বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহত মাইশা ফৌজিয়া মিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসটিতে আগুন দেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
খবর পেয়ে বরিশাল নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে মাইশা মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কুয়াকাটা থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস নামে একটি বাস তাঁকে চাপা দেয়। পরে আহত মাইশাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ভোলা রোডের মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে বাসটি মাইশাকে ধাক্কা দেয়। বাসটি দ্রুতগতিতে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। বাসের ধাক্কায় মাইশা ছিটকে রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেলে তাঁর শরীরের একাংশের ওপর দিয়ে বাসটি চলে যায়।
পরে শিক্ষার্থীরা বাসটি জব্দ করলেও চালক পালিয়ে যান। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও এবং মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তাঁরা। রাত ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে বাসের চালককে গ্রেপ্তার করতে না পারলে মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. রাজীব জানান, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দোষীকে গ্রেপ্তার না করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত আমরা হাসপাতালে যাই। কিন্তু হাসপাতালের নেওয়ার পরপরই মাইশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি।’
বরিশাল নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাদের ফোর্স ইতিমধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে। দ্রুতই আমরা তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর অবস্থান থেকে যা যা করা দরকার আমরা তা-ই করতে বাধ্য হব।’