করছে।”


তিন শর্ত মেনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ

সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে আরও অনেকেই ক্ষুব্ধ জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে “মেরে ফেলাটা ঠিক হবে না”। কিন্তু অনেক অনুরোধের পরও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মি. আলম বলেন, “সবার কথা তো শুনতে পারবো না। তখন আমরা ছাত্রদের তরফ থেকে ১০-১২ জনকে বাছাই করলাম। অনেক ঘটনার পর তারা নিজেদের মাঝে পরামর্শ করলো।”

পরামর্শ করে তারা তিনটি শর্ত দিয়েছেন বলেন জানান তিনি। সেগুলোর মাঝে প্রথম শর্তটাই হলো, কিশোরটিকে “এই অপরাধের জন্য বহিস্কার করতে হবে, যেন সে কোথাও পড়তে না পারে।”

তাদের শর্ত মোতাবেক কিশোরটিকে সবার সম্মতিক্রমে সেদিনই কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিশোরটি পরে “অন্য কোথাও ভর্তি হতে পারবে কি না, তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুঝবে” বলেছেন অধ্যক্ষ।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় শর্ত ছিল, একজন শিক্ষককেও বহিষ্কার করতে হবে। কারণ “উনি নাকি তাকে সাহায্য করছে। কিন্তু চাইলেই তো বহিষ্কার করা যায় না, তখন ওই শিক্ষককে শোকজ করা হলো।”

এভাবে প্রথম দুই শর্ত বাস্তবায়িত হলো। তৃতীয় শর্তে ছিল, “একজন আলেম বলবে যে এই অন্যায়ের তাৎক্ষণিক বিচার কী হবে। আমরা বললাম, এখন আলেম কই পাবো? পরে তারাই একজনকে আনলো।”

আলেম আসার আগে এর মাঝে তারা সেনাবাহিনীকে কল দিয়েছিলেন বলে জানান মি. আলম।

“হুজুর এলে বললাম, এবার হুজুরের বক্তব্য শুনো তোমরা। হুজুর ওদেরকে বললো, ওর অন্যায় অনুযায়ী এখন ওকে মেরে ফেললা। কিন্তু তাতে সমাধান হলো না। অন্যায়ের পেছনে কারও ইন্ধন আছে কি না, তা দেখা দরকার। তার জন্য পুলিশকে বিশ্বাস না করে আমরা ওকে আর্মির হাতে সোপর্দ করবো।”

উত্তেজিত জনতা শুরুতে ওই তৃতীয় শর্ত মানতে না চাইলেও পরে মেনে নিয়েছেন। এই দর কষাকষি শেষ হতে না হতেই “পাঁচ-ছয় মিনিটের দিকে সেনাবাহিনী চলে আসে।”

কিন্তু কিশোরটিকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে জনগণ আরেকটি নতুন শর্ত দিয়েছিলো।

তাদের বক্তব্য– “ঠিক আছে, আমাদের সামনে দিয়ে নিবেন। কিন্তু এমনভাবে নিবেন যেন আমরা সন্তুষ্ট হই,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মোল্যা।


সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

সেনাসদস্যরা গিয়ে কিশোরটিকে উদ্ধার করেছেন, এই অবধি ঠিকঠাক। কিন্তু উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার যে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে গোলাপি কাপড়ে হৃদয় পালের চোখ বাঁধা।

চারজন সেনাসদস্য তাকে কাঁধে তুলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। পেছনে উত্তেজিত জনতা। এ ব্যাপারে সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেছেন, ভিডিও-তে যা দেখা যাচ্ছে, তা মোট জনতার ১০ শতাংশও না। কারণ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়ার আগে সবাইকে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছিলো।

ভিডিওগুলো থেকে দেখা যায়, জনস্রোত থেকে চিৎকার করে সেনাবাহিনীকে বলা হচ্ছে, “পায়ে মারেন!” কিংবা, “পাঁচ মিনিটের জন্য আমাদের হাতে দেন।” একজন সেনাসদস্য এলোপাথাড়িভাবে তার কোমরে-পায়ে মোটা লাঠি দিয়ে কিছুক্ষণ পরপর বাড়িও দিচ্ছিলেন।

কিছুদূর এগিয়ে তারা ঐ ছাত্রকে গাড়িতে তোলে। গাড়িতে তোলার পর একজন সেনা সদস্যকে বুট দিয়ে লাথি দিতে ও পায়ের তলায় ফের বাড়ি দিতে দেখা যায়।

ফেসবুকে ওই ভিডিও শেয়ার করে অনেকেই এখন সেনাবাহিনীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টে সাগর কুমার নামক একজন মন্তব্য করেছে, “সেনাবাহিনীর লোকজন কীভাবে বুট দিয়ে লাথি মারে, লাঠি পেটা করে? দেশ রক্ষা বাহিনী দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারে না।”

তিথি সরকার নামক একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “গতকাল সেনাবাহিনী যে ব্যবহার করলো, একটা নাবালককে সবার সামনে কীভাবে চোখ বেঁধে পিটিয়েছে, সেটা সবাই দেখেছে। এখানে নিরপেক্ষ তদন্ত করে সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যর ও সঠিক বিচার দাবি করছি।”

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করলেও ওই কলেজের অধ্যক্ষ মি. মোল্যা মনে করেন, “এটা এক ধরনের আইওয়াশ” ছিল।

“ওই মুহূর্তে জনগণের সন্তুষ্টির জন্য ওনাদের (সেনাবাহিনী) যে কায়দায় নেওয়া লাগে, ওইভাবে নিয়েছে– এটা জনগণকে বোঝানোর জন্য,” বলছিলেন তিনি।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ওখান থেকে আমাদের তো বের হতে হবে আগে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিলো।”

সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মি. মোহাম্মদ রাফিউল আলম বলেন যে পরিস্থিতির কারণে “চারজন আর্মি ওকে মাথায় করে, উপরে তুলে, উঁচু করে তাদের সিস্টেম মতো নিছে।”

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে ফরিদপুরে সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনার বর্তমান পরিস্থিতি

সেনাবাহিনী নিয়ে যাওয়ার পর কিশোরটিকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে, জানিয়েছে পুলিশ।

বোয়ালমারী থানার ওসি মো. গোলাম রসুল আজ বুধবার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমি যতটুকু জানি, সে জেল হাজতে আছে। ওকে গ্রেফতারপূর্বক কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে।”

মি. রসুল সংক্ষেপে বলেন, “ওর বিরুদ্ধ তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে।”

এদিকে বোয়ালমারী থানার (তদন্ত) ইন্সপেক্টর মো. মজিবর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে কিশোরটিকে “৫৪ ধারায় চালান করা হয়েছে”।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী, ওয়ারেন্ট বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে পুলিশ কোনও ব্যক্তিকে সরাসরি আটক করার ক্ষমতা রাখে।

এদিকে এ ঘটনায় কিশোরটির পরিবার ভীতিকর পরিস্থিতির মাঝে রয়েছে। সাতৈর ইউনিয়নের কলেজে ভর্তি হলেও তার বাড়ি হলো পাশের ইউনিয়ন ঘোষপুরে।

ঘোষপুরের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন নবাব বিবিসি বাংলাকে বলেন, সেখানে কিশোরটির ফাঁসির দাবিতে মিছিল, বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন হয়েছে।

“কিন্তু বাড়িতে হামলা হয়নি। আমরা কিছু করতে দেই নাই। আমরা স্থানীয় জনগণ আজ তিন রাত ধরে প্রশাসনের সহযোগিতায় পাহারায় ছিলাম। গতকাল রাতেও সারারাত পুলিশ ছিল, আমরাও ছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় লোকজনকে বুঝাইছি, সে অপরাধী হলে ‘বিধি মোতাবেক’ তার সাজা হোক।”


এ নিয়ে দুইবার ৫৪ ধারায় চালান

এই ঘটনা নিয়ে খোঁজ-খবর করতে গিয়ে জানা যায়, কিশোরটিকে এর আগেও একই অভিযোগে আটক করেছিলো পুলিশ এবং তখনও তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছিলো।

গত পাঁচ মাস আগে ঘটা সেই ঘটার সময়ও “সাতদিন জেগে জেগে পাহারা দিছি”, বলছিলেন মি. নবাব।

বোয়ালমারী থানার তৎকালীন ওসি “বলছিলো, মামলা দিবে। কিন্তু উনি ৫৪ ধারায় চালান দিছে এবং এই আইডিটা কার, সেটা বের করে নাই। আগের ওসি পুরা জিনিসটা ধামাচাপা দিছে।”

তিনি বলেন, চালানের পর “আবার জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরে আসছে। এখন মানুষকে বুঝাইতে গেলে মানুষ আমাদের ওপর উত্তেজিত হয়ে বলছে– তোমরা একবার প্রতারণা করছো, ধামাচাপা দিছো।”

প্রথম যখন পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়, তখন কোনও মামলা হয়েছিলো কি না জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার (তদন্ত) ইন্সপেক্টর মো. মজিবর রহমানও না সূচক উত্তর দেন।

ইউএনও মেহেদী হাসান চৌধুরীও বলেন, “এবার আর্মি নেওয়ার পর পুলিশে দিয়েছে।”

“শুনেছি, পাঁচ মাস আগে ওকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করেছিলো। তখন ওর মোবাইলটা সিআইডি চেক করেছিলো। এরপর জামিন নিয়ে এসেছিলো,” চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এই উপজেলায় যোগদান করেছেন জানিয়ে এ কথা জানান মি. চৌধুরী।

গণপিটুনিতে গুরুতর আহত ওই কিশোরকে পরে সেনাবাহিনী গিয়ে উদ্ধার করেছে।